বিশ্বভারতী যাওয়ার জন্য হেলিকপ্টার পাচ্ছেন রাজ্যপাল
অনলাইন ডেস্ক : আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বাজেট পেশ করবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। সেই বাজেট অধিবেশনের সূচনা ভাষণ দেবেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। সাম্প্রতিক অতীতে রাজ্য সরকার এবং রাজভবনের যে সম্পর্ক বারবার প্রকাশ্যে চলে এসেছে, তাতে বাজেট অধিবেশনের দিন পশ্চিমবঙ্গবাসী নতুন কোনো নাটক দেখতে পাবেন কি না, তা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা।
তবে বাজেট অধিবেশনের আগেই সৌজন্যের সুবাতাস বইতে শুরু করেছে রাজ্য রাজনীতিতে। রাজ্যপাল ধনখড়কে হেলিকপ্টার দেয়ার কথা জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। বাজেটের ঠিক আগের দিন, অর্থাৎ ৬ ফেব্রুয়ারি বিশ্বভারতীতে তার এক অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা। সেই অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য হেলিকপ্টার দেওয়া হবে তাকে। মাস কয়েক আগে মুর্শিাদাবাদ জেলা সফরে যাওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে হেলিকপ্টার চেয়েছিলেন রাজ্যপাল। তবে রাজভবনের অভিযোগ ছিল, জেলা সফরের নির্ধারিত দিন পেরিয়ে গেলেও সেই চিঠির উত্তর দেয়নি নবান্ন। বাধ্য হয়ে হেলিকপ্টার না পেয়ে সড়কপথেই মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান এবং বীরভূম সফরে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তার জন্য একাধিকবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন তিনি।
তবে এবার একেবারেই অন্যরকম ছবি। ৬ ফেব্রুয়ারি বিশ্বভারতীর অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা রাজ্যপালের। ওই দিন শান্তিনিকেতনে যাওয়ার জন্য রাজভবনের তরফে রাজ্যপালের কাছে হেলিকপ্টার চাওয়া হয়। নবান্ন সূত্রে খবর, ওই দিন শান্তিনিকেতন যাওয়ার জন্য হেলিকপ্টার পাবেন তিনি। এবার কেন রাজপালকে হেলিকপ্টার দেয়ার সিদ্ধান্ত নিল মমতা সরকার?
রাজনৈতিক মহলের মতে, আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্য বিধানসভায় শুরু হবে বাজেট অধিবেশন। তাতে প্রারম্ভিক ভাষণ দেবেন রাজ্যপাল। এর ঠিক আগের দিন রাজ্যপালের বিশ্বভারতীতে যাওয়ার কথা বলেই হয়তো তাকে হেলিকপ্টার দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নিয়ে শিলিগুড়িতে বৈঠক ডেকেছিলেন জগদীপ ধনখড়। ওই বৈঠকে যোগ দেননি জেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা বা শাসক দলের কোনো প্রতিনিধি। সেই থেকেই রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্ঘাত।
তারপর জেলা সফরে যাওয়ার জন্য হেলিকপ্টার চেয়েও পাননি রাজ্যপাল। একের পর এক ঘটনায় ক্রমেই প্রকট হয়েছে দুপক্ষের মনোমালিন্য। শিক্ষাক্ষেত্রেও রাজ্যপালের ক্ষমতা খর্ব করতে বিধানসভায় বিল পাস করিয়েছে তৃণমূল সরকার। কলকাতা এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্যপাল তথা আচার্যকে। তাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোনো প্রতিক্রিয়া না পেয়ে আরও ক্ষুব্ধ হন রাজ্যপাল।
তবে ২৬ জানুয়ারি সাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান থেকে রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্কের মোড় ঘোরে। রাজভবনে চা-চক্রের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে পরপর দুদিন বৈঠক করেন তৃণমূলের মহাসচিব তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও।