Sharing is caring!
সৈয়দ রুবেল, ঝালকাঠি জেলা প্রতিনিধিঃ
শারদীয় দূর্গোৎসব সুশৃংখল ও আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে উদযাপনের লক্ষ্যে ঝালকাঠিসহ ৪ (চাঁর) উপজেলায় এ বছর ১৭৩ টি মন্ডপে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
তাই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব এই দূর্গাপূজা উৎসবমূখর আয়োজনের জন্য মন্ডপগুলোতে ব্যাপকভাবে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
নরম কাদা-মাটি দিয়ে শৈল্পিক ছোঁয়ায় তিল তিল করে গড়ে তোলা দশভূজা দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরির মধ্য দিয়েই দূর্গোৎসবের সব ধরণের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হওয়ায় মন্ডপে সাজসজ্জা ও প্রতিমা তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন আয়োজক কমিটির সদস্যবৃন্দ ।
দিন-রাত প্রতিটি মন্ডপে প্রতিমা তৈরীতে ভাস্করেরা বিরতিহীনভাবে করে চলেছেন কাজ। অনেক মন্ডপে ইতিমধ্যে প্রতিমায় রূপায়নের রঙ তুলির আঁচড় কাটা শেষ। তবে ঝালকাঠি সদর উপজেলা ভাস্করদের মধ্যে প্রতিমা তৈরীতে প্রতিযোগীতা থাকায় সুন্দর করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
গত ২০১৮সালের তুলনায় অনেকেই এবার নতুন আঙ্গিকে কতকটা ভারতীয় স্টাইলে প্রতিমা তৈরি করছেন। আবার নানান রঙ আর তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে দেবীর প্রতিচ্ছবিকে।
কেউ কেউ বাঙালী সাজে মা দূর্গাকে সাজিয়ে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছেন ভক্তবৃন্দের জন্য। এভাবেই ভক্তকূলের প্রাপ্তিযোগের আশায় মনের আনন্দে কাজের ছন্দে চলছে পার্বণের জোর প্রস্তুতি।
ভাস্কর জীবন কৃষ্ণ দাস বলেন, দূর্গাপূজাকে আকর্ষণীয় করে তোলে মূলত: মা দূর্গার প্রতিমা। মূল আকর্ষণ মা দূর্গার প্রতিমা সুন্দর হলে পূজাটাও সুন্দর কাটে ভক্তবৃন্দের নিকট।
এই দূর্গা মায়ের প্রতিমায় ভক্তদের আকর্ষণ বাড়াতে প্রচুর কাঁচাপণ্যের প্রয়োজন হয়। তবে বাজারে কাঁচাপণ্যের দাম বাড়ায় এবার প্রতিমা তৈরিতে খরচ বেড়ে যাবে গতবছরের তুলনায় অনেকটা বেশী। পূজাকে জাঁকজমকভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে প্রতিমা তৈরি শেষ হলে শুরু হয়ে যাবে আলোকসজ্জার কাজ।
বিগত বছরগুলোর ন্যায় পূজামন্ডপ ছাড়াও সড়কে আলোকসজ্জা করা হবে। ০৪/১০/২০১৯ইং তারিখ শুক্রবার পঞ্চমীতে দেবীদূর্গার বোধনের মধ্য দিয়ে ছয় দিনব্যাপী শারদীয়া দূর্গোৎসব শুরু হবে।
৪ অক্টোবর (শুক্রবার) আমন্ত্রণ ও অধিবাস, ৬ অক্টোবর দেবীর সপ্তমী বিহীত পূজা, ৭ অক্টোবর দেবীর মহাঅষ্টমী, কূমারী পূজা ও সন্ধি পূজা, ৮ ই অক্টোবর দেবীর নবমী বিহীত পূজা এবং ৯ অক্টোবর মহাদশমীতে সন্ধ্যা আরতির পর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এই সর্ববৃহৎ দূর্গোৎসব।
দেবী দূর্গা এবার ঘোটকে আগমণ ও দোলায় গমন করবেন।
ঝালকাঠি জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের কমিটি জানান, ঝালকাঠি সদর পৌরসভায় ১২ টি মন্ডপসহ এবছর জেলায় মোট ১৭৩ টি পূজামন্ডপ স্থাপিত হয়েছে। এর মধ্যে ১৬০ টি সর্বজননী এবং ১৩ টি পারিবারিক রয়েছে। দূর্গতিনাশিনী দেবীদূর্গার আগমনীতে ভক্তকূলে আনন্দের জোয়ার সৃষ্টি হওয়ায় পূজা এলেই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মনের ভেতরটা হৈহৈ করে ওঠে। ধর্ম যার যার উৎসব সবার, তাই খুব সহজেই অনুভবিত হয় সেই উৎসবের হাওয়া। প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে অনেক মন্ডপে এবং রঙ তুলির আঁচড় শুরু হয়েছে ইতিমধ্যে। সুন্দরভাবে পূজা অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আমরা সকল কমিটির সাথে মত বিনিময় অব্যাহত রেখেছি।
আসন্ন শারদীয়া দূর্গোৎসব ২০১৯ উপলক্ষ্যে ঝালকাঠি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঝালকাঠি থানার কোন মন্দিরই ঝুঁকিপূর্ণ নয়। তারপরেও সব মন্দিরগুলোকে আমরা নিরাপত্তার বলয় দ্বারা বেষ্টনী করে রাখব। আমাদের এখানে যথেষ্ট পরিমাণ পুলিশ ফোর্স ও আনসার সদস্য দায়িত্ব পালনের সাথে সাথে প্রত্যেক মন্দিরের পূজা কমিটির স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী থাকবে। এই স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর সদস্যকে ছবি সম্বলিত আইডি কার্ড দিব, তারা বুকে ঝুলিয়ে রাখলে আমাদের আইডিফিকেশন করতে সহজ হবে। ষষ্ঠী থেকে বিসর্জন পর্যন্ত মন্দিরের ভিতর বা আশেপাশে কোন ব্যাগ বা অবৈধ জিনিসপত্র নিয়ে ঢুকতে না পারে তার জন্য দেহ তল্লাশীর ব্যবস্থা থাকবে।
তিনি আরো বলেন, আসন্ন শারদীয়া দূর্গোৎসব আমরা সবাই আনন্দের সঙ্গে সবাই মিলে এক সঙ্গে উদযাপন করব। ২০১৯ সালের দূর্গা পূজা সকলের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে আমি এই কামনা করি।