২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

ভালোবাসা দিবসে সিলেট পর্যটনে প্রকাশ্যে অনৈতিক কার্যকলাপ

অভিযোগ
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২০
ভালোবাসা দিবসে সিলেট পর্যটনে প্রকাশ্যে অনৈতিক কার্যকলাপ

এম আব্দুল করিম,সিলেট জেলা প্রতিনিধি ::

ভালোবাসা কি আর দিনক্ষণ দেখে হয়। অথবা ভালোবাসার জন্য কি আর নির্দিষ্ট দিনের দরকার আছে? প্রতিদিনই তো ভালোবাসা দিবস। আর এই দিবসে সিলেট নগরীর বিমান বন্দর এলাকায় অবস্থিত পর্যটন মোটেলে বিনোদনের নামে প্রকাশ্যে চলছে অশ্লিলতা।

 

বিনোদনের জন্য তৈরী হলেও এখানে চলছে অসামাজিক কার্যকলাপ। সর্বত্র অশ্লিলতার ছড়াছড়ি পার্কটিতে। বিনোদন বলতে কিছুই নেই।

 

প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই পার্কটিতে অসংখ্য প্রেমিক যুগলের ভীড়। ৩০ টাকার টিকেটে দর্শনার্থীরা ঢুকে ঘন্টার পর ঘন্টা যে কর্মকান্ড করে সেটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন।

 

এদের মধ্যে অধিকাংশই স্কুল-কলেজ পড়ুয়া কিশোর-কিশোরী বা যুবক-যুবতী। ভাবতে অবাক লাগে নগরীর মাঝে এমন একটি অসামাজিক কাজের মিলন মেলাটি দিনের পর দিন চালিয়ে যাচ্ছে তাদের অবৈধ কার্যকলাপ।

 

পার্কটিতে ঢুকার প্রবেশ পথে রয়েছে সতর্কবানী দর্শনার্থীদের উদ্দেশ্য করেঃ “দয়া করে শালিনতা বজায় রাখুন এবং কেউ গাছ থেকে ফুল ছিঁড়বেন না, কেউ অভদ্র বা উশৃঙ্খল আচরন করবেন না, কেউ গা ঘেষাঘেষি করে বসবেন না, কেউ এমন কোন অঙ্গভঙ্গি বা আচরণ করবেন না যা দেখে অন্যদের কাছে দৃষ্টিকটু মনে হয় বা খারাপ লাগে।

 

আসুন আমরা সবাই মিলে একটি সুন্দর এবং সুস্থ্য বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তুলি।” কিন্তু ভিতরে এর কিছই মিল নেই।

 

এর ভিতরে রয়েছে একটি ফাষ্ট ফুডের দোকান, চারটি ছাতা চেয়ার আর অসংখ্য ঝাউগাছের আড়ালে বেশ কিছু পাকা বসার বেঞ্চ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই স্থানটি দর্শনার্থীদের কাছে বিনোদনের আকর্ষনীয় স্থান হিসেবে পরিচিতি পাওয়ায় দিন দিন এর দর্শনার্থী সংখ্যাও বাড়তে থাকে।

 

আর এই সুযোগে অধিক আয়ের লক্ষ্যে বর্তমানে পার্কটির মালিকপক্ষ এখানে প্রেমিক যুগলদের সুযোগ করে দিয়েছেন অশ্লিলতার।

 

পার্কটিতে দর্শকদের উল্লেখিত সতর্কবানী থাকলেও কার্যত এই নির্দেশনা লোক দেখানো। দর্শনার্থী হিসেবে পার্কটি ঘুরে পাওয়া চিত্রে দেখা গেছে, পুরো পার্কটিতে অশ্লিলতার অবাধ ছড়াছড়ি।

 

পতিতালয় বললেও কম বলা হবে। পার্কটিতে ঘুরে যাওয়া নগরীর এক কলেজ শিক্ষকের মন্তব্য, পতিতালয়ে নিরবে-নিভৃতে যৌন কাজ চলে । আর এখানে সেটা প্রকাশ্যে।

 

সুস্থ্য কোন মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে সেখানে ঘুরার কোন অবকাশ নেই। প্রকাশ্যে জড়িয়ে ধরে চুমু খাওয়া, ঘন্টার পর ঘন্টা বুকে জড়িয়ে বসে থাকা, ছাতা মেলে সেটার আড়ালে আরো কতকি সূড়সূড়ি।

 

চোঁখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। আর এই অবাধ মেলামেলার স্থানটিকে বেছে নিয়েছে নগরীসহ জেলার বিভিন্ন স্থানের স্কুল-কলেজ পড়ুয়া বা পরকিয়ায় আসক্ত কোন নারী বা পুরুষ।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দায়িত্বশীল সুত্র জানায়, মোটামুটি জেলার সর্বত্র পর্যটন কর্পোরেশন আলাদা একটা পরিচিতি আছে। ফলে সেখানে কোন ভদ্র মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে যায় না।

 

আর এই সুযোগে প্রতিদিন স্কুল-কলেজ ফাঁকি দিয়ে বা তরুণী, গৃহবধূরা কাজের বাহানা দিয়ে অসামাজিক কাজে লিপ্ত হতে চলে আসে এই পার্কে। দিনভর চলে তাদের উচছৃঙ্খলতা।

 

কোন নিষেধাজ্ঞা নেই অশ্লিল কাজে। প্রতিদিন যখন এখানে এই অসামাজিক কার্যকলাপ চলছে অবাধে, সেখানে নগরবাসী সচেতন মানুষেরও যেন কোন দায়বদ্ধতা নেই।

 

অপ্রয়োজনে অসময়ে অপ্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সমাজের বিভিন্ন দায়িত্বশীল তথাকথিত সমাজপতিরা নিজেদের উপস্থিতি জানান দিতে ব্যস্ত থাকলেও প্রকাশ্যে দিবালোকে এভাবে অসামাজিক যৌনতায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া কিশোর-কিশোরী বা তরুণ-তরুণীদের সামাজিক অবক্ষয় থেকে মুক্ত করতে এগিয়ে আসছে না কেউ।

 

পাশাপাশি প্রতিটি সচেতন পরিবারের অভিভাবক বা দায়িত্বশীল লোকদের কাছে জিজ্ঞাসা আপনারা কি খোঁজ রাখেন কোথায় যাচ্ছে আপনার পুত্র-কন্যা বা ভাই-বোন-ভাবী। সামাজিক এই অবক্ষয় রোধ করতে প্রশাসনের দোষ দিলেই কি পার পাওয়া যাবে এই দায়মুক্তি থেকে।

 

তাই সচেতন মানুষের দাবী দ্রুত এই অশ্লিল কার্যকলাপ বন্ধ না করলে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত অন্ধকার পথে চলে যাবে।

 

এ বিষয়ে পার্ক কর্তৃপক্ষের বক্তব্য নেয়ার জন্য একাধিক বার মোবাইল ফোনে কল দিলেও রিসিভ করেনি। সাধারন মানুষ এমন পরিস্থিতিতে লজ্জায় পড়ে যান। প্রশাসন অনেকবারই এসব পার্কের বিষয়ে সতর্কতা দিয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media
April 2024
T W T F S S M
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30