৯ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১লা জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

চট্টগ্রামে মানিকগঞ্জের কারিগরের বাদ্যে মাতবে পূজামণ্ডপ

অভিযোগ
প্রকাশিত অক্টোবর ৬, ২০২১
চট্টগ্রামে মানিকগঞ্জের কারিগরের বাদ্যে মাতবে পূজামণ্ডপ
চট্টগ্রামে মানিকগঞ্জের কারিগরের বাদ্যে মাতবে পূজামণ্ডপ

চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : মহালয়ার মধ্য দিয়ে দেবীপক্ষের শুভ সূচনা হয়েছে বুধবার (৬ অক্টোবর)। গ্রামের মতো শহরেও সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মেতে উঠবেন মাতৃ বন্দনায়।

পঞ্জিকা মতে, সোমবার (১১ অক্টোবর) ষষ্ঠী তিথিতে সন্ধ্যায় দেবীর বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস অনুষ্ঠিত হবে। এদিন থেকেই মণ্ডপে আর পারিবারিক পূজাস্থলে বাজবে শঙ্খ-ঘন্টা, কাসর আর ঢাক-ঢোল।

এই ঢাক-ঢোল তৈরি আর মেরামতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন চট্টগ্রামের পাথরঘাটা সতীশ বাবু লেইনের ১৬-১৮টি দোকানের মালিক ও কারিগররা। বিভিন্ন মণ্ডপের জন্য বড় বড় ঢাক তৈরি করতে দেখা গেছে কয়েকটি দোকানে।

প্রায় ২৫ বছর আগে মানিকগঞ্জ থেকে বাবার সঙ্গে পাথরঘাটায় এসে কাজ শুরু করেন অমর দাস। বাবা মারা যাওয়ার পর পৈত্রিক পেশা ধরে রেখে ২ জন কর্মচারী নিয়ে তিনি বাদ্যযন্ত্র তৈরি করে যাচ্ছেন সুবর্ণা সুর নামের দোকানটিতে।

ঢাক তৈরিতে লাগে বড় আম ও কড়ই গাছ, যা পার্বত্য চট্টগ্রাম ও মানিকগঞ্জ থেকে সংগ্রহ করে আনা হয় বলে জানালেন তিনি। এই কাঠেই তৈরি হয় বাদ্যযন্ত্র জোড়খাই (বাংলা ঢোল)।

কারিগররা জানান, ছাগলের চামড়া দিয়ে ছাউনি আর মহিষ ও গরুর চামড়া দিয়ে ঢোলের বেল্ট তৈরি করা হয়। একেকটি ঢাক ৮-১০ হাজার, জোড়খাই ৩-৪ হাজার, মৃদঙ্গ ৩-৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়।

একটা বড় ঢোল তৈরি করতে ৩-৪দিন সময় লাগে। অমর দাস তার দুই সহকারীকে নিয়ে গত ১৫-২০ দিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন। এবার প্রায় ৩০ জোড়া ঢাক-জোড়খাই তৈরির কাজ পেয়েছেন তিনি।

তার মতে, বছরের এই সময়ে কারিগরের স্বল্পতা দেখা দেয়। একেকজন কর্মচারীকে সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা বেতন দিতে হয়। এখানকার প্রায় সবাই মানিকগঞ্জের কারিগর বলে জানান তিনি।

পূজায় ঢাক-ঢোলের বাদ্য অপরিহার্য হলেও বর্তমানে সাউন্ড সিস্টেমের দাপটে সেই ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বেড়েছে কাঠ ও চামড়াসহ বিভিন্ন উপকরণের দাম। ফলে এখন তেমন লাভের মুখ দেখছেন না বাদ্যযন্ত্র তৈরির কারিগররা।

পাথরঘাটার মৃদঙ্গ ভাণ্ডারের স্বত্বাধিকারী দিলীপ দাস সাপ্তাহিক অভিযোগ পত্রিকাকে বলেন, আগের মতো দেশিয় বাদ্যযন্ত্রের চাহিদা নেই। শুধু পূজা এলেই ঢাক-ঢোল, মৃদঙ্গের চাহিদা বেড়ে যায়। আধুনিক যন্ত্রের সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে এসব বাদ্যযন্ত্র হারিয়ে যেতে বসেছে। তারপরও চেষ্টা করছি বাপ-দাদার পেশা ধরে রাখতে।

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031