২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

দালালের প্রতারণায় কাতারে এসে স্বপ্নভ্রষ্ট তরুণের গল্পো

অভিযোগ
প্রকাশিত জুলাই ৩০, ২০১৯
দালালের প্রতারণায় কাতারে এসে স্বপ্নভ্রষ্ট তরুণের গল্পো

 

মারুফ রানা দোহা কাতার থেকেঃ

একটা ঘরে বন্দি। কখনো খেতে পারতাম, কখনো পারতাম না। তার সেই ঘরে অন্যান্য বসবাসবাকীরা কাজে যেতে পারলেও তিনি যেতে পারেননি। কারণ তার কাছে কাজের বৈধ কোনো কাগজপত্র ছিল না। দিনের পর দিন এই অবস্থায় পাগলপ্রায় হয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।স্বপ্ন ছিল মধ্যপ্রাচ্য গিয়ে সংসারের অভাব-অনটন মেটাবেন। বিবাহযোগ্যা দুই বোনের বিয়ে দেবেন। সংসারের সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনবেন। কিন্তু এসব যে দুঃস্বপ্ন এটা কিছুদিন পরেই বুঝতে পারলেন তিনি।
এমন স্বপ্নভ্রষ্টা ওই তরুণের নাম সাইফুল ইসলাম। তার বাড়ি হবিগঞ্জের মিরপুর এলাকায়।
ভুক্তভোগী সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বড় স্বপ্ন নিয়ে কাতার গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে কোনো কাজ করতে পারিনি। দিনের পর দিন একটি ঘরে চোরের মতো থাকতে হয়েছিল আমাকে। কখনো খেতে পারতাম, কখনো পারতাম না। এখন সেই দিনের কথা মনে পড়লে ভয়ে আঁতকে উঠি।
তিনি আরও বলেন, ইলেট্রিক কাজে হেলপার ভিসার লোভ দেখিয়ে আমাকে কাতার নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনো কাজকর্ম দেইনি ও করতে পারিনি। প্রাণভরে কিছুদিন সেখানে থেকে অনেক কষ্টে টাকা পয়সা ব্যবস্থা করে দেশে পালিয়ে এসেছি। আমার মতো আলমগীর, রুবেল তারাও খুব সেখানে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
সাইফুল আরও বলেন, কাতারপ্রবাসী ইয়াকুব আলীর মা আলমিনা বেগম আমাদের কাছ থেকে দুই কিস্তিতে ৩ লাখ টাকা নিয়েছেন। শুধু আমাকে না, অনেক মানুষকে তিনি কাতারে চাকরি দেওয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তার স্বামীর নাম নোয়াজ আলী।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভূনবীর ইউনিয়ন পরিষদের বাসিন্দা সাইফুলের চাচি জোছনা বানু কান্নাজড়িত কণ্ঠে বাংলানিউজকে বলেন, ঋণ করে সাইফুলকে টাকা দিয়েছি কাতার যাওয়ার জন্য। আলমিনা আমাদের কাছ থেকে সাইফুলকে কাতার নিয়ে ভালো চাকরি দেবেন বলে ৩ লাখ টাকা নিয়েছেন। কিন্তু এখন সেই টাকা চাইতে গেলে নানা কথা বলছেন। আমাদের বাড়িতে দুইজন বিবাহযোগ্য মেয়ে রয়েছে। টাকার অভাবে তাদের বিয়ে দিতে পারছি না।
ঋণ করে টাকা নেওয়াতে ঋণসংস্থার লোক এসে আমাদের নানান কথাবার্তা বলেন। আমরা গরিব, কি করে ওই ঋণ শোধ করবো বলে জানান জোছনা বানু।
ভূনবীর ইউনিয়ন পরিষদের ( ইউপি) কাউন্সিলার বদরুল আলম বকুল বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনা সত্যি। এই আলপিনা বেগমের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে অর্থ আত্মসাতের আরও অভিযোগ রয়েছে। তার আপন দেবর তাহের আলীর কাছ থেকেও প্রতারণা করে ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এটা নিয়ে মৌলভীবাজার আদালতে মামলাও হয়েছে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভূনবীর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান চেরাগ আলী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বাংলানিউজকে বলেন, এই আলপিনা বেগম খুবই বিপদজ্জনক। সাঁতগাও ইউপি এলাকার বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে বিদেশ পাঠানো কথা বলে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। নারী বলে কিছু বলা হয় না তাকে। কেউ যদি সেই নারীর নামে মামলা করেন তার সাক্ষী হিসেবে আমি আদালতে দাঁড়াবো।

Please Share This Post in Your Social Media
April 2024
T W T F S S M
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30