২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

একটি পদ্মাসেতু যেন শতশত বছরের মানুষের দু-স্বপ্ন আর কষ্টের অবসান।

অভিযোগ
প্রকাশিত জুন ১৮, ২০২২
একটি পদ্মাসেতু যেন শতশত বছরের মানুষের দু-স্বপ্ন আর কষ্টের অবসান।

একটি পদ্মাসেতু যেন শতশত বছরের মানুষের দু-স্বপ্ন আর কষ্টের অবসান।

পিআইডি রিপোর্টিার শেখ তিতুমীরঃ (লেখকঃ খন্দকার গোলাম মাওলা নকশেবন্দী,
উপদেষ্টা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
চেয়ারম্যান, ধর্ম বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ কমিটি,
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
সাবেক গভর্নর, বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন।)

দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের কোটি কোটি মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতু যেন আজ স্বপ্ন থেকে বাস্তবে রূপান্তরিত হতে যাচ্ছে। পদ্মা সেতু আজ যেন মহিমান্বিত রূপ রেখায় বিশ্বকে তাঁক লাগিয়ে দিয়েছে। বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারা এর বীরত্বের জাতির নাম বাঙ্গালী জাতি। যে জাতি ভাষার জন্যে জীবন দিতে পারে, সে জাতি দেখিয়ে দিয়েছে যে বিশ্ব ব্যাংক অর্থায়ন না করলেও নিজের দেশের অর্থায়নে এ দেশে এমন পদ্মা সেতু নির্মাণ করা সম্ভব। আর এই পদ্মা সেতু নির্মাণে যারা বলেছিলেন পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব না। তখন এ দেশের গণমানুষের আস্থার ঠিকানা আমাদের সবার প্রিয় নেত্রী গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় সফল প্রধানমন্ত্রী বঙ্গরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন পদ্মা সেতু নির্মানে এ এদেশে বয়ে আনবে এক নতুন সম্ভাবনা। আর এই সম্ভাবনাময় দেশে অসম্ভব ও সাধ্য হীন প্রচেষ্টাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা সাফল্যের সাথে এবং গৌরবের সাথে বিরামহীন চ্যালেঞ্জিং পদ্মাসেতুর কাজ দুর্গম গতিতে এগিয়ে নিয়েছেন যার কাজ প্রায়ই শেষের দিকে।

ইতোমধ্যে আগামী ২৫ জুন ২০২২ সকাল ১০ টায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এই মাহেন্দ্রক্ষণে স্বপ্নের পদ্মাসেতু উদ্বোধন করবেন বলেও ঘোষণা দিয়েছেন। আর উদ্বোধনের পরেই ইনশাআল্লাহ এদেশের কোটি কোটি মানুষ এই পদ্মা সেতুর সুফল ভোগ করবে।

আসলে প্রসঙ্গতঃ পদ্মা সেতু কেন দরকার ছিলো- ফেরিঘাটে এম্বুলেন্স আটকে মাকে হারানো সন্তান জানে পদ্মা সেতু কি? ২/৩ ঘন্টা দেরি হওয়াতে ইন্টারভিউ দিতে না পারা বেকার ছেলেটি জানে পদ্মা সেতু কি? কুয়াশার কারনে ফেরি বন্ধ হলে ফ্লাইট মিস করা রেমিটেন্স যোদ্ধা প্রবাসী ভাইয়েরা জানে পদ্মাসেতু কি? সারা বছর পরিচর্যার পরে ঘন্টার পর ঘন্টা ফেরিঘাটের গরমে থেকে বস্তায় পচা সবজিগুলো দেখা কৃষকটি বলতে পারবে পদ্মা সেতু কি? প্রচণ্ড ঝড়ে পদ্মায় ট্রলার সহ ডুবে যাওয়া হাজারো সন্তানকে খুজে না পাওয়া বাবা মা জানে পদ্মা সেতু কি? বুক ফাটা হাহাকার আর কান্নার পরিশেষ এর নাম স্বপ্নের পদ্মা সেতু ।

এই সেতু সাধারণ সেতু নয়, কারণ একজন নোবেল বিজয়ী সেতুর ঋণের টাকা আটকে দিয়েছিল। একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী এই সেতুর বিরোধীতা করেছিলেন। পদ্মা সেতু কখনোই একটি সাধারন সেতু ছিলোনা। যারা এই সরকারের বিরোধীতা করতে গিয়ে দেশদ্রোহী কর্মকাণ্ড করতেও দ্বিধাবোধ করেনি তাদের হটিয়ে পদ্মা সেতু তৈরি করা নদীর নিচে ৫০ তলা বাড়ির সমান পাইলিং করার চেয়েও বড় চ্যালেঞ্জ ছিলো। পদ্মার দুপারের মানুষ যারা সেই পথ ব্যবহার করে তারা জানে এই সেতুর প্রতিটি স্প্যান শত আবেগ আর শত গল্পের বুক চিরে দাঁড় করানো হয়েছে।

