৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

অজ্ঞান নুরজাহানের সম্পদ ভুয়া জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরি করে দলিল করে নিল ছোট ছেলে

অভিযোগ
প্রকাশিত আগস্ট ৮, ২০২০
অজ্ঞান নুরজাহানের সম্পদ ভুয়া জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরি করে দলিল করে নিল ছোট ছেলে

শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধিঃ- 
অনুসন্ধান করে ও ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে জানাযায়: শরীয়তপুর জেলার সদর উপজেলার চররোসুন্দী গ্রামের ১০৪ নং মৌজার বাসিন্দা বৃদ্ধ নুরজাহান বেগমের জায়গাজমি অবৈধভাবে দলিল করে নিয়েছে তারই ছোট ছেলে নুরুল আলম হাওলাদার ।

 

নুরুল আলম হাওলাদার শরীয়তপুর জেলার সদর উপজেলার চররোসুন্দী গ্রামের মৃত লালচান হাওলাদারের ছেলে। নুর জাহান বেগমের দুই ছেলে, বড় ছেলের নাম খলীলুর রহমান হাওলাদার ।

 

গতগত ১৯ ফেব্রুয়ারী ভুয়া জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরি করে বসত ভিটা অবৈধভাবে দলিল করে নিয়েছে দলিল নম্বার হল ৭৮৮/২০২০। এতদিন কিছু না বললেও সম্প্রতি খলীলুর রহমান হাওলাদারের ছেলেমেয়েদের ঘর সরিয়ে নিতে চাপ প্রয়োগ কারনে বিষয়টি জানাজানি হয়। দলিলের সই মহর কপি তুলে তার থেকে জানাযায় নুরজাহানের জমি রেজিস্ট্রি করতে যেসব তথ্য প্রয়োজন ছিল সবই ভুয়া ও মিথ্যা দিয়ে জমি দলিল করেছে।

 

উক্ত জমি ছেড়ে দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করছে এবং এ নিয়ে বেশি ঝামেলা করলে অনেক সমস্যা হবে বলে হুশিয়ারি করে দিয়েছে। উক্ত জমি কেন অবৈধভাবে লিখে নিয়েছে তা বলার কারনে খলীলুর রহমানের ছেলেদের প্রান নাশের হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়াগেছে ।

 

খোজ নিয়ে আরো জানাযায় নুরজাহান বেগম গত তিন বছর ধরে পুরোপুরি সঙ্গাহীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে । সরে জমিনে পরিদশর্ণে গেলে নুরজাহানের হাড্ডী আর চামড়া ব্যাতিত কিছুই দেখা যায়নি তার শরীরে। নুর জাহান বেগম নিজে শিক্ষিত সে কোন দিন টিপ দিয়ে কোন কাজ করেননি । তার জাতীয় পরিচয় পত্রেও তার নিজ স্বাক্ষর রয়েছে ।

 

অথচ জমি দলিল করতে গিয়ে তার হাতের ছাপ ব্যাবহার করা হয়েছে । এখানেও সন্দেহ পোষন করা হয়েছে যেহেতু নুরজাহান বেগম তিন বছর যাবত জ্ঞানহীন ঘরে পড়া তাহলে কার টিপে জমি দলিল হল । জমি রেজিস্ট্রি করতে জাতীয় পরিচয় পত্র প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে এবং সেটি না পেয়ে ভুয়া জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরি করে, জমি রেজিস্ট্রি করে নেয় । আসল পরিচয় পত্র থেকে জানা যায়। জমি রেজিস্ট্রি করতে যে আইডি ব্যবহার করা হয়েছে তার সাথে আসলের কোন মিল নেই।

 

এমনকি নুরজাহানের মায়ের নাম কাকলি বিবি এর স্থলে লেখা হয়েছে হাজেরা বেগম, তার স্বামীর নামের স্থলেও যা লেখা হয়েছে তাও সঠিক নয় ।

 

ভুয়া জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বার হল ১৯৩০৮৬১৬৯৭৬১০৮৪৫৬, আর জন্ম তারিখ দেয়া হয়েছে ১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৩০ যা সম্পূন ই ভুয়া।

 

প্রকৃত পক্ষে নুরজাহান বেগমের জন্ম তারিখ ও সাল ঐটা নয় বরং সাত বছরের ব্যবধান।আসল জাতীয় পরিচয় দেখতে চাইলে খলীলুর রহমান হাওলাদের ছেলেরা সঠিক জাতীয় পরিচয়পত্র ও সঠিক জন্ম সনদ দেখিয়ে বলেন এই গুলি আমাদের কাছে অনেক আগে থেকেই সংরক্ষিত ছিল আমাদের কাছে কারন তিনি নুরজাহান বেগম তার সারাজীবন আমাদের ঘরেই কাটিয়েছেন ।

 

তার ছোটছেলে নুরআলম সারাজীবন ঢাকাতে ঠেলা গাড়ী চালিয়েছে কয়েক বছর আগে তিনি দেশে এসেছেন। কৌশলগত কারনে এখানে সঠিকটি উল্লেখ করা হল না ।

 

