৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

দুদক’র সাবেক ডিডি আহসান আলীকে ১৫ দিনের গ্রেফতারের আন্টিমেটাল,নাহলে বন্দর বন্ধের হুমকি, বন্দর ব্যবহারকারী ৭ সংগঠন

অভিযোগ
প্রকাশিত অক্টোবর ৯, ২০১৯
দুদক’র সাবেক ডিডি আহসান আলীকে ১৫ দিনের গ্রেফতারের আন্টিমেটাল,নাহলে বন্দর বন্ধের হুমকি, বন্দর ব্যবহারকারী ৭ সংগঠন

 

মোঃ শাফায়েত সবুজ,(যশোর)প্রতিনিধি: দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর সাবেক ডিডি আহসান আলীকে আবারো গ্রেফতার’র দাবী করেছে বেনাপেল বন্দর ব্যবহারকারী ৭ সংগঠন। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তাকে গ্রেফতার করার আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে সংগঠনের পক্ষে। নির্ধারিত সময়ে আহসান আলী গ্রেফতার না হলে সারা দেশে ব্যবসায়ী সংগঠন গুলো কঠোর কর্মসূচী ঘোষনা করবে। ফলে জাতীয় রাজস্ব আহরণ কর্মকান্ডে বড় ধরনের প্রভাব পড়ার আশংকা করছেন ব্যবসায়ীরা।

বেনাপোল কাস্টমস’র সহকারী কমিশনার উওম চাকমা জানান, দুর্নীতিবাজ, তদ্বিরবাজ, ভায়াগ্রা চোরাচালানের গডফাদার সাবেক ডিডি আহসান আলী কাস্টম হাউসের নিজের ব্যবসায়িক স্বার্থ হাসিলের জন্য বেনাপোল কাস্টম হাউসের কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও সিএন্ডএফ এজেন্টসদের দীর্ঘদিন থেকে দুদক দিয়ে হেনস্থা করার ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছেন। তাঁর নিজের বিনিয়োগকৃত ও তদ্বিরকৃত প্রতিষ্ঠান রিতু ইন্টারন্যাশনাল ও জেড. এইচ কর্পোরেশনের ৩১ টি চালানে ২ কোটি ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকার শুল্কফাঁকি ধরা পড়ে। পরিকল্পিত শুল্কফাঁকি ও গত জুলাই ২০১৯ তারিখে ২.৫ মে.টন ভায়াগ্রা খালাসে ব্যর্থ হয়ে কমিশনারের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক কর্মকান্ডে লিপ্ত হন আহসান আলী।জানুয়ারি ২০১৮ থেকে তাঁর ষড়যন্ত্র ও দুরভিসন্ধিমূলক কর্মকান্ডের ফলে কর্মকর্তারা স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারেনি।

বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে পণ্য আটক ও লাগাতার হয়রানির কারণে বাণিজ্যিক আমদানিকারকরাও ভয়ে স্বাভাবিক আমদানি করেনি। ফলে ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১ হাজার ৫১৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয় সরকারের। দীর্ঘ সময়ে মোবাইলে আহসান আলী ০১৭৭০২৯৪১০৪ ও ০১৯১৮৫৩১৬৮০ নম্বর থেকে ফোনকল ও এসএমএস এর মাধ্যমে কমিশনারকে হুমকি দেয়া হয়। গত ১৯ নভেম্বর আহসান আলী সশরীরে কমিশনারের দপ্তরে এসে কমিশনারকে ২০ লক্ষ টাকা ফাঁকির সুযোগ চেয়ে তদ্বির, দেনদরবার ও চাপ সৃষ্টি করেন, এ সময় সহকারী কমিশনার ও তদুর্ধ দশ জন উর্ধতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

বেনাপোল কাস্টমস হাউসের শুল্ক ও ভ্যাট এসোসিয়েশনের আহবায়ক রাজস্ব কার্মকর্তা বিল্লাল হোসেন জানান, হুমকি ও চাপে কমিশনারকে কাবু করতে না পেরে ডিসেম্বর ২০১৮ এ কমিশনারের বিরুদ্ধে জনৈক এডভোকেট শাহাদাত হোসেন নাম দিয়ে (যার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি) ৪ পাতার একটি মনগড়া ও সাজানো দু’ডজন অভিযোগ সম্বলিত বেনামী লিখে দুদকে জমা দেন এবং তা শতাধিক দপ্তর ও মিডিয়ায় বিতরণ করেন। পত্রটি দুদক আমলে নিয়ে এনবিআরসহ চার জায়গা থেকে অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয়। দুদকের অনুরোধে সম্পাদিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তদন্তে একটি অভিযোগও প্রমাণিত হয়নি।আহসান আলী সিএন্ডএফ এজেন্ট জনৈক কামরুল নাম দিয়ে মনগড়া তথ্য দিয়ে ফেব্রুয়ারি মাসে আরেকটি বেনামী দুদকে জমা দেয় এবং এটিও আমলে গৃহীত হয় এবং অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয়া হয়; দুদকে অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণের বিষয়টি পরিকল্পিতভাবে গত ৫ আগস্ট বিভিন্ন টিভির স্ক্রলে ও পত্রিকায় প্রচার করে কমিশনারকে পরিকল্পিতভাবে হেনস্থা করা হয়।

