২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

জাতির জনকের জন্ম শতবর্ষ উদযাপন ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে ‘সেই মাহেন্দ্রক্ষণ’ গণনা শুরু

অভিযোগ
প্রকাশিত জানুয়ারি ১০, ২০২০
জাতির জনকের জন্ম শতবর্ষ উদযাপন ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে ‘সেই মাহেন্দ্রক্ষণ’ গণনা শুরু

স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর নেতা-কর্মীদের সান্নিধ্যে কান্নায় ভেঙে পড়েন আবেগ-আপ্লুত জাতির পিতা- ছবি সংগৃহিত

 

অভিযোগ প্রতিবেদক: হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ। ১৯৭২ সালের এই দিনে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি পাকিস্তানের কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠ থেকে মুক্তি লাভ করে তাঁর স্বপ্নের স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশে ফিরে আসেন। দিনটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। দিনটি এবার আরও স্মরণীয় হতে যাচ্ছে আগামী ১৭ই মার্চ জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ উদযাপনের ক্ষণগণনা শুরুর কারণে।

 

স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর এক সমাবেশের প্রাককালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান- ছবি সংগৃহিত

 

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ওই ক্ষণ গণনা শুরু হবে। এ দিকে জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে সরকারের পাশাপাশি দলীয়ভাবেও কর্মসূচি নিয়েছে আওয়ামী লীগ। জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর উদযাপনের ক্ষণগণনা কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারাও অংশগ্রহণ করবে। এ ছাড়া ব্যাপক কর্মসূচি দিয়েছে দলটি।

 

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মগ্রহণের শততম বছর পূর্ণ হবে। বাংলাদেশ ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই জন্ম শতবর্ষ উদযাপন করবে। যার ক্ষণগণতা শুরু হতে যাচ্ছে শুক্রবার।

 

নেতা-কর্মীদের নিয়ে বিশেষ বহরে জনতার মাঝে জাতির পিতা- ছবি সংগৃহিত

 

জাতির পিতার জন্ম শত বর্ষের ক্ষণ গননার জন্য ১০ জানুয়ারি বেছে নেয়ার কারণ এই দিনটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৭২ সালের এদিন জাতির এই অবিসংবাদিত নেতা সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তন করেন। এর আগে বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করে। এর পর এই দিনেই মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগারে থেকে মুক্ত-স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসার মাধ্যমে সে বিজয় পূর্ণতা লাভ করে। এই দিন স্বদেশের মাটি ছুঁয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসের নির্মাতা শিশুর মতো আবেগে আকুল হন জাতির পিতা।

 

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কমিটি সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয়ভাবে শুক্রবার বিকেলে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে জাতির পিতার জন্ম শত বর্ষের ক্ষণগণনার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। এরপর প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও সকল পাবলিক প্লেসে একইসঙ্গে কাউন্টডাউন শুরু হবে। জানা গেছে, শুক্রবার সারা দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের ২৮টি পয়েন্টে, বিভাগীয় শহরগুলো, ৫৩ জেলা ও দুই উপজেলা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানীতে মোট ৮৩টি পয়েন্টে কাউন্টডাউন ঘড়ি বসানো হবে।

 

স্বাধীন মাতৃভূমির বুকে মহান নেতাকে অভ্যর্থনা প্রদানকালে লাখো জনতার ঢল- ছবি সংগৃহিত

 

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী জাতীয় উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ড.কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে লন্ডন ও নয়াদিল্লি হয়ে ১৯৭২ সালের এই দিনে স্বাধীন স্বদেশের বুকে ফিরে আসেন। যেহেতু ১০ জানুয়ারি ঐতিহাসিক দিন, তাই বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর কাউন্টডাউন এই ঐতিহাসিক দিনেই শুরু হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল বিকেলে মুজিববর্ষের কাউন্টডাউন অনুষ্ঠানটির উদ্বোধন করবেন।

 

জানা গেছে, ক্ষণ গণনার শিডিউল অনুযায়ী, শুক্রবার বিকেল ৩টায় অতিথিরা আসন অলঙ্কিত করবেন। বিকেল সাড়ে ৪টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠান স্থলে আসবেন। বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রতীকী বিমান (c-130j) অবতরণ করবে। পরে বিকেলে পৌনে ৫টায় ট্যাক্সি করে টারমাক এলাকায় পৌঁছানোর পর দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে ২১বার তোপধ্বনি দেয়া হবে। বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে বিমানের দরজা খোলা হলে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীসহ ১৫০ জন স্বাগত জানানোর জন্য প্রস্তুত থাকবে। এ সময় লেজার লাইটের মাধ্যমে দরজার কাছে আলোকিত করা হবে এবং আলোটি ধীরে ধীরে সিড়ি দিয়ে নেমে লাল গালিচার মাথায় এসে থেমে যাবে। এ আলোই আমাদের বঙ্গবন্ধু। যে আমাদের আলোকবর্তিতা হয়ে এসেছিলেন এটা তারই প্রতিপলন। বিকেল ৫টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য রাখবেন এবং মুজিববর্ষের লোগোর উন্মোচন ও ক্ষণ গণনা শুরু করবেন।

 

‘তোমার নেতা আমার নেতা…শেখ মুজিব, শেখ মুজিব’ এমনই স্লোগানে জনতার ভালবাসায় সিক্ত বঙ্গবন্ধু- ছবি সংগৃহিত

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও প্রধান সমন্বয়ক প্রধানমন্ত্রীর হাতে মুজিব বর্ষের লোগো তুলে দেবেন, যা তিনি উন্মোচন করবেন। লোগো উন্মোচনের পর প্রধানমন্ত্রী সুইচ টিপে ক্ষণ গণনার উদ্বোধন করবেন, যা সারা দেশে একযোগে চালু হবে।

 

তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে এই কর্মসূচি স্বশস্ত্র বাহিনী বিভাগের ব্যবস্থাপনায় এবং প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর, সংস্থার সহায়তায় বাস্তবায়িত হবে। কর্মসূচি বাস্তবায়নে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের জাতীয় কমিটি এবং জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সমন্বয় ও তত্ত্বাবধান করছে।

 

মানুষের ভালবাসায় আবেগ-আপ্লুত বাঙালি জাতির মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব- ছবি সংগৃহিত

 

এ দিকে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- সকাল সাড়ে ৬টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবন ও সারাদেশে সংগঠনের সকল কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল ৭টায় ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন। দুপুর ৩টায় জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে ক্ষণগণনা কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণ।

 

এছাড়াও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস যথাযথ মর্যাদায় পালনের জন্য বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং সংগঠনের সকল সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন কেন্দ্রীয় কমিটির অনুরূপ কর্মসূচির আয়োজন করবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলের এক বিবৃতিতে জাতির পিতার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের সকল কর্মসূচি যথাযথভাবে পালনের জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীসহ সংগঠনের সকল সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031