২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতে প্রয়োজন শতকোটি টাকা, মিলেছে মাত্র ৭৪ লাখ

অভিযোগ
প্রকাশিত অক্টোবর ২৭, ২০২২
নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতে প্রয়োজন শতকোটি টাকা, মিলেছে মাত্র ৭৪ লাখ

 

নিউজ ডেস্ক বগুড়া : দেড় যুগ আগে বর্ধিত ৯টি ওয়ার্ডের প্রায় দুই লাখ মানুষ অন্তর্ভুক্ত হয় বগুড়া পৌরসভায়। জমি আর দালানের জন্য বাড়তি পৌর কর গুনতে হলেও আজও নিশ্চিত হয়নি ন্যূনতম নাগরিক সেবা। সত্যতা স্বীকার করে মেয়র বলছেন, মানসম্মত রাস্তা-বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতে শতকোটি টাকার প্রয়োজন হলেও বরাদ্দ মিলছে নামমাত্র।

বগুড়া পৌরসভার ৪ ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যবর্তী নিশিন্দারা থেকে কারবালা পর্যন্ত রাস্তাটি প্রায় ২৫ বছর আগে পাকা হয়েছিল। তখন এটি ছিল ইউনিয়ন পরিষদের অংশ। ২০০৬ সালে বর্ধিত এলাকা হিসেবে পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত হলেও আজ অবধি কোনো সংস্কার হয়নি। শুধু এই রাস্তা নয়, দেড় যুগ আগে বর্ধিত এলাকায় যুক্ত হওয়া ৯টি ওয়ার্ডের প্রায় দুই লাখ মানুষ কেবল কাগজে-কলমেই হয়েছেন পৌরবাসী।

প্রায় ৫৬ বর্গকিলোমিটারের বর্ধিত এলাকার কোথাও নেই ড্রেনেজ ব্যবস্থা। দু-একটি ওয়ার্ডে সড়কবাতি থাকলেও প্রায় ৭৫ শতাংশ এলাকা সূর্যাস্তের সঙ্গেই তলিয়ে যায় অন্ধকারে। খোলা ড্রেনে কখনো বৃষ্টির পানিতে, কখনো-বা পৌর কর্তৃপক্ষের তুলে রাখা ড্রেনের ময়লায় ভোগান্তি পোহাতে হয় মানুষকে।

এলাকার দোকানি হানিফ বলেন, ‘রাস্তার বেহাল অবস্থায় নাজেহাল এলাকাবাসী। নেই ড্রেনেজ ব্যবস্থা, ময়লা রাস্তার ওপরেই ফেলা হয়।‘

আরেক বাসিন্দা রাশেদুল অভিযোগ পত্রিকাকে বলেন, ‘বৃষ্টির দিনে এই রাস্তায় চলাই মুশকিল। নামাজে যাওয়া যায় না। এত নোংরা ময়লা ভেসে থাকে। বাচ্চাদের স্কুলে যেতেও সমস্যা হয়। এদিকে ইউনিয়নের চেয়ে পৌরসভায় ছয় গুণ বাড়তি ভূমি কর গুনতে হচ্ছে। হোল্ডিং ট্যাক্স আর বাড়ির নকশা অনুমোদনেও খরচ বেড়েছে। বাড়েনি কেবল নাগরিক সুবিধা। উপজেলা পরিষদের উন্নয়ন খাতে বরাদ্দও বন্ধ হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠ বাসিন্দা জানান, ‘ভোটের আগে তো সবাই প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু ভোট শেষ হলে কাউকেই দেখা যায় না। আগে উপজেলা অফিস থেকে কিছু বরাদ্দ ছিল, পৌরসভা হয়ে সেটাও শেষ। এখন খালি খরচই বেশি।’

প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের অনেকে এলাকার উন্নয়নে তৎপর হলেও বাজেটের কাছে নতিস্বীকার করতে বাধ্য হয়।

বগুড়া পৌরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আমিন আল মেহেদী বলেন, ‘অন্যান্য ওয়ার্ডের কথা জানি না, তবে আমার ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের জিজ্ঞেস করে দেখতে পারেন, রাস্তার কাজ চলছে। ভোটে জেতার পর থেকেই এলাকার উন্নয়নে আমি কাজ করছি। তবে পুরো ওয়ার্ডের উন্নতি করতে আমাদের যে পরিকল্পনা, তা করতে গেলে আরও বরাদ্দ প্রয়োজন।’

বর্ধিত এলাকার এমন দুরবস্থার কথা নিজেই স্বীকার করেন পৌর মেয়র রেজাউল করিম বাদশা। তিনি বলেন, ‘এসব এলাকায় নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতে প্রয়োজন শত শত কোটি টাকা। গত বছর বরাদ্দ মিলেছে মাত্র ৭৪ লাখ টাকা। এই ওয়ার্ডগুলোতে রাস্তা নেই, ড্রেন নেই। এভাবে তো চলতে পারে না। তবে সরকারের কাছে অনুরোধ, দেশের সবচেয়ে বড় পৌরসভা হিসেবে আমাদের বরাদ্দ বিশেষ বিবেচনা করে বাড়িয়ে দেয়া হোক।’

১৮৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত বগুড়া পৌরসভার আয়তন ১৪ বর্গকিলোমিটার থেকে পাঁচ গুণ বাড়িয়ে ২০০৬ সালে ৭০ বর্গকিলোমিটার করা হয়।

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031