২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সড়কে আর কত তাজা প্রাণ ঝড়বে?—মোহাম্মদ মুনতাসীর মামুন

অভিযোগ
প্রকাশিত অক্টোবর ৩, ২০১৯
সড়কে আর কত তাজা প্রাণ ঝড়বে?—মোহাম্মদ মুনতাসীর মামুন

 

রাজিব হোসেন সুজনঃ সকালে হাসিখুশি, বিকেলে লাশ!জানিনা হয়েছে কত সর্বনাশ। জীবনে সকলের অনেক আশা থাকে। কারো চাকরি, ব্যবসা, শিক্ষক, সমাজ সেবক, ডাক্তার, ইজ্ঞিনিয়ার, সাংবাদিক, লেখক, পাইলট, প্রকৌশলী, পুলিশ, সেনা সদস্য আরো কত কি!

সবাই তার আশাকে পূর্ণ করতে চায়, সাধ্য অনুযায়ী কাজ ও করে।কিন্তু হঠাৎ করে যখন জীবনের আলোটাই নিভে যায় তখন? তখন তার পরিবারের ও আশার আলোটা ততোটুকুই কমে যায়। হঠাৎ যন্ত্রনা, মানুষকে ধুকে ধুকে কাদায়। জীবনটাই যেখানে সমাপ্ত সেখানে আশাটুকুই তাদের বড় প্রাপ্য। স্মৃতি খুজলে দেখতে পাই! ২০১৭ সালের ১৩ই আগষ্ট। মো. সবুজ হাওলাদার তার চাকরির কাগজপত্র জমা দিতে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার উদ্দেশ্য রওয়ানা হন। সাথে ছিল মো. দুলাল হাওলাদার (সম্পর্কে বেয়াই) রওয়ানার প্রায় ৫ মিনিটের মাথায় একটি টমটমের সাথে সংঘর্ষ হয়। তারা দুজন মোটরসাইকেলে ছিলেন। ঘটনা স্হলে অনেক ক্ষন তারা অজ্ঞান হয়ে পরে থাকে প্রায় একঘন্টার মতো।সবুজ তার মাথায় চরম আঘাত পায় এবং দুলাল ও একই ভাবে আহত হন। এরপর তাদের স্বজনরা এসে যখন গলাচিপা হাসপাতালে নিলেন তখন তারা বরিশাল যেতে বলেন, পরক্ষোনে বরিশালর দিকে যাবার পথে গলাচিপা ফেরিঘাটে সবুজ হাওলাদারের মৃত্যু হয়। জীবনের বাতি যে বিধাতা নিভিয়ে দিছিলেন,সেখানে মানুষের শত চেষ্টা ও ব্যর্থ।সকলের মাঝেই বয়ে আসে শোকর ছায়া!সবুজ হাওলাদারের যাওয়া হলো না, চাকরির কাজে।দুলাল হাওলাদার যেতে চেয়েছিলেন শশুড়বাড়ি, তার ও যাওয়া হলো না।যেতে হলো বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। দির্ঘ দশদিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে তিনিও চলে গেলেন পরপারে। আর কখনো হয়তো তারা আসবেন না, তাদের স্বপ্ন, আশা এটুকুই মানুষকে আরো দির্ঘ শ্বাস দিবে।এর দুই বছর পর, ২০১৯ সালের ২রা অক্টোবর কলেজে যাবার পথে রিউ গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারায়। ঘটনাস্হলেই প্রাণ যায় কলাগাছিয়া এস এম সিকান্দার আলী ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র মো. জহিরুল ইসলাম ।এরপর তার