৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

‘সুবিধাবঞ্চিত’ শব্দটি আমি মুছে দিতে চাই

অভিযোগ
প্রকাশিত জানুয়ারি ৬, ২০২০
‘সুবিধাবঞ্চিত’ শব্দটি আমি মুছে দিতে চাই

কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপা – ফাইল ছবি।

অভিযোগ ডেস্ক : নন্দিত কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপা। দীর্ঘ সংগীত ক্যারিয়ারে অসংখ্য জনপ্রিয় গান ‍উপহার দিয়েছেন তিনি। পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননা। গানের পাশাপাশি বর্তমানে এই শিল্পী ব্যস্ত আছেন সামাজিক নানা উন্নয়নমূলক কাজের সঙ্গে। গান-বাজনা ও সমসাময়িক বিষয় নিয়ে অনলাইন-এর মুখোমুখি হয়েছেন তিনি।

 

বেশির ভাগ শিল্পীই এখন স্টেজ শো নিয়ে ব্যস্ত। শুনলাম, আপনি এই সময়টা কাটাচ্ছেন শীতার্ত মানুষের মাঝে গরম কাপড় বিতরণ করে?

 

গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত টানা স্টেজ শো করেছি। এরপর কয়দিন বিরতি। এর মধ্যে তীব্র শীত পড়েছে, আবার হয়তো চলেও যাবে। চিন্তা করলাম, এখনই উত্তম সময় সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। ফেসবুকের সবাই সাড়া দিয়ে যেভাবে সহায়তা করলো, তাই ১৯’র শেষ দিন আর ২০’র পয়লা দিন সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ালাম। অসম্ভব শান্তি লেগেছে। শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে কান্না করেছি। ‘সুবিধাবঞ্চিত’ শব্দটি আমি মুছে দিতে চাই। গাইবান্ধা কখনও যাইনি, এবার গিয়ে খুব ভালো লাগলো।

 

সফরটি কেমন ছিল?

 

অসম্ভব ভালো লেগেছে। শীতবস্ত্র বিতরণের পাশাপাশি অনেক স্থানেই ঘুরে বেড়িয়েছি। ওখানকার গ্রাম থিয়েটারের ছেলেমেয়েরা আমার সামনে আমার গাওয়া দেশাত্মবোধক গানের সঙ্গে নাচলো, গাইলো, মঞ্চ নাটক দেখালো। গাইবান্ধার বালাসী গ্রামের বাউলদের অফিসে গেলাম। ওরা আমাকে সম্মাননা দিলো। তথাকথিত থার্টি ফার্স্ট নাইটের চাইতে অনেক সুন্দর কিছু সময় কাটিয়েছি।

 

আপনার এলাকায় না গিয়ে গাইবান্ধা কেন?

 

আমার বাবা বড় হয়েছেন সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের মাইজবাড়ি গ্রামে। আমার জন্ম, বেড়ে ওঠা, পড়াশোনা সবই ঢাকায়। আমি কাজিপুর কয়েকবার শীত বস্ত্র দিয়েছি। বগুড়ার গোঁসাইবাড়িতে এবং কাহালু শান্তাহারও দিয়েছি। এবার নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা, বগুড়া, গাইবান্ধা, পঞ্চগড়ের কয়েক জায়গায় দিলাম। এই শীতবস্ত্র তো আর শুধু আমার টাকায় কেনা না। ফেসবুকের বন্ধু ও আত্মীয় স্বজনরাও এতে অংশ নিয়ে থাকেন। তাছাড়া আমি নিজ গ্রামের হয়ে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। যদি সবার দেওয়া টাকা নিয়ে নিজ গ্রামে যাই, তবে আমার সঙ্গে যারা আছেন তারা ভাববেন, আমি কম্বল দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটছি। এজন্য আমি বিষয়টি এড়িয়ে চলেছি। আর সত্যিকার অর্থে সারা বাংলাদেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্যই আমার মন কাঁদে। পরে আরও প্রত্যন্ত অঞ্চলে যাব।

 

লেখালেখি নিশ্চয়ই করছেন। আসছে বইমেলায় কী থাকছে?

 

একটি অনলাইন পোর্টালে আমি নিয়মিত ‘কাটাঘুড়ি’ কলামে সাপ্তাহিকভাবে লিখি। আমার নিজের জীবন থেকেই আমার দর্শন, শিক্ষা, পথচলা, টানাপোড়েন, উত্তরণের গল্প সেটা। খুব ভেবে চিন্তে বছর, মাস, তারিখ খেয়াল করে লিখছি। এবারের বইমেলায় আসবে ‘কাটাঘুড়ি ৩’। এভাবে একসময় হয়তো কাটাঘুড়ি সমগ্র হবে। তবে এ বছর আমি কিছু ছবি আঁকবো। মাথায় ছবি ঘুরঘুর করছে।

 

অনেকদিন হলো আপনার নতুন কোনো গান প্রকাশ হচ্ছে না…

 

আমাদের সঙ্গের শিল্পীরা যাদের সুরে সারাক্ষণ গেয়েছি, তারা আজ অনেকেই নেই। কেউ অসুস্থ, কেউ আবার দেশান্তরী। আর নতুন সংগীত পরিচালকরা কখনও আমাকে তাদের প্রয়োজনীয় শিল্পী ভাবেনি। জীবনের এই সময়ে এসে গানের জন্য আর হন্যে হয়ে ঘুরতে ইচ্ছে করে না। তাই হয়তো নতুন গানের সংখ্যাটাও কম হয়ে যাচ্ছে। স্টেজ শো আগের মতোই আছে। তবে এ বছর ভাবছি, নতুন শিল্পীদেরকে গান নিয়ে কর্মশালা করাবো। পাশাপাশি কিছু নজরুলসংগীত ও শিশুদের নিয়ে গান গাইবার ইচ্ছা আছে।

Please Share This Post in Your Social Media
April 2024
T W T F S S M
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30