১৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

ভৈরবে ভুল চিকিৎসায় যুবক নিহতের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

অভিযোগ
প্রকাশিত জুলাই ৭, ২০১৯
ভৈরবে ভুল চিকিৎসায় যুবক নিহতের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

 

মুহাম্মদ কাইসার হামিদ, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ভুল চিকিৎসার শিকার হয়ে জুয়েল নামে এক যুবক নিহতের প্রতিবাদে ও বিচারের দাবীতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে স্থানীয়রা। আজ রোববার (৭জুলাই) সকালে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে মেঘনা ফেরিঘাট এলাকা থেকে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পৌর শহরের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুর্জয় মোড়ে অবস্থান নেয় তারা। ফলে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এসময় তারা ব্যানার, ফেস্টুন ও পে-কার্ড হাতে নিয়ে ঘন্টাব্যপী বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করে। মানববন্ধনে একাত্বতা ঘোষণা করেন ভৈরব পৌর মেয়র বীরমুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফখরুল আলম আক্কাছ। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আল মামুন, পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আতিক আহমেদ সৌরভ ও যুবলীগ সভাপতি ইমরান হোসেন ইমন।

এসময় বক্তারা ভুল চিকিৎসায় জুয়েল নিহতের ঘটনায় অভিযুক্ত চিকিৎসক কামরুজ্জামানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ অবিলম্বে মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারের দাবী জানান। এছাড়াও ভুল চিকিৎসায় এবং দায়িত্বে অবহেলার কারণে আর যেন কোনো জুয়েলের অকালে মৃত্যু না হয়। এছাড়াও দ্রুত সময়ে দাবী বাস্তবায়ন না হলে সড়ক, রেল ও নৌ পথে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন বলে হুশিয়ারী দেন তারা। এছাড়াও বক্তারা আরও বলেন, শহরের ব্যাঙের ছাতার মতো একের পর এক প্রাইভেট হাসপাতাল গড়ে ওঠেছে। এসব হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার নামে অপচিকিৎসা চলছে। ফলে একের পর এক প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটছে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন টেস্টের নামে তারা অসহায় মানুষের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তাদের লাগাম টেনে ধরতে হবে। নতুবা তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবে।
জানাগেছে, শহরের চন্ডিবের গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা জুয়েল। গত দু’বছরের বেশি সময় আগে দুর্ঘটনায় জুয়েলের এক হাতের হাড় ভেঙে যায়। ফলে অপারেশনের সময় তার হাতের ভেতরে প্লেট ঢুকানো হয়। গত বৃহস্পতিবার সে প্লেট খুলতে শহরের ট্রমা জেনারেল (প্রাইভেট) হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে হাসপাতালের ওটিতে (অপারেশন থিয়েটার) নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ঘন্টার পর ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও জুয়েলের জ্ঞান ফেরেনি। এতে স্বজনদের সন্দেহ হলে ওটিতে গিয়ে জুয়েলকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায় তারা।
এদিকে ভুল চিকিৎসার শিকার হয়ে জুয়েল নিহতের ঘটনায় গত শুক্রবার চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়। ফলে গত শনিবার সকালে শহরের ট্রমা জেনারেল (প্রাইভেট) হাসপাতাল সরেজমিনে তদন্তে আসেন কমিটির সদস্যরা। এছাড়াও এ ঘটনার পর থেকে হাসপাতালের সকল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়েছে। ফলে তালা ঝুলছে মূল ফটকে।

অন্যদিকে নিহত জুয়েলের বড় ভাই কামাল মিয়া বাদী হয়ে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ এনে ডা. কামরুজ্জামান আজাদকে প্রধান অভিযুক্ত করে ৪ জনের বিরুদ্ধে ভৈরব থানায় মামলা দায়ের করেছেন। ফলে পুলিশের হাতে আটক চিকিৎসক কামরুজ্জামান আজাদকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তাছাড়া গ্রেফতার এড়াতে মামলার অন্য আসামিরা গা ঢাকা দিয়েছে। এছাড়া ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দিদারুল আলম ও গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. হরিপদ দেবনাথ ওই ট্রমা জেনারেল (প্রা.) হাসপাতালে মালিক পক্ষের সদস্য। তারা দু’জনেই দুইদিন ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতার এড়াতে ডা. দিদারুল আলম ও ডা. হরিপদ দেবনাথ গা ঢাকা দিয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031