৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সিএএ-এনআরসি বিতর্কের মধ্যে এবার মাতৃভাষা দিবসের ঐক্যবার্তা

অভিযোগ
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২০
সিএএ-এনআরসি বিতর্কের মধ্যে এবার মাতৃভাষা দিবসের ঐক্যবার্তা

মনির সরকার :: আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে অভিনব পরিকল্পনা করেছে পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। তাদের বার্তা হল— বিভাজনের বিরুদ্ধে ভাষা মৈত্রী অনুষ্ঠান। এই কয়েকটি শব্দের মাধ্যমেই এই বছর মাতৃভাষা দিবস উদযাপনে একটি বিশেষ বার্তা দেয়া হচ্ছে। এই পোস্টার তৈরি করেছে ২১ ফেব্রুয়ারি উদযাপন কমিটি। 

 

 

ভারতজুড়ে সিএএ বিতর্ক, এনআরসি আতঙ্কের আবহে ২১ ফেব্রুয়ারিকে নতুন মাত্রায় বাঙালির সামনে তুলে ধরতে তৈরি হয়েছে এই কমিটি। গত ৮ ফেব্রুারি একটি সভা করে এই কমিটি তৈরি হয়েছে। ২০-২১ ফেব্রুয়ারি টানা দুদিনের অনুষ্ঠান সূচি তৈরি করা হয়েছে।

 

 

গত ২৩ বছর ধরে একাডেমির সামনে ছাতিমতলায় রাতভর একুশে পালন করে আসছে ভাষা ও চেতনা সমিতি। এ বছরে ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় শুরু হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। থাকবেন আসাম ও বাংলাদেশের শিল্পীরাও। হবে বাংলা ও বাঙালি বিষয়ক আলোচনা।

 

 

পশ্চিমবঙ্গ সরকার দেশপ্রিয় পার্কে ভাষা শহীদ স্মারক তৈরি করার পর থেকে পরপর কয়েক বছর সেখানেই অমর একুশে উদযাপিত হয়েছে। একইসঙ্গে বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়ামের সামনেও সরকার ও কলকাতা পৌরসভার উদ্যোগে ২১ ফেব্রুয়ারি উদযাপন করা হয়। কার্জন পার্কেও বাম আমলে তৈরি ভাষা শহীদ স্মারক সমিতির উদ্যোগে একুশে পালন করা হয়।

 

 

প্রবীণ বাম নেতা মনোজ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, প্রতি বছরই বহু মানুষ এই অনুষ্ঠানে আসেন। এই বছরও একইভাবে পালন করা হবে দিনটি। তাছাড়া কলকাতায় ‘আত্মজন’, হাওড়ার ‘আরম্ভ সালকিয়া’সহ বিভিন্ন সংগঠন ২১ ও ২২ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন অনুষ্ঠান করতে চলেছে।

 

তার প্রস্তুতি চলছে পুরো মাত্রায়। ২১ ফেব্রুয়ারি উদযাপন কমিটির তরফে সোমনাথ চক্রবর্তী বলেছেন, আমরা সম্প্রীতির ডাক দিয়েছি। কারণ রফিক, জব্বার, সালামরা শুধু বাংলা ভাষার জন্য প্রাণ দেননি।

 

তারা সব মানুষের মাতৃভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছেন। ভারত বহু ভাষা, বহু সংস্কৃতির দেশ। সেই বৈচিত্র রক্ষা করার জন্য দেশের প্রথম সারির ভাষাগুলো থেকে অন্তত একটি করে সঙ্গীত আমাদের দুদিনের অনুষ্ঠানে রাখার চেষ্টা করেছি।

 

 

সিএএ-র বিরোধিতায় ধারাবাহিকভাবে মিছিল-মিটিং ও অবস্থান কর্মসূচি নেয়া নাগরিক পঞ্জি বিরোধী যুক্ত মঞ্চের আহ্বায়ক প্রসেনজিৎ বসু বলেছেন, হিন্দু-মুসলমান পরিচয়ে নয়, বাংলা ভাষা হল বাঙালির বড় পরিচয়। এই ভাষা বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছে। এখন গেরুয়া শিবির এই ভাষার ঐক্যকে গুলিয়ে দিয়ে হিন্দু-মুসলমান পরিচয়কে সামনে নিয়ে আসতে চাইছে। তাই এই বছর ২১ ফেব্রুয়ারি পালনের বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে।

 

 

কলকাতায় ভিন্ন আঙ্গিকে ভাষা দিবস উদযাপনের পরিকল্পনা করেছে সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন। তার রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ কামারুজ্জামানের কথায়, বিভাজনের পরিবেশের মধ্যে দেশের নানা প্রান্তে বাঙালিদের বাংলদেশি তকমা দিয়ে নিগ্রহ করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গেও বিভাজনের পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে। এই পটভূমিতে ভাষার ঐক্য বিভাজনকে পরাস্ত করতে পারে।

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031