সম্প্রতি এক বিদেশ ফেরত প্রবাসীর লাশ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ফেরি বিলম্ব করায় ফেরিঘাটে অর্ধগলিত মরদেহটি দুর্গন্ধ ছড়ায় যা অত্যন্ত হৃদয় বিদারক ঘটনা। এমন হাজারো ঘটনার পরী সমাপ্তির নাম স্বপ্নের পদ্মা সেতু।

বাঙ্গালী জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা, বাঙ্গালী জাতির পিতা, বাঙ্গালী জাতির অবিস্মরণীয় ও অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা, ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার, বিশ্ব মানবতার মা বঙ্গরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের মানুষদের এ ধরনের লাখো কোটি মানুষের চোখের ভাষা আর হৃদয় নিংড়ানো না বলা কথা গুলোর ভাষা সেইসাথে হাহাকার ও ভোগান্তির বিষয়টি নিজেই উপলব্ধি করেছিলেন বলেই আজ স্বপ্নের দুয়ার পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব হয়েছে।

পদ্মা সেতু একটি স্বপ্ন, একটি স্বাধীন দেশের স্বনির্ভরতার চ্যালেঞ্জ। এ সেতু নির্মাণের সময়, অর্থ, ব্যয় ইত্যাদি নিয়ে অনেক কথা আছে। তার অধিকাংশ যদি সত্যও হয়, এর বাস্তবায়ন তথা সেতু স্থাপন করার মধ্য দিয়ে সব জল্পনা-কল্পনা, গুজব ম্লান। বাংলাদেশে প্রচলিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও অবকাঠামো নির্মাণের ধারায় বারবার সময় বৃদ্ধি ও অর্থের পরিমাণ বাড়ানো কিংবা অপচয় অনুচিত হলেও তা দীর্ঘদিনের প্রচলন। এটির অবসান সময়ের প্রয়োজন। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশ যে সাফল্যের সঙ্গে এই প্রথম এত বড় কর্ম সম্পাদন করল, তাতে অন্য কোনো কথা আর গুরুত্ব পায় না। সেতু ভিন্ন বাকি সব যেন চাপা পড়ে যায়! পদ্মা সেতুই যেন মুখ্য আলোচ্য ও বিবেচ্য বিষয়।

বিশালত্বের দিক থেকে অর্থায়ন ও কর্মসম্পাদন যে এককভাবে সম্পন্ন করা যায়, তা এতদিন ছিল ভাবনার অতীত। আজ তা বর্তমান ও বাস্তবিক। এ সেতু আমাদের সেতু। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ এ সেতুর মালিক। কারণ এর অর্থায়ন করেছে এ দেশের সর্বস্তরের মানুষ। সুতরাং এ সেতু বাস্তবায়নে সক্ষমতা এবং স্বপ্ন ও চ্যালেঞ্জের মধ্যকার যে মজবুত সেতুবন্ধ রচিত হয়েছে তার গৌরব ও মালিকানা নিতান্তই এ দেশের মানুষের। এই অসম্ভবকে সম্ভব করার জন্য বিশ্বব্যাংকের মতো প্রকাণ্ড প্রতিষ্ঠানকে চ্যালেঞ্জ করে, তাদের সব দাবি অগ্রাহ্য ও পরাজিত করে বাংলাদেশের মান সমুন্নত ও উচ্চাসীন করার অনন্য কৃতিত্ব বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার। ২০১২ সালে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংক যখন পদ্মা সেতু প্রকল্পে ঋণ চুক্তি বাতিল করে তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ়চিত্তে ২০১৩ সালের মে মাসে নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণের সংকল্প ব্যক্ত করেছিলেন। দেশবাসীও তার সঙ্গে একাত্ম হয়ে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সামর্থ্য অনুযায়ী এগিয়ে এসেছে। অবশেষে সবার সম্মিলিত প্রয়াসে পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে। অচিরেই বাংলাদেশের মানুষ এর সুফল পেতে শুরু করবে।

দেশের দ্বিতীয় দীর্ঘতম নদী পদ্মার ওপর নির্মিত ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক ও রেল সেতু দেশের প্রধানতম এবং পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম সেতু। এ সেতু দক্ষিণ এশিয়ার জন্য এক বিস্ময়। আশা করা যাচ্ছে পূর্ণোদ্যমে কার্যক্রম শুরু হলে সেতুটির ওপর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৭৫ হাজার যানবাহন চলাচল করবে। সেতুটির মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর জেলাসহ দক্ষিণাঞ্চল প্রত্যক্ষভাবে সংযুক্ত হবে এবং দেশে

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031