১০ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৭শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২রা জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

ইউটিউব থেকে মাসে লাখ টাকা আয় করেন ইমন।

অভিযোগ
প্রকাশিত মে ২৭, ২০১৯
ইউটিউব থেকে মাসে লাখ টাকা আয় করেন ইমন।

তথ্য ও প্রযুক্তি ডেস্ক : বর্তমানে বিনোদনের ব্যাপক জনপ্রিয় মাধ্যম ইউটিউব। এখানে নিয়মিত বিনোদনমূলক, শিক্ষামূলক, প্রযুক্তিবিষয়ক সহ নানা ধরনের ভিডিও আপলোড হয়। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ভিডিও দেখা হয়।

আর এভাবেই এই প্লাটফর্মকে অনেকে অর্থ উপার্জনের মূল মাধ্যম হিসেবেই বেছে নিচ্ছেন। এভাবেই ইউটিউবে নিজের চ্যানেল খুলে মাসে এক লাখ টাকা আয় করছেন নড়াইলের প্রত্যন্ত অঞ্চলের একজন ছাত্র রাশেদুজ্জামান ইমন।

ইউটিউবে তার চ্যানেলের নিয়মিত গ্রাহক(সাবস্ক্রাইবার) এক লাখ হওয়ায় ইউটিউব কর্তৃপক্ষ তাকে সম্প্রতি ‘সিলভার প্লে¬-বাটন’ সম্মাননা প্রদান করেছে।

এদিকে নড়াইল জেলার মধ্যে ১ম ব্যক্তি হিসেবে তিনি এই সন্মান পাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। জানা গেছে, চলতি বছরের মার্চের শেষ দিকে এক লাখ সাবস্ক্রাইবার হওয়ায় তাঁকে এ সম্মাননা দিয়েছে ইউটিউব।

ইমনের ইউটিউব চ্যানেলের নাম “ইমন স্কোয়াড”। দুই মাসের ব্যবধানে বর্তমানে তার চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা তিন লাখেরও বেশি। ইউটিউব থেকে বর্তমানে তার মাসিক আয় ১২০০-১৫০০ ডলার।

জানা গেছে, নড়াইলের কালিয়া উপজেলার ছোট কালিয়া গ্রামের ইকরাম বিশ্বাসের বড় ছেলে ইমন। ৭ম শ্রেণিতে পড়াকালীন সময়ে স্থানীয় বাজারে বাবার টেলিকমের দোকানে গিয়ে ইন্টারনেটের সাথে পরিচয় হয় তার।

ইউটিউবে বিভিন্ন ধরনের কার্টুন এনিমেশন তাকে আকর্ষন করতো। তার এইসব দেখে বাবা বাড়িতেই একটি কম্পিউটার কিনে ইন্টারনেট সংযোগ দেন।

এরপরে ৮ম শ্রেণিতে পড়াকালীন সময়ে ইউটিউবে কার্টুন ও মজার ভিডিও দেখতে দেখতে নিজ থেকেই কার্টুন এন্যিমেশন বানানো শুরু করে ইমন। বিকেলে অন্য বন্ধুরা যখন মাঠে খেলতো তখন সে এসব ভিডিও এনিমেশন তৈরি করা শেখতেন।

কারো সাহায্য ছাড়াই কেবলমাত্র গুগলের সাহায্যে এনিমেশনের কাজ শিখতে থাকে ইমন। এরপর নিজের একটা চ্যানেল খোলার সিদ্ধান্ত নেয় এই তরুণ। একের পর এক বেশ কয়েকটি চ্যানেল খুলে ভিডিও আপলোড করতে থাকে ইমন।

কিন্ত নিয়মিত না হওয়ায় তেমন সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না, হতাশ হননি। এবার ২০১৮ সালের ১৭ এপ্রিল “ইমন স্কোয়াড” নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে সে। সেখানে তিনি কার্টুন এন্যিমেশনের মাধ্যমে বাংলা ধাঁধাাঁ ও আইকিউ টেষ্টের বিভিন্ন মজার মজার ভিডিও আপলোড করেন।

প্রথমে অন্য চ্যানেলগুলোর মতো চ্যানেলটি তেমন সাড়া না পেলেও ২০১৯ সালের জানুয়ারী থেকে চ্যানেলটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেত শুরু করে। এর এক পর্যায়ে সাবক্রাইবার এক লাখে ছাড়িয়ে যায়।

কালিয়া চাচুড়ী বাজারে ইউটিউবার এম এম ওমর ফারুক জানায়, ইমন অত্যন্ত মেধাবী একজন উদ্ভাবক। আমার জানা মতে নড়াইল জেলায় সেই প্রথম ব্যক্তি যে এই সিলভার প্লে¬বাটন উপহার হিসেবে পেয়েছে। আমরা যারা ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করি তাদের মধ্যে সে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

অনলাইন “নড়াইল কন্ঠ” এর সম্পাদক কাজী হাফিজুর রহমান বলেন, ইমন একক প্রচেষ্টায় নিজেকে একজন সফল ইউটিউবার হিসেবে গড়ে তুলেছেন, এটা ভালো লাগা ও গর্বের বিষয়। তাকে দেখে আরো অনেক তরুণ এগিয়ে আসবে। চাকরির পিছনে না ছুটে নিজেরাই আত্ম-কর্মসংস্থান তৈরি করে সমাজকে বদলে দেবে।

কালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাজমুল হুদা বলেন, একজন তরুণের এমন উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। বেকার তরুণ-তরুণীরা যদি তার মতো কাজ করে তাহলে ঘরে বসেই বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব। এতে নিজের এবং দেশের উপকারই হবে।

ইমন বলেন, ইচ্ছা আছে আর একটু ভালোভাবে কাজটা ধরতে পারলে এলাকা তরুণদের নিয়ে একটি ইউটিউব ক্লাব করব। যেখানে সকলে অনলাইনে কাজ শিখে প্রতিভা বিকাশ করতে পারবে এবং আয় করতে পারবে।

বিদেশে গিয়ে টাকা আয় করার জন্য ঝুকতে হবে না। নিজের বাড়িতে বসেই আয় করতে পারবে। কাজ করলে অনেক কিছু পাওয়া যায় ও শেখা যায়। লেখাপড়া শেষে পুরোপুরিভাবে ইউটিউবার হিসেবে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে তিনি। এদিকে ইমনের দেখাদেখি এলাকার কয়েক শ তরুণ ইউটিউবে চ্যানেল খুলে কাজ শুরু করেছে।

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031