জৈন্তাপুর সীমান্তে বেপরোয়া চোরাচালান, বেন্ডটিস করিম চক্রের লাখ লাক টাকা চাঁদাবাজি
সিলেট বিভাগীয় ব্যুরো::- সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের ঘিলাতৈল গ্রামের বাসিন্ধা মছদ্দর আলীর ছেলে আব্দুল করিম ওরফে বেন্ডটিস করিম এর নেতৃত্বে একটি চোরাচালান চক্র সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে সীমান্ত থেকে লাখ লাখ টাকা আদায় করছে। এই চক্রের সাথে রয়েছে স্থানীয় থানা পুলিশ ও বিজিবির গভীর রহম দহম।
সেই সুবাদে এই চক্রটি সীমান্ত এলাকায় ত্রাসের রামরাজত্ব কায়েক করছে। বিনিময়ে বেন্ডটিস করিম তার বাহিনীর লোকজন নিয়ে জৈন্তাপুর সীমান্ত দিয়ে দিনের আলোতে ও রাতের আধাঁরে টাকার বিনিময় বুঙ্গার মাল পাচার করছে। কিন্তু নিরব ভুমিকা পালন করছে স্থানীয় প্রশাসন। যার ফলে বেন্ডটিস করিম এখন জৈন্তাপুর সীমান্তের রাজা। জৈন্তাপুরবাসী তার চলাফেরা দেখে অবাক।
সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আর সেই বুঙ্গার লাইন থেকে করিম এখন কোটি কোটি টাকার মালিক। বর্তমানে জৈন্তাপুর উপজেলায় যার রয়েছে বিলাশ বহুল দুই বাড়ি ও একাধীক গাড়ী সহ অধিক জমি-জমা। এখন তিনি সীমান্তের রাজা। এলাকার লোকজন তাকে সীমান্তের রাজা হিসাবে চিনেন।
ক্রাইম সিলেটের অনুসন্ধানে জানা যায়, জৈন্তাপুর সীমান্তের গোয়াবাড়ি, ফুলবাড়ী, ঘিলাতৈল, টিপরাখলা, কমলাবাড়ী, গোয়াবাড়ী, বাইরাখেল, হর্নি, কলিঞ্জি, চারিকাটা ইউনিয়নের জালিয়াখলা,বাগছড়া, লালাখাল, তুমইর, অফিফানগর, বালিদাঁড়া, ইয়াং রাজাসেহ এসকল এলাকা রয়েছে করিমের আয়ত্বে।
আর এই এলাকাগুলো থেকে নিয়মিত টাকা আদায় করছে করিমের ভাগিনা রুবেল, ডিবির হাওরের স্পেশাল বিজিবি ক্যাম্প ও ভারতীয় বিএসএফ এর লাইনম্যান ফরিদ মিয়া। ৪ নাম্বার, শ্রীপুর, আ লুবাগান এলাকার লাইনম্যান মীরজান আহমদ।
তারা সব সময় করিমের হয়ে মাঠে কাজ করছে এবং বুঙ্গাড়ীদের নিকট থেকে লাখ লাখ টাকা আদায় করছে। এই টাকার হিসাব প্রতিদিন করিমের নিকট দিতে হয়। করিম এই টাকার পুলিশ ও বিজিবির কাছে সময় মতো পৌঁছে দেন।
পুলিশ-বিজির সাথে অবৈধ টাকার সম্পর্ক থাকায় সীমান্ত এলাকা দিয়ে বানের পানির মত দেশে প্রবেশ করছে ভারতীয় নাছির বিড়ি, মদ, ইয়াবা, মোটরসাইকেল, মোবাইল, কসমেট্রিক্স গবাদিপশু গরু সহ ইত্যাদি সামগ্রী। দেশ থেকে ভারতে যাচ্ছে খাদ্য-সামগ্রী। কিন্তু টাকার বিনিময়ে নিরবে ঘুমিয়ে থাকে স্থানীয় প্রশাসন।
এসব পণ্য বাংলাদেশে প্রবেশ করতে লাইনম্যান নামক বেন্ডটিস করিমসহ তার চক্রের সদস্যরা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে অগ্রীম টাকার বিনিময় চাঁদার লাইন নিয়ে তারা চোরাকারবারীদের নিকট হতে আদায় করে আসছে দৈনিক লাখ লাখ টাকা আদায় করছে৷ এতে করে একেক জন হচ্ছে কোটি কোটি টাকার মালিক।
একটি সূত্র জানায়, এই লাইনম্যানরা বিজিবি ও পুলিশকে দিচ্ছে উত্তোলনের তিন ভাগের এক ভাগ বাকিটা তাদের পকেটে। লাইনম্যান সীমান্তের রাজা বেন্ডটিস করিমসহ তার চক্রের সদস্যদের অবৈধ সম্পদের তথ্য নিলে অচিরেই বেরিয়ে আসবে তাদের থলের বিড়াল। সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনের এসকল লাইনম্যানদের সম্পদের তথ্য নেওয়ার প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল। এ্ররা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধ পন্তায় এখন কোটিপতি।
বিষয়টি নিয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে আলাপকালে জানা যায়, বিজিবি ও পুলিশের অন্য বাহিনীর কোন লাইনম্যান নাই, ভারতীয় পণ্য বাংলাদেশে অবৈধ ভাবে প্রবেশ বেআইনি তারপরও কেউ আমাদের নাম ব্যবহার করে টাকা আদায় করে থাকলে তাদেরকে ধরিয়ে দিন বা তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করুন৷
তারা দাবী করেন জানান এসব বেআইনি কাজে যারা জড়িত সমাজের সচেতন মহল আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে তথ্য দিন, আমাদের নামে কাউকে চাঁদা না দেয় তার পরেও আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি বলে জানান৷
কিন্তু করিম চক্রের বিরুদ্ধে ক্রাইম সিলেটে কয়েকটি সংবাদ প্রকাশিত হলেও কোন ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না প্রশাসন। যার ফলে জৈন্তাপুর উপজেলাবাসী প্রশাসনের উপর থেকে তাদের আস্থা হারিয়ে ফেলছে। দিনের আলোতে ও রাতের আধাঁরে সীমান্তে দেখা যায় লাইনম্যানদের কান্ড। এমনকি জৈন্তাপুর বাজারে প্রকাশ্যে বুঙ্গাড়ীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেন তারা।
সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চোরাচালান বন্ধে এবং অবৈধ টাকার লাইনম্যান সীমান্তের রাজা কোটিপতি বেন্ডটিস করিম ও রুবেলসহ এই চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের নিকট আশু হস্থক্ষেপ কামনা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।