নুরআলম হাওলাদার সম্পর্কে ভুক্তভোগিরা বলেন তিনি আমাদের একমাত্র চাচা । আমার চাচা খুবই নরম ও ভাল মনের মানুষ তিনি কখনোই জায়গা জমির প্রতি লোভ করেননি। কিন্তু তার বাল্য বন্ধু মজিবর হাওলাদারের কুপরামর্শে এই ধরনের কাজ করতে সাহস পেয়েছেন ।

 

অনুসন্ধান করে আরো জানাগেছে নুরুল আলমকে জাতীয় পরিচয়পত্র নকল করার কাজে সহযোগীতা করেছেন তারই পুত্র বধু চররোসুন্দী সরকারি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা আয়েশা আক্তার এবং জ্ঞানহীন নুরজাহান এর পরিচিতি দিয়েছেন নুর আলমের বাল্য বন্ধু মজিবর হাওলাদার
এবং দলিল লেখার কাজ করেছেন হযরত আলী ঢালী, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তিনি মোটা ‍অংকের টাকার বিনিময়ে ভুয়া জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে দলিল লিখেছেন, এই বার্ধ্যক্য ব্যাক্তির ঘরে গিয়ে টিপ সই আনতে তিনিই ভুমিকা রেখেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

 

 

নুরুল আলম হাওলাদারের কাছে গ্রাম্য শালিশ কারীদের মধ্যে দুজনকে পাঠানো হলে তিনি তাদের কাছে জাতীয় পরিচয় পত্রের প্রতারনার কথা স্বীকার করেন । এবং বলেন জাতীয়পরিচয় পত্র ছাড়া জমি রেজিস্ট্রি করা সম্ভব ছিল না তাই নকল করে বানিয়ে নিয়েছি তাতে কি হয়েছে । জমি তো রেজিট্রি হয়েগেছে।

 

নুরুল আলম হাওলাদারের কাছে জানতে চাওয়া হয় কেন জ্ঞানহীন মানুষের কাছ থেকে জমি রেজিস্ট্রি করে নিলেন। তিনি তার উত্তরে বলেন মা সুস্থ থাকতে ছোট বেলায় আমাকে জমি দিতে চেয়েছিল তাই নিয়েছি এবং জাতীয পরিচয়পত্র নকল তৈরি করা ছাড়া জমি রেজিস্ট্রি করা যায় না তাই করেছি তাতে কি হয়েছে জমিতো রেজিস্ট্রি হয়ে গেছে । পারলে তারা জমি ছুটিয়ে যেন নেয়।

 

‘‘সাংবাদিকদের জাতীয় পরিচয় পত্র জালিয়াতির অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন যে আমাদের স্থানীয় চেয়ারম্যান এর নির্দেশে নকল করেছি তিনি সবই জানেন ।

 

দলিল লেখক হযরত আলীর কাছে ভুয়া জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে কিভাবে দলিল লিখলেন জানতে চাইলে তিনি অকপটে স্বীকার করেন যে আমাদের চেয়ারম্যান প্রত্যায়ন পত্র দিয়েছে । এরপর তাকে জ্ঞানহীন বৃদ্ধ মহিলার টিপ সই কিভাবে নিলেন তিনি তার সদত্তোর দিতে পারেন নি।

 

দলিল লেখক হযরত আলী এই প্রতিবেদককে অনুরোধ করে বলেন যে, আমার নামটি প্রতিকায় দিয়েন না আমার লাইসেন্সটি বাতিল হয়ে যাবে।

 

আমি অসুস্থ মানুষ পরিবার নিয়ে কিভাবে চলব দয়া করে আমার নাম লিখবেন না । আমি এত কিছু বুঝি নাই। তার বিরুদ্ধে যাতে মামলা না হয়। সেই অনুরোধ করতে গিয়ে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন ।

 

মজিবুর হাওলাদারের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি এর কিছুই জানিনা।

 

অথচ স্বাক্ষী হিসেবে প্রথমেই তার নাম রয়েছে
এদিকে মজিবর হাওলাদারের নাম দলিলে স্বা্ক্ষী হিসেবে এক নাম্বারে থাকায় বিভিন্ন সময় সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করার কারনে তার বখাটে ছেলেরা ক্ষিপ্ত হয়ে ভুক্তভোগি পরিবারকে প্রান নাশের হুমকিসহ কুপিয়ে দুনিয়া ছাড়া করার ভয় ভীতি প্রদান অব্যহত রেখেছে ।

 

জাতীয় পরিচয় পত্র নকল করার মুল হোতা হিসেবে যার ব্যাপারে অভিযোগ রয়েছে তিনি হলেন মধ্য চররোসুন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা আয়েশা আক্তার তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার সাথে সাথে ফোন বন্ধ করে দেন।

 

এই জালিয়াতির বিষয় উল্লেখ করে শরীয়তপুর জেলার পুলিশ সুপার বরাবর একটি অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

 

শরীয়তপুর সদর ভুমি কমিশনার বরাবরেও অভিযোগ এর একটি কপি পাওয়া গেছে।

 

এবং জাতীয় পরিচয়পত্র নকল তৈরি করার কারনে ও জাল দলিল করার কারনে পৃথক দুটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ।

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031