একইভাবে হেনস্থার উদ্দেশ্যে গত ৯ সেপ্টেম্বর দুদকে কমিশনারের হাজিরার জাল নোটিশ মিথ্যা তথ্য, তারিখ ও সময় উল্লেখপূর্বক পরিকল্পিতভাবে জাল করে আহসান আলী মিডিয়ায় বিতরণ ও প্রচার করে, যা অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা অবহিত আছেন।আহসান আলী কেবল হয়রানি, শত্রুতা ও প্রতিহিংসা চরিতার্থের জন্যে দুদকের মতো জাতীয় প্রতিষ্ঠানের নাম, পদবী ও ক্ষমতা এবং প্রশাসনসহ দুদককে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে সক্ষম হন বলে বেনাপোলের ব্যবসায়ী সংগঠন মনে করেন। বেনাপোল কাস্টম হাউসের ৩৫০ জন কর্মকর্তা কর্মচারীকে ৯ মাস বাড়তি কর্মকান্ডে ব্যস্ত রাখেন। ফলে, আতংক ও ভোগান্তি ছাড়াও সামগ্রিক কর্মপরিবেশ বিনষ্ট হয়। সারাদেশের রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়মিত কর্মকান্ডে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

দুদক সূত্রে জানা যায়, নানা দুর্নীতি এবং বিভিন্নজনের বিরুদ্ধে বেনামী অভিযোগ দিয়ে প্রায়ই হয়রানি করতেন দুদকের সাবেক উপপরিচালক আহসান আলী। এসব অভিযোগের কারণে ২০১৫ সালে তাকে উপপরিচালক হিসেবে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। এরপর থেকে তিনি আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। কখনও তিনি ‘দুদকের হবু ডিজি, কখনও দুদকের চেয়ারম্যানের কাছের লোক, কখনও দুদক পরিচালক’ পরিচয় দিয়ে মানুষজনের সঙ্গে প্রতারণা করছেন।

সূত্রটি জানায়, দুদকে চাকরিকালে আহসান আলী নিজ সহকর্মীদের বিরুদ্ধে একের পর এক বেনামী অভিযোগ দাখিল করতেন। তার বিরুদ্ধেও কোনো কোনো কর্মকর্তা দুর্নীতির অভিযোগ দেন। অভিযোগে আহসান আলীর বিরুদ্ধে নামে-বেনামে কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য তুলে ধরা হয়। কিন্তু অনুসন্ধান প্রক্রিয়ায় দেখা যায়, আহসান আলী সম্পদ বিবরণীর সঙ্গে যে আয়কর নথি দাখিল করেছেন প্রতিবার কমিশন সেটিই গ্রহণ করে বিনা বাক্যে দায়মুক্তি দিয়েছে। অন্যদের যে প্রক্রিয়ায় অনুসন্ধান করা হয়-আহসান আলীর ক্ষেত্রে সেই প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয়নি। ফলে অনুদঘাটিতই থেকে যায় তার সম্পদ-সা¤্রাজ্য।

দুদক সূত্রমতে, ২০১৫ সালে আহসান আলীর বিরুদ্ধে একটি অনুসন্ধান শুরু হয়। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, আহসান আলীর নামে-বেনামে তার রয়েছে বিপুল সম্পদ। এর মধ্যে নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকার রোড-০৫, বাড়ি নম্বর ৪৭-এ ৩ কাঠা প্লটের ওপর ৩ তলা ভবন। ২০১২ সাল থেকে ২০১৫ সালের নথিতে এ বাড়ির তথ্য উল্লেখ করেন। আয়কর নথিতে আহসান আলী এটির দাম দেখিয়েছেন ৯১ লাখ টাকা। কমিশন সেটিই মেনে নিয়েছে। আহসান আলী তার আয়কর নথিতে ১ কোটি ২ লাখ ৭৭ হাজার টাকার সম্পদ রয়েছে বলে দাবি করেন। এর মধ্যে ৫০ লাখ টাকা ব্যাংক ঋৃণ। মোট আয়ের উৎস মিলেছে ১ কোটি ১৫ লাখ ৭৭,১৫০ টাকা। কমিশন বিনা প্রশ্নে সেটিই মেনে নেয়।

দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীর তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে যেভাবে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং ভূমি অফিস থেকে রেকর্ডপত্র চাওয়া হয় – আহসান আলীর জন্যে তেমন তথ্য চাওয়া হয়নি। অন্যদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে যেভাবে তলবি নোটিশ দেয়া হয়, সংবাদ মাধ্যমে প্রচার করা হয় আহসান আলীর ক্ষেত্রে তেমনটি ঘটেনি। ফলে অনেকটা গোপনেই এথাধিকবা

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031