২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

চট্টগ্রামে বন্দরে এল প্রায় ২ হাজার টন পেঁয়াজ

অভিযোগ
প্রকাশিত নভেম্বর ২৬, ২০১৯
চট্টগ্রামে বন্দরে এল প্রায় ২ হাজার টন পেঁয়াজ

অভিযোগ ডেস্ক : সমুদ্রপথে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দুটি বড় ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর আমদানি করা পেঁয়াজের চালান বন্দরে পৌঁছেছে। এই দুই গ্রুপ হলো ঢাকার মেঘনা গ্রুপ ও চট্টগ্রামের বিএসএম গ্রুপ। বিএসএম গ্রুপ তিন জাহাজে ৩৯ কনটেইনার পেঁয়াজ আমদানি করেছে। জাহাজ থেকে খালাসও শুরু হয়েছে। মেঘনা গ্রুপ এক জাহাজে এনেছে ৩০ কনটেইনার পেঁয়াজ। এই দুই প্রতিষ্ঠানের আমদানি করা পেঁয়াজের পরিমাণ প্রায় ২ হাজার টন।

 

মেঘনা গ্রুপের পেঁয়াজবাহী ‘ওইএল স্ট্রেট’ জাহাজটি আজ মঙ্গলবার রাতে তুরস্ক থেকে বন্দরের বহির্নোঙরে এসে পৌঁছেছে। জাহাজটিতে ৩০ কনটেইনারে প্রায় সাড়ে ৮০০ টন পেঁয়াজ রয়েছে। এই গ্রুপ প্রথমবার সমুদ্রপথে পেঁয়াজ আমদানি করেছে। এর আগে আজ ও গত রোববার দুই দিনে আকাশপথে গ্রুপটি ২০ টন পেঁয়াজ আমদানি করে টিসিবিকে দিয়েছে।

 

মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রীর অনুরোধে প্রথমবার পেঁয়াজ আমদানি করেছি। এই পেঁয়াজ সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবিকে আমদানিমূল্যে হস্তান্তর করব। তিনি আরও বলেন, পেঁয়াজের ব্যবসা নেই আমাদের। এরপরও বাজার যাতে স্থিতিশীল থাকে, সে জন্য আমদানি করেছি।

 

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চীন থেকে বিএসএম গ্রুপের আমদানি করা পেঁয়াজের একটি চালান এসেছে ‘এমসিসি টাইপে’ জাহাজে। কনটেইনারবাহী জাহাজটি গতকাল সোমবার বন্দর জেটিতে ভিড়েছে। এই জাহাজে থাকা ২০ কনটেইনার পেঁয়াজ খালাসও শুরু হয়েছে। এ ছাড়া বহির্নোঙরে থাকা এমভি টিজনি ও এমভি এলা জাহাজে রয়েছে আরও ১৯ কনটেইনার পেঁয়াজ। এই দুই জাহাজের চালান এসেছে মিসর থেকে। সব মিলিয়ে গ্রুপটি ১ হাজার ১০০ টন পেঁয়াজ আমদানি করেছে। ভোগ্যপণ্য আমদানির শীর্ষ ক্রমতালিকায় পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে গ্রুপটি।

 

বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী বলেন, এর আগে কখনো পেঁয়াজ আমদানি করিনি। সরকারের অনুরোধে বাজারে সরবরাহ বাড়াতে প্রথমবার পেঁয়াজ আমদানি করেছি। ছোট-বড় সব ব্যবসায়ী যদি আমদানিতে উৎসাহী হয়, তাহলে বাজার স্থিতিশীল হতে বাধ্য।

 

বন্দর সূত্র জানায়, বন্দরে এখন প্রতিদিনই পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। এই দুই গ্রুপ ছাড়াও ছোট ব্যবসায়ীদের ৩৫ কনটেইনার পেঁয়াজ রয়েছে পাঁচটি জাহাজে। এগুলো পালাক্রমে বন্দর জেটিতে ভিড়ানো হবে। কয়েক দিনের মধ্যে এসব জাহাজে আসা পেঁয়াজের চালান খালাস হবে। সব মিলিয়ে ১০৪টি কনটেইনারে প্রায় ৩ হাজার টনের মতো পেঁয়াজ খালাস হবে কয়েক দিনের মধ্যে।

 

গত অর্থবছরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রতিদিন গড়ে পেঁয়াজের সরবরাহ ছিল ৭ হাজার ৮৯২ টন। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, প্রতিদিন চাহিদা ৬ হাজার টনের মতো। তবে বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়ায় চাহিদা কমেছে। এরপরও দিনে ৩ হাজার টনের মতো চাহিদা রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ৩ হাজার টন পেঁয়াজ সরবরাহ হলে বাজার স্থিতিশীল হবে।

 

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে প্রায় ২ লাখ টনের বেশি পেঁয়াজ আমদানির জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্র থেকে অনুমতি নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে ঋণপত্র খোলা হয়েছে ৭৯ হাজার টনের।

 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের উপপরিচালক আসাদুজ্জামান বুলবুল বলেন, এ পর্যন্ত বন্দর দিয়ে ৮ হাজার ৩৪৩ টন পেঁয়াজ খালাস হয়েছে।

 

টেকনাফে এল ৫৪৮ টন পেঁয়াজ

আজ আটজন ব্যবসায়ী ১১টি ট্রলারে করে ৫৪৮ টন পেঁয়াজ কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরের জেটিতে এনেছেন। তবে খালাসের অপেক্ষায় স্থলবন্দরের জেটির নাফ নদীতে ভাসমান আরও ছয়টি পেঁয়াজভর্তি ট্রলার রয়েছে।

 

গত সোমবার এসেছিল ১ হাজার ১০৩ টন। চলতি বছরের নভেম্বর মাসে ২১ দফায় মিয়ানমার থেকে নৌপথে ১৮ হাজার ৪৯৭ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ স্থলবন্দরের কাস্টমস সুপার আফসার উদ্দিন। তিনি বলেন, পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারত গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকে আজ বিকেল পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে ৩৯ হাজার ৯৯৫ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে।

 

আজ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হাশেমের ১৯৯ দশমিক ৬০০, নূর মোহাম্মদের ১১ দশমিক শূন্য ১০, মোহাম্মদ জুয়েলের ৫৯ দশমিক ৮৮০, আবু আহমদের ৬৮ দশমিক ৪৭০, মোহাম্মদ ফেরদৌসের ৫৯ দশমিক ৮৮০, আবদুল জব্বারের ৫৫ দশমিক ১২৫, মোহাম্মদ হাশেম মেম্বারের ১৯ দশমিক ৮০০ ও এহতেশামূল হক বাহাদুরের ৭৪ দশমিক ৮০০ টন পেঁয়াজ স্থলবন্দরের আসে। এসব পেঁয়াজ খালাস করে বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media
April 2024
T W T F S S M
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30