১২ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

ক্ষমতাসীন দলের শতাধিক নেতার বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা

অভিযোগ
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৯
ক্ষমতাসীন দলের শতাধিক নেতার বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা

অভিযোগ ডেস্ক :: ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ঢাকা উত্তর দক্ষিণের একাধিক শীর্ষনেতাসহ অন্তত শতাধিক ব্যক্তির বিদেশ ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

নেতাদের বিরুদ্ধে আসা বিভিন্ন অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তেরর স্বার্থে এই ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে বিদেশে যেতে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলছে, প্রধানমন্ত্রী গত ১৪ সেপ্টেম্বর যখন যুবলীগের বিভিন্ন নেতার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উত্থাপন করেন, তখনই ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ বিদেশ যেতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।

আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার মতে, বিদেশ যাওয়া তার পক্ষে সম্ভব নয়। তাকে বিমানবন্দর বা যেকোন সীমান্তে আটক করা হতে পারে। এরপরই তিনি আর বিদেশে না গিয়ে বাসায় অবস্থান করেন। একইভাবে আরও কয়েকজন ব্যক্তির ক্ষেত্রেও একই নির্দেশ জারি করা হয়। তারা যেন এখন বিদেশ যেতে না পারে সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে কঠোর নির্দেশ রয়েছে।

শুধু যুবলীগ নয়, ছাত্রলীগের অব্যাহতি পাওয়া সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অন্তত ৩০ জনের বেশি নেতার বিরুদ্ধে বিদেশ যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। তারা যেন বিদেশ না যায় সেজন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট দফতরে দেয়া হয়েছে।

অপরদিকে ছাত্রলীগ ছাড়াও স্বেচ্ছাসেবকলীগ এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দর বিদেশ যাওয়ার ব্যাপার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সূত্র বলছে, আওয়ামী লীগের ভিতরে যারা অপকর্ম করছে, আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসসহ নানা রকম অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আছে, তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তালিকা প্রণয়নের কাজ শেষ হয়েছে।

৩টি গোয়েন্দা সংস্থা এ ব্যাপারে কাজ করেছিল। সেখানে ৫ শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হয়। যে সমস্ত অভিযোগের মধ্যে অন্তত শতাধিক অভিযোগ ছিল দালিলিক অভিযোগ। তথ্য প্রমাণ, সুনির্দিষ্ট উপাত্ত, ছবি সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেগুলো প্রধানমন্ত্রী বরাবর পাঠানো হয়। ওই শতাধিক ব্যক্তির উপরই এখন বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তাদের দিকে নজর রাখা হবে, তারা বিদেশে গেলে তাদের বিরুদ্ধে যে তদন্ত হবে তা যেন ব্যাহত না হয়।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ৫ অপরাধের সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীর তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তবে একাধিক সূত্র বলছে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এমনভাবে একটি পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে না যাতে আতঙ্ক তৈরি হয়। বরং ধাপে ধাপে যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ রয়েছে এবং যারা সীমা অতিক্রম করেছে তাদের এখন আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। কাউকে কাউকে সতর্কবার্তাও দেয়া হচ্ছে। তারা যে সমস্ত অন্যায় অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে, সেসব থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে সতর্কবার্তাও দেয়া হচ্ছে।

অভিযোগের ধরন হিসেবে জানা গেছে, মূলত ৫ টি ক্ষেত্রের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হয়েছে। ১. অবৈধ টেন্ডার বাণিজ্য। দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে টেন্ডারে প্রভাব বিস্তার করা। ২. সন্ত্রাসের মাধ্যমে অন্যের জমি দখল করা। বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদা আদায়। ৩. মাদক ব্যবহার, মাদক ব্যবসা বা মাদকসেবীদের সঙ্গে যোগসাজশ। ৪. জঙ্গিদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা, সহায়তা প্রদান বা প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে জঙ্গিদের মদদ দেয়া। ৫. সংখ্যালঘুদের নির্যাতন, সংখ্যালঘুদের সম্পদ দখল, নিপীড়ন। ৬. নারী নির্যাতন, নারী নিপীড়নকারীদের নানাভাবে সহায়তা প্রদান।

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031