আব্দুল করিম,চট্রগ্রাম বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান :
আয় ছেলেরা, আয় মেয়েরা, ফুল তুলিতে যাই, ফুলের মালা গলায় দিয়ে, মামার বাড়ী যাই। ঝড়ের দিনে মামার দেশে, আম কুড়াতে সুখ, পাকা জামের মধুর রসে, রঙ্গিন করি মুখ…।পল্লীকবি জসীম উদ্দিনের ‘মামার বাড়ী’ কবিতার পংক্তিগুলো বাস্তব রুপ পেতে বাকি রয়েছে আর কয়েক মাস। তবে সুখের ঘ্রাণ বইতে শরু করেছে। গাছে গাছে ফুটছে আমের মুকুল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে এই মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ। বাতাসে মিশে সৃষ্টি করছে মৌ মৌ গন্ধ। যে গন্ধ মানুষের মনকে বিমোহিত করে। পাশাপাশি মধুমাসের আগমনী বার্তা শোনাচ্ছে আমের মুকুল।চট্টগ্রামের রাউজানে আম গাছে মৌ মৌ সুভাষ ছড়াচ্ছে মুকুল ঘ্রাণ। বসন্ত শুরুর সাথে সাথে উপজেলা জুড়ে আম গাছে এসেছে আমের মুকুল। গ্রামীণ জনপদে প্রাপ্ত বয়স্ক আম বৃক্ষ গুলো দেখলে সবার দৃষ্টি গাছের উপরি ভাগে চলে যায়। উপজেলা সদরের মুন্সিরঘাটার আমতলের ঐতিহাসিক আম গাছে মুকুলের পরশ চোখে পড়ার মতো। দৃষ্টিনন্দন মুকুলের উচ্ছাসে ডালপালা-এমনকি পাতা পর্ষন্ত দেখা যাচ্ছে না। গাছটির মূল দেখা গেলেও ডালপালা সেজেছে মুকুল আর মুকুলে। শীতের সকালে সূর্যের কিরণ আম মুকুলকে স্পর্শ করতেই বাড়তি সুন্দরতার প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠে।অপর দিকে রাউজানের সাংসদ এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী উপজেলার ছোট বড় তিন শতাধিক সড়কে ২৫ প্রজাতির আমের কলপ চারা রোপন করে রেকর্ড করেছিল দেশ ব্যাপী। এসব রোপিত আম গাছে কয়েক বছর ধরে আংশিক ফলন দিলেও এবছর পরিপূর্ণ ফলন আশা করছে এলাকার মানুষ। রোপিত প্রতিটি আম গাছে মুকুলে মুকুলে ভরপুর হয়ে আম ধরা শুরু করেছে।
সড়ক পথে সারি সারি ভাবে রোপিত আম বৃক্ষাদি সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা যায়, উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় সড়ক এলাকা ছাড়াও বাড়ীর আঙ্গিনায়, সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের আঙ্গিনায় দেখা মিলছে আমের মুকুল। প্রত্যেকটি এলাকা জুড়ে এখন সর্বত্র গাছে গাছে শুধু আমের মুকুল আর মুকুল। আম বাগানের সারি সারি গাছে শোভা পাচ্ছে কেবলই মুকুল। এ যেন হলুদ আর সবুজের মহামিলন। মুকুলে ছেয়ে আছে গাছের প্রতিটি ডালপালা।চারদিকে ছড়াচ্ছে সেই মুকুলের সুবাসিত পাগল করা ঘ্রাণ। বলাযায় মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত পুরো রাউজান উপজেলা। তবে আমের ফলন নির্ভর করছে আবহওয়ার ওপর। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন বাগান মালিকরা।
রাউজান উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, রাউজানে ছোট বড় প্রায় ৬৮টি অধিক ব্যক্তি মালিকানাধীন মিশ্র ফল বাগান রয়েছে। এসব বাগানেও এসেছে মুকুল। মুকুল আসার পূর্ব থেকে আমগাছ মালিকরা তাদের আম গাছের যত্ন নেয়ার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি গ্রহণ করে থাকেন। গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রতিটি আমগাছে এসেছে অধিক আমের মুকুল। এবছর কোন বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে রাউজানে ব্যাপক আমের ফলন হবে বলে আশা করছেন কৃষিবিদরা।