১লা ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

মুক্তি ও তার পরিবারের সহায়তার জন্য জরুরি দৃষ্টি আকর্ষণ

অভিযোগ
প্রকাশিত অক্টোবর ৮, ২০২৩
মুক্তি ও তার পরিবারের সহায়তার জন্য জরুরি দৃষ্টি আকর্ষণ

এস. হোসেন মোল্লা : জন্মগতভাবেই নিউমোনিয়া আক্রান্ত মুন্নি আক্তার মুক্তি। তার মা মেরিনা আক্তারের অভাবের সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। ঠিকমতো দুই বেলা দুটো খেতে পান না।তিনি ফুটপাথে ভ্রাম্যমান চা-বিস্কুট বিক্রি করে তিন মেয়ে ও এক ছেলের সংসারের গ্লানি টানছেন। অর্থকষ্ট, সাংসারিক চাপ ও ধারদেনায় জর্জরিত হয়ে তাদের মর্মান্তিক বিপদগ্রস্ত জীবন কাটছে বহু বছর যাবত।

মুক্তির মা জানান, মুক্তির জন্ম ২০০৭ সালের ১৬ই ডিসেম্বর। জন্ম থেকেই নিউমোনিয়া জনিত সমস্যা প্রবলভাবে পরিলক্ষিত হলে অনেক চিকিৎসকগণ ব্যক্তিগত ভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন — “এ বেশি দিন বাঁচবে না, তাই এত চিকিৎসা করে কাজ নেই “! কিন্তু, মুক্তির ফুটফুটে হাসি মাখা মিষ্টি মুখখানি দেখে পরিবার পিছ-পা হতে নারাজ। শত দুঃখ-কষ্টের মাঝে সকলের প্রাণপণ সহযোগিতা ও দোয়ার বরকতে সেই মুক্তি বিস্ময়কর ভাবে দেখতে দেখতে আজ সুন্দরী কিশোরী ও নবম শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের মেধাবী ছাত্রী। সকলের মনেই মুক্তির উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ার আশার প্রদীপ জ্বলজ্বল করছে।

চার ভাই বোনের মধ্যে মুক্তি সবার ছোট। বাবা তাসেম আলী যেন থেকেও নেই। বহুবছর আগেই অন্যত্র সংসার পেতেছে।তার ওপর দারিদ্রতার করাল গ্রাসে ভরণপোষনেও অক্ষম । তারা ভূমিহীন ও গৃহহীন। ফুটপাথে কোন রকম ভ্রাম্যমান বেঁচা বিক্রি করেই শীত-গ্রীষ্ম, রোদ-বৃষ্টি ও নানান বাঁধা-বিঘ্ন উপেক্ষা করে তাদের অসহনীয়, দুর্বিসহ, আপোষহীন ও ভয়ঙ্কর জীবন যুদ্ধ চলছে। অভাবের তাড়নায় পর্যাপ্ত মালামাল কিনেও যেন বসতে পারেন না।প্রায়ই তেমন একটা কাস্টমারও জোটে না বললেই চলে।মাসের পর মাস বাড়ি ভাড়া বাকি থাকছে। তার ওপর আরো বাকি মুক্তির স্কুল ও কোচিংয়ের কয়েক মাসের বেতন। তার লেখাপড়া ও চিকিৎসার খরচ বহন পুরোপুরি অসম্ভব বিধায় বন্ধ হবার উপক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছে । তার বড় বোন টুম্পা স্বামী ও শ্বশুরবাড়ি কর্তৃক নির্যাতিতা ও তালাকপ্রাপ্তা হয়ে অসুস্থ হয়ে আছে কয়েক বছর। ভাইটিও এক রকম বেকার। সব মিলে যেন মরার উপর খাড়ার ঘাঁ!

