৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

টাঙ্গাইলে সাংবাদিকের মা হত্যা রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই গ্রেপ্তার ২

অভিযোগ
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৩
টাঙ্গাইলে সাংবাদিকের মা হত্যা রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই গ্রেপ্তার ২

মোঃ শফিকুল ইসলাম সবুজ (টাঙ্গাইল): টাঙ্গাইলে সাংবাদিকের মা হত্যা রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই গ্রেপ্তার ২ জন।

টাঙ্গাইলের পশ্চিম ভূঞাপুরে বীরমুক্তিযোদ্ধা মরহুম আব্দুর রহিম আকন্দের স্ত্রী ও ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার নিউজ এডিটর আবু সায়েম আকন্দের মা সুলতানা সুরাইয়া(৬৫) হত্যা রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পিবিআই। ওই নারীর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধারের ৫ দিনের মাথায় দুই হত্যাকারীকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে রহস্য উদ্ঘাটন করা হয়। বুধবার(২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইল পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের(পিবিআই) পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সিরাজ আমীন সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন- সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সয়দাবাদ পুনর্বাসন এলাকার শাহজাহান ওরফে শাহ জামালের ছেলে মোঃ লাবু(২৮) ও টাঙ্গাইলের পশ্চিম ভূঞাপুরের সিরাজ আকন্দের ছেলে আল আমিন আকন্দ(২২)। তারা উভয়েই বেকার থাকায় ছোটখাট চুরি-ছিনতাই করে থাকেন।

টাঙ্গাইল পিবিআই কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ সিরাজ আমীন গ্রেপ্তারকৃতদের বরাতে জানান, সুলতানা সুরাইয়ার গলাকাটা মরদেহ গত ১৫ সেপ্টেম্বর উদ্ধার করা হলেও ১৩ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে তিনি খুন হন। সুলতানা সুরাইয়া নির্জন বাড়িতে একাই বসবাস করতেন।

পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার জানান, গ্রেপ্তারকৃত মোঃ লাবু ও আল আমিন পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী চুরি করতে ১৩ সেপ্টেম্বর রাতে টিনের গেট টপকে ওই বাড়িতে ঢুকে লুকিয়ে থাকেন। গভীর রাতে সুলতানা সুরাইয়া প্রকৃতির ডাকে সারা দিতে বাইরে আসার সুযোগে তারা দুজন ঘরের ভেতর ঢুকে। তিনি লাবু ও আল আমিনকে দেখে চিনে ফেলেন এবং চিৎকার-চেচাঁমেচি করার চেষ্টা করেন। এ সময় ঘরে থাকা গামছা দিয়ে তারা ওই নারীর মুখ বেঁধে মেঝেতে ফেলে রাখে। এক পর্যায়ে দুজনে শলা-পরামর্শ শেষে আল আমিন ওই মহিলার পা চেপে ধরে রাখে এবং মো. লাবু সাথে আনা অত্যাধুনিক ধারালো সুইচ গিয়ার ছুরি দিয়ে জবাই করে। ওই সময় সুলতানা সুরাইয়া ছটফট করতে থাকলে আল আমিন দ্বিতীয়বার জবাই করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে তারা ঘরের বিছানার নিচ থেকে নগদ টাকা ও মোবাইল চুরি করে পালিয়ে যায়।

সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে জানানো হয়, খুন করার পর তারা ওই বাড়ির ওয়াশরুমে ছুরি ও শরীরে লেগে থাকা রক্ত পরিস্কার করেন। বাড়ির বাইরে গিয়ে তারা চুরি করা ১২ হাজার টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় এবং দুটি মোবাইল ফোন মোঃলাবু নিয়ে সিরাজগঞ্জ চলে যান।

পুলিশ সুপার জানান, মরদেহ উদ্ধার হওয়ার পরপরই ভূঞাপুর থানা পুলিশের নিয়মিত তদন্তের সঙ্গে পিবিআই ছায়া তদন্ত শুরু করে। টাঙ্গাইল পিবিআইয়ের ইন্সপেক্টর মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান আনসারীর নেতৃত্বে ওই মহিলার চুরি যাওয়া মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে সিরাজগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে হত্যার কাজে ব্যবহৃত ছুরি ও অপর আসামি আল আমিনকে পশ্চিম ভূঞাপুরের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেপ্তারকৃতরা স্বেচ্ছায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দন্ডবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছেন। বুধবার বিকালে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাদেরকে টাঙ্গাইলের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করা হয়েছে। জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে টাঙ্গাইল পিবিআইয়ের কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন প্রিণ্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031