২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

জুমার দিনের ফজিলত ও আমল

অভিযোগ
প্রকাশিত জানুয়ারি ৩১, ২০২০
জুমার দিনের ফজিলত ও আমল

আবুসাঈদঃ শুক্রবারের দিন জোহরের নামাজের পরিবর্তে জুমার নামাজকে ফরজ করা হয়েছে। জুমার দুই রাকাত ফরজ নামাজ ও ইমামের খুতবাকে জোহরের চার রাকাত ফরজ নামাজের স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে। সসপ্তাহের এদিনে জুমার খতিব উম্মতের যাবতীয় প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কোরআন ও হাদিসের আলোকে নির্দেশনা ও সমাধানমূলক উপদেশ দেবেন তাঁর খুতবায়।

হজরত তারেক ইবনে শিহাব (রা.) থেকে একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ক্রীতদাস, মহিলা, নাবালেগ বাচ্চা ও অসুস্থ ব্যক্তি—এই চার প্রকার মানুষ ছাড়া সকল মুসলমানের ওপর জুমার নামাজ জামাতে আদায় করা অপরিহার্য কর্তব্য (ফরজ)। (আবু দাউদ : ১০৬৭, মুসতাদরেকে হাকেম : ১০৬২ , আস্-সুনানুল কাবীর : ৫৫৮৭) হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে এ মর্মে হাদিস বর্ণিত হয়েছে যে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো শরিয়তসম্মত কারণ ছাড়া জুমার নামাজ বর্জন করবে, তার নাম মুনাফিক হিসেবে এমন দপ্তরে লিপিবদ্ধ হবে, যা মুছে ফেলা হবে না এবং পরিবর্তন ও করা যাবে না। (তাফসিরে মাজহারি ,খণ্ড : ৯ , পৃষ্ঠা : ২৮৩)

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) এ মর্মে হাদিস বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (স.) যে সমস্ত লোক জুমার নামাজ থেকে দূরে থাকে (পড়ে না) তাদের সম্পর্কে বলেছেন, নিশ্চয়ই আমার ইচ্ছা হয় যে আমি কাউকে নামাজ পড়ানোর আদেশ করি, সে মানুষকে নামাজ পড়াক। অতঃপর যে সমস্ত লোক জুমার নামাজ পড়ে না, আমি তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিই। (মুসলিম : ৬৫২, মুসনাদে আহমাদ : ৩৮১৬, মুসনাদে ইবনে আবি শাইবা : ৫৫৩৯, আসু-সুনানুল কুবরা : ৪৯৩৫) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, জুমা হচ্ছে শ্রেষ্ঠ দিবস। তিনি আরও বলেছেন, যে ব্যাক্তি সুন্দর রূপে ওযূ করা পূর্বক জুমা নামাজ পড়তে আসিবে তার পূর্ববর্তী জুমা থেকে বর্তমান জুমা পর্যন্ত সংগঠিত গুনাহ সমূহ মাফ হয়ে যায় ।

সূরা আল জুমায় ইরশাদ করা হয়েছে, যখন সালাতের জন্য জুমার দিবসে আহবান জানানো হয়, তখনই আল্লাহকে স্মরণের উদ্দেশ্যে চলে এসো এবং ব্যবসায়িক লেনদেন বন্ধ করে দাও। এটা তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা জানতে।

হযরত হাফসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, প্রত্যেক ( প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ ) মুসলমানের জন্য জুমার নামাজ আদায় করা ওয়াজিব- অপরিহার্য কর্তব্য। – সুনানে নাসায়ী। রসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, যে ব্যাক্তি অবহেলা-অলসতা করে পর পর তিন জুমা নামাজ ছেড়ে দিল, আল্লাহ তার অন্তরে মোহর মেরে দিবেন। – আবু দাউদ আরেক হাদীসে রসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, যে ব্যাক্তি কোন ওজর এবং অনিষ্টের ভয় ছাড়া জুমার নামাজে অংশ গ্রহন করে না, মুনাফিকের এমন দফতরে তার নাম লিপিবদ্ধ করা হয়, যা কখনো মোছা বা রদ বদল করা হয় না। তিরমিযী শরীফে আছে, হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) কাছে এমন এক ব্যাক্তির ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করে হলো, যে দিনভর রোজা রাখে এবং রাতভর নামাজ পড়ে কিন্তু জামাতে কিংবা জুমায় হাজির হয় না- তার হুকুম কি? প্রত্যুত্তরে তিনি বললেন- এমতাবস্থায় তার মৃত্যু হলে সে জাহান্নামে যাবে। হযরত আলী (রাঃ) বলেন,মসজিদের প্রতিবেশীর নামাজ মসজিদ ছাড়া আদায় হয় না। বলা হলো মসজিদের প্রতিবেশী কে ? তিনি বললেন, যে আযান শুনতে পায় হাদিস অনুযায়ী জুমার নামাজ পড়া যেমন ওয়াজিব তেমনি জামাতে নামাজ পড়ার জন্যে পবিত্র কুরআনে তাগিদ দেয়া হয়েছে ।

আল্লাহপাক বলেন, হাটু পর্যন্ত পা খোলার দিনের কথা স্মরণ কর, যেদিন তাদের সেজদা করতে আহবান করা হবে, তখন তারা সেজদা করতে পারবে না । তাদের দৃষ্টি অবনত থাকবে, তারা অপমান ও লাঞ্ছনাগ্রস্থ হবে। অথচ তারা যখন সুস্থ অবস্থায় ছিলো, তখন তাদের সেজদা করার জন্য আহবান জানানো হতো _সূরাঃ আল কলম-৪২-৪৩

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031