বর্তমান পরিস্থিতিতে বিভিন্ন চিন্তায়, দুঃখ ভারাক্রান্ত, বিষন্ন ও হতাশা গ্রস্থ মনে মুক্তির ঝলমলে আলোকিত মুখে যেন হঠাৎ অমাবস্যা নেমে আসে। আবার সেই অবুঝ মুখে অল্প তুষ্টিতেই লুকিয়ে থাকা মুক্ত ঝরানো মিষ্টি হাসি দোল দিলেই মনে হয়, মায়াবী পূর্ণিমার চাঁদ ও অজস্র রুপালি তাঁরা যেন পলকেই উঁকি দিয়ে গেল। তারা প্রায় ২২ বছর ধরে রাজধানীর দক্ষিণখানের তেঁতুলতলা বেকারী সংলগ্ন এলাকার ভাড়াটে এবং সরকারি মোল্লাটেক উদয়ন স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্রী এই মুক্তি। দেশের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের চামাগ্রাম (৩নং ওয়ার্ড)।

লেখাপড়ার অবসরে মুক্তিও মায়ের সহযোগিতা করতে ফুটপাথে সময় দেয়। মুক্তিকে বসতে দেখে অনেকেই অবিশ্বাসের সাথে অবাক হয়ে নানান প্রশ্নের ঝড় তোলেন। সেই সাথে চাঁদাবাজ,বখাটে,মাস্তান এবং নেশাখোর-মাতালদের দ্বারা অনাকাঙ্ক্ষিত বিদঘুটে উৎপাত ও ভয়াবহতা মুহুর্তের ব্যাপার মাত্র! সেই উদ্ভট পরিস্থিতি সহজেই অনুধাবন করা যায়।

মুক্তির মা সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মিদের নানান সমস্যার বিষয়ে খুলে না বললেও নানান সমস্যা আঁচ করতে পেরে সহযোগিতার লক্ষ্যে বিস্তারিত আকারে তথ্য নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তুলে ধরতে এগিয়ে আসেন নিজ উদ্দোগেই । সরেজমিনে তাদের বাসায় গিয়ে প্রতিনিধিরা হতভম্ব বনে যান এই দেখে যে, এক বেলাও হাঁড়িতে তাদের রান্না হচ্ছে না! আবার লজ্জা ও সংকোচ বশত: অভাব ও বিপদের কথা তারা পুরোপুরি খুলে বলতেও পারছেন না! অসহায়-দরিদ্র হিসেবে সরকারি-বেসরকারি কোন প্রকার সহায়তা বা প্রনোদনাও তারা পাচ্ছেন না ! এমনকি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবার হিসেবে তাদের নাগরিক অধিকার কোথা থেকে কিভাবে পাওয়া যাবে সেটাও তাদের অজানা!

পারিবারিক সূত্রে মুক্তির অসুস্থতা ও চিকিৎসা জনিত বিষয়ে জানা যায়, চিকিৎসার অভাবে দিনে দিনে সারা শরীর চুলকানির সাথে ঘাঁ ও পুঁজ হয়ে দাগে ভরে গেছে।বিভিন্ন গীরায় ব্যথা। দেহের ভেতর পানি জমে শরীর অস্বাভাবিক ভাবে ফুলে-ফেঁপে অকাল বার্ধকের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। সাথে যোগ দিয়েছে স্মরণ শক্তিহীনতা, চুলপরা, চোখের নিচে কালো দাগ, নানান দুর্বলতা, পুষ্টিহীনতা ও অতিমাত্রায় খাদ্য গ্রহণ প্রবণতা ইত্যাদি। অবিশ্বাস্য ব্যাপার যে, এতো সমস্যা সত্বেও সুস্থ ও সুন্দর জীবন নিয়ে বাঁচার প্রবল প্রচেষ্টায় ছোট থেকে অদ্যাবধি মেধাবীদের তালিকাতেই রয়েছে মুক্তি! জন্মথেকেই একদিকে নিরব মৃত্যুর হাতছানি, অপরদিকে সুস্থ-সুন্দর জীবন গঠনের প্রাণপণ তীব্র আকাঙ্ক্ষা যেন অবিরাম পাঞ্জা লড়ছে!

বাস্তবতার আলোকে দেখা যায়, কারো আকুতি শোনার ও সহযোগিতার হাত প্রসারিত করার মত মানসিকতার বড়ই অভাব বর্তমান সময়ে। এমন চতুর্বিধ দুর্দশাগ্রস্থ অভাবের সংসারে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধির আশাটি করাও যেন অপরাধ! তবুও মনের মাঝে জেগে ওঠে সীমাহীন প্রত্যাশা। নিঁভু নিঁভু প্রদীপ থেকে আশার বিজলী যেন নিত্য ঝিলিক দিয়েই চলে তাদের চোখের কোণে ও বুকের মাঝে। নতুন স্বপ্ন-আশায় সুস্থ্য সুন্দর ভবিষ্যত গড়ার অন্তিম প্রয়াস লক্ষ্য করলে যেন পাষান হৃদয়ও কেঁদে ওঠে !!

 

আশার বাণী হিসেবে পাওয়া যায়, বর্তমানে বিজ্ঞান-প্রযুক্তির নব নব উদ্ভাবনীতে চিকিৎসা পদ্ধতির প্রভূত উন্নয়ন ঘটেছে। বেশ কয়েকজন চিকিৎসা গবেষক ও কনসালটেন্ট জানিয়েছেন – “বিদেশে নয়, উন্নত চিকিৎসা পেলে দেশেই নিউমোনিয়া চিরতরে ভালো করা সম্ভব হতে পারে! তবে তা সময় সাপেক্ষ্য ও ব্যয়বহুল বটেই “!!

পাড়া-পড়শি ও শুভাকাঙ্ক্ষীগণ সকলেই একযোগে মুক্তিদের পরিবারকে নিরীহ, ভদ্র ও বিনয়ী হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। মুক্তির পরিবার যে কোন পরিস্থিতিতেই বছরের পর বছর সুনাম ও সম্মান অক্ষুন্ন রেখে হালাল ভাবে ও সততার সঙ্গে জীবন সংগ্রামে বদ্ধপরিকর। কাজেই, পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মুক্তির ব্যাপারে সকল সহযোগিতা মূলক কার্যক্রম সরাসরি ব্যবস্থাপনার জন্য সুনির্দিষ্ট মানবাধিকার ও গণমাধ্যম কর্মীর ওপর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে যার জোর প্রচেষ্টায় ইতোমধ্যে এই খবর বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রচার চলমান আছে। মুক্তি ও তার পরিবারের সার্বিক সহযোগিতার জন্য নির্দিষ্ট ব্যাংক একাউন্ট : সঞ্চয়ী হিসাব নং- ১৫৪২৮,মোঃ শোয়েব হোসেন, রাজলক্ষ্মী শাখা, উত্তরা, ঢাকা – ১২৩০। মোবাইল- ০১৭৩০৮৯০০১৯, মুক্তির মা- ০১৯৪৯৭১৭৩০৬।

এই সংবাদ প্রকাশ ও প্রচারের মাধ্যমে সমাজের সকল স্তরের হৃদয়বান, বিত্তবান, বিবেকবান, দানশীল ও প্রভাবশালী মহলের জরুরী ভাবে মুক্তির চিকিৎসা ও লেখাপড়ায় সহযোগিতার লক্ষ্যে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হচ্ছে । তাছাড়াও অসহায়, দরিদ্র, ভূমিহীন ও গৃহহীন হিসেবে প্রয়োজনীয় সমস্ত বিষয়ের সু-বন্দোবস্ত ও আর্থিক সহায়তার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও বিভিন্ন দাতা প্রতিষ্ঠানের সহায়তা কামনা করা হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media
December 2023
T W T F S S M
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031