৯ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১লা জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

ধূমপান থেকে বিরত থাকবেন কিভাবে?

অভিযোগ
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৪
ধূমপান থেকে বিরত থাকবেন কিভাবে?

বর্তমানে অনেকেই ধূমপানে অভ্যস্ত। স্বাস্থ্যগত ক্ষতির পাশাপাশি ধর্মীয় বিধি-নিষেধও রয়েছে ধূমপানের ক্ষেত্রে। কিছু কিছু আলেম ধূমপানকে সরাসরি হারাম বলেছেন। আবার কেউ কেউ একে মাকরুহ বলেছেন। তবে ধর্মীয় ও চিকিৎসাশাস্ত্র-সবদিক বিবেচনায় ধূমপান থেকে বিরত থাকা জরুরি। কারণ ধূমপানের মাধ্যমে মানুষ নিজ হাতে নিজেকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। আর পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘(তোমরা) নিজের হাতে নিজেকে ধ্বংসের মুখে নিক্ষেপ করো না।’ (সূরা বাকারা, আয়াত, ১৯৫)

ধূমপানের মাধ্যমে মানুষের যেমন ক্ষতি হয়, একইসঙ্গে আর্থিক অপচয়ও হয়ে থাকে। আল্লাহ তায়ালা অপচয় থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘হে আদম সন্তান! তোমরা প্রত্যেক নামাজের সময় সুন্দর পরিচ্ছদ পরিধান কর। পানাহার কর, কিন্তু অপচয় করো না। নিশ্চয় তিনি অপচয়কারীদেরকে পছন্দ করেন না। (সুরা আরাফ, ৩১) পবিত্র কোরআনের আরেক জায়গায় বলা হয়েছে, অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই।’ (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত, ২৭)

এসবের বাইরেও ধূমপানের কারণে ধূমপায়ীর মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হয় এতে অন্যের কষ্ট হয়, যা পৃথক একটি গুনাহ। তাই ধূমপান থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। আমাদের প্রিয়নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুখে দূর্গন্ধ হয় এমন সবজি বা কাচা পেয়াজ, রসুন খেয়ে মসজিদে আসতে নিষেধ করেছেন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি পিয়াজ, রসুন এবং পিয়াজের মতো গন্ধ হয় এমন কোনো সবজি খাবে, সে  যেন আমাদের মসজিদের ধারে কাছেও না আসে, কেননা; মানুষ যে খারাপ গন্ধ দ্বারা কষ্ট পায়, ফিরিস্তারাও তদ্রূপ কষ্ট পায়। (সহিহ মুসলিম, ১/৩৯৫)

আরেক হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে কেউ আল্লাহ তায়ালা ও শেষ দিবসে ঈমান রাখে সে যেন প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। (বুখারি, ৭/২৬) ধূমপান এবং এজাতীয় যেকোনো দুর্গন্ধের মাধ্যমে অন্যেকে কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। কারণ, হাদিসে প্রকৃত মুমিন বলা হয়েছে যার কাছ থেকে কেউ কষ্ট পায় না। বর্ণিত হয়েছে, ওই লোক প্রকৃত মুসলিম, যার মুখ ও হাত হতে অন্য মুসলিম নিরাপদে থাকে।’ (বুখারি, ১/১১)

এজন্য ধূমপান করার আগে অথবা যারা ধূমপানে অভ্যস্ত তাদের ভেবে দেখা উচিত, একটি বাজে অভ্যাসের কারণে ধর্মীয়, আর্থিক, স্বাস্থ্যগত ক্ষতির পাশাপাশি অন্যকে কষ্ট দেওয়ার গুনাহও অন্তর্ভুক্ত। তাই এসব থেকে বিরত থাকা জরুরি। কেউ ধূমপানে অভ্যস্ত হলে কিছু টিপস মেনে একেবারে পরিহারের চেষ্টা করা উচিত। এখানে ধূমপান থেকে বিরত থাকার কিছু টিপস তুলে ধরা হলো-

>> ধূমপানের ধর্মীয় বিধি-নিষেধ রয়েছে, তাই ছেড়ে দেওয়ার নিয়ত করতে হবে।

>> ধূমপানের ভয়াবহ ক্ষতিসমূহ ভালোভাবে বুঝতে হবে ও পরিবারের সকল সদস্যকে এ ব্যাপারে অবহিত করতে হবে।

>> ধূমপান ছাড়তে দৃঢ় অঙ্গীকার করা ও ধূমপায়ীদের সাহচর্য ছেড়ে দিতে হবে।

>> বেশি বেশি কোরআন বুঝে পড়ার চেষ্টা করা ও বেশি বেশি নেক আমল করা।

>> সবসময় মেসওয়াক ব্যবহার করার চেষ্টা করা।

>> প্রয়োজনে ধূমপান প্রতিরোধ ক্লিনিকের সহযোগিতা নেওয়া।

>> সর্বশেষে ভালোভাবে বুঝে নেওয়া দরকার যে, ধূমপান ছেড়ে দিয়ে আবার শুরু করলে বড় বিপদ হবে। বরং ছেড়ে দেয়ার পর একটু খারাপ লাগলেও তা তাড়াতাড়ি দূর হয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ।

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031