জাহিদুল ইসলাম :- এই মুহূর্তে বাড়ির পোষ্য গাঁধাটি অজানা-গন্তব্যে উধাও হয়ে গেল। ওদিকে আটার কলে পড়ে আছে তার একমাত্র খাদ্য আটা। সেটা না আনলে আজ চুলায় আগুনই জ্বলবে না। আবার ফসলের জমিটা পানি শূন্যতায় ফেটে চৌচির হয়ে আছে। তাতে পানি সিঞ্চন করাও আবশ্যক হয়ে পড়েছে। ত্রিমুখী কাজের চাপ আর অত্যাসন্ন জুমআর নামায তার মস্তিস্কে মিছিল শুরু করল।
.
তিনি নীরবে কিছুক্ষণ ভাবলেন, এরপর জাগতিক কর্মগুলোকে পদাঘাত করে ছুটে গেলেন মসজিদ পানে; প্রভুর সন্তুষ্টি ও আত্মিক প্রশান্তি লাভের উদ্দেশ্যে।
.
নামায শেষ হল। অফুরন্ত প্রশান্তি নিয়ে তিনি মসজিদ থেকে বের হলেন। এরপর প্রথমেই তিনি ক্ষেতের কাছে গেলেন, এবং শুষ্ক জমি পানিতে টইটুম্বুর দেখে বিষ্ময়ে হতবাক হলেন।
.
অনুসন্ধান করে জানতে পারলেন; পাশের জমির মালিক আপন ক্ষেতে পানির লাইন ছেড়ে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে ছিলেন, ফলে পানি উপচে পড়ে তার জমিটাও সিঞ্চিত হয়ে গেছে।
.
বাড়িতে এসে দেখেন গাঁধাটি আস্তাবলে সুন্দর করে বাঁধা। আশ্চর্য বটে! ভেতরে প্রবেশ করে দেখন স্ত্রী রুটি তৈরিতে ব্যস্ত। আবার অবাক হওয়ার পালা। শশব্যস্ত হয়ে তিনি স্ত্রীর কাছে জানতে চাইলেন কীভাবে কী হল?
.
উত্তরে সে বলল, “হঠাৎ আমি গেটে কড়া নাড়ার শব্দ পেলাম। গেট খুলে দিতেই গাঁধাটি বাড়িতে ঢুকে পড়ল। ওদিকে এক প্রতিবেশীর আটা কলে পড়ে ছিল সে তার আটা আনতে গিয়ে ভুলে আমাদের আটা নিয়ে আসে। পরে বুঝতে পেরে আমাদের আটা বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে যায়।”
.
স্ত্রীর বক্তব্য শুনে হামেদ (রাযিঃ) আকাশের দিকে মাথা উত্তোলন করে হৃদয়ের গভীর থেকে মহান প্রভুর কৃতজ্ঞতা আদায় করলেন, আর বিড়বিড় করে বললেন –
.
“হে আল্লাহ! আমি আপনার মাত্র একটি কর্ম সমাধা করেছি আর আপনি আমার তিন-তিনটি প্রয়োজন সমাধা করে দিয়েছেন। সত্যি আপনি মহা ক্ষমতাবান দয়ালু।”