বিশেষ প্রতিনিধি : গাজীপুরের কালিয়াকৈরে আদালতের আদেশ অমান্য করে অবৈধ ভাবে জমি দখলের চেষ্টা, পুলিশি হয়রানি ও দোকানপাট ভাংচুর, মালামাল লুটপাটের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
মধ্যরাতে অবৈধ ভাবে জমি দখল,দোকান পাট ভাংচুর ও লুটপাট করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ঘটনার নেপথ্যে কাজ করছে পুলিশ।
গত সোমবার মধ্য রাতে হরিণহাটি এলাকার মো: আবুল কালামের বিশ্বাসপাড়া এজিস রোড় সংলগ্ন মার্কেটে এ ঘটনাটি ঘটে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানা যায়, কালিয়াকৈরের চান্দরা মৌজায় আরএস-৯৬ নং খতিয়ানে রের্কডীয় মালিক হাবিবুর রহমানের কাছ থেকে মো: আবুল আরএস ২৪১০ নং দাগে ০৫ শতক জমি ক্রয় করে দুই যুগের বেশি সময় ধরে ভোগদখলে নিয়ত আছে। উক্ত জমির পশ্চিম অংশে ৩.২০ শতকের মধ্যে একটি একতলা পাকা মার্কেট তৈরী করে। এর পূর্বদিকে বাকি দুই শতকের ভেতর দিয়ে একটি আঞ্চলিক সড়ক যাওয়ায় সেখানে পৌনে ০১ শতক জমি চলে যায় এবং বাকি ০১শতকে পরবর্তীতে গত কিছুদিন আগে সেখানে একটি টিনসেট দোকান ঘর তৈরী করা হয়। এর কয়েক দিন পর থেকে ওই জায়গায় আলম খান নামের এক ব্যক্তি ওই জমি তার দাবি করে বিভিন্ন সময় উক্ত জমির মালিক কালাম মিয়াকে নানাভাবে হয়রানি করতে থাকে।
একপর্যায়ে ওই ব্যক্তি থানা পুলিশের সহয়াতায় কালাম মিয়ার ওই দোকান ঘর ভেঙ্গে নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। পরে কালাম মিয়া কোন উপায় না পেয়ে তার দোকান ঘর এবং আলম ও পুলিশী হয়রানি হতে রক্ষা পেতে আদালতের ধারাস্ত হয়। আদালত গত ৩০/০৯/১৯ইং তারিখে ওই জমিতে ১৪৫ ধারা জারী করে স্থানীয় থানা পুলিশকে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং এসিলেন্ট (ভূমি) কে জমির দখল প্রতিবেদন কোর্টে প্রেরণ করার নির্দেশ প্রদান করেন।
এমন্তাবস্তায় গত ৩১/০৯/১৯ইং তারিখ থানা পুলিশ আদালতের ওই আদেশ নোটিশ পাওয়ার পর আরো ক্ষিপ্ত হয়ে কালাম মিয়া ও তার পরিবারের অন্য সদস্যদের হুমকি প্রদান করতে থাকে। ওই দিন দুপুর দেড়টার দিকে ওসি মো: আলমগীর হোসেন মজুমদার সরকারী নাম্বার ০১৭১৩-৩৭৩৩৬৫ হতে ০১৯১৫-৪২০৪৭১ নাম্বারে ফোন করে ওই দোকান ঘর ভেঙ্গে নিবে কিনা জানতে চেয়ে হুমকি প্রদান করে। পরে তারা ওই দোকান ঘর ভেঙ্গে নিতে অস্বীকার করলে ওসি থানার উপ-পরিদর্শক এসআই মুক্তি মাহমুদকে কালাম মিয়া ও তার ছেলেদের থানায় ধরে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ প্রদান করে।
পরে এসআই মুক্তি মাহমুদ কালাম মিয়া ও তার ছেলেদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করে থানায় উপস্থিত হওয়ার জন্য বলেন অন্যথায় তাদের অবস্থা খারাপ হবে বলে হুমকি প্রদান করতে থাকেন। একপর্যায়ে কালাম মিয়া ও তার ছেলেরা ওই এসআইয়ের ভয়ে পালিয়ে বেড়াতে থাকে।
এভাবে কোর্টের আদেশ এর ৬দিন পার হয়ে গেলেও উভয় পক্ষের কাউকে থানা পুলিশ ওই নোটিশ (জারি) প্রদান করেননি।
৬দিন পরও কালাম মিয়াকে হুমকি দিয়ে যখন ওই ঘর ভাঙ্গাতে ব্যর্থ হয় তখন সোমবার মধ্য রাতে আলম ও তার ছেলে এবং সঙ্গীয় আরো ২০/২৫ জন সন্ত্রাসী রাতের আধারে থানা পুলিশের সহায়তায় ওই জমিতে থাকা দোকান ঘরটি ভাংচুর করে সমস্ত মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়। রাতে দোকান ঘরটি ভাংচুর করে সমস্ত মালামাল চুরি করে নিয়ে যাওয়ার পরই ওই এসআই সকাল হতেই কালাম মিয়াকে ফোন করে কোর্টের নোটিশ নিয়ে যেতে বলে। পরে কালাম মিয়ার ছোট ছেলে ওই নোটিশ আনতে এসআইয়ের কাছে গেলে এসআই বলেন আমি জমি দেখে গেলাম এভাবে যেন থাকে।
সিকিউরিটি আবুল জানান, আমি সাথে আরেকজন আমরা দুজন মিলে ওই জমির পাশে মার্কেটে রাতে সিকিউরিটি গার্ডের দায়িত্ব পালন করছিলাম। এসময় আমি ওই মার্কেটের ভেতরে দক্ষিন পাশের দায়িত্বে ছিলাম। হঠাৎ করে রাত অনুমান পৌনে ২টার দিকে টিনে ঠাস ঠাস বারির শব্দ শুনতে পাই পরে আমি আমার সাইডের দোকানগুলো চেক দিয়ে এসে দেখি মার্কেটের পাশের একটি টিনসেট দোকান ঘর কারা যেন ভেঙ্গে নিয়ে গেছে। পরে ওই খানে দায়িত্বে থাকা সিকিউরিটি কাদের এর কাছে জানতে পারলাম সফিপুরের আলম সাব এবং তার ছেলে সঙ্গীয় আরো ২০/২৫জন মিলে ওই দোকান ঘর ভাংচুর করে নিয়ে যায়। এসময় তাদের সাথে একটি হাইস ও পিকআপ ভ্যানও ছিল।
প্রতেক্ষদর্শী জিয়াউর রহমান নামে এক দোকানদার জানান, আমি রাতে আমার দোকানঘর বন্ধ করে মার্কেটেই ঘুমিয়ে পড়ি পরে মধ্য রাতে হঠাৎ টিনের বারির শব্দ শুনে আমার ঘুম ভেঙ্গে যায় পরে দোকান থেকে বেড় হয়ে একটু এগিয়ে দেখি আলম খান ও তার ছেলে সঙ্গে আরো ২০/২৫ জন মিলে কালাম মিয়ার একটি দোকান ঘর ভেঙ্গে মালামাল একটি পিকআপ ভ্যানে বড়ছে। পরে বিষয়টি আমি কালাম মিয়াকে ফোন করে জানিয়ে দিয়ে শুয়ে পড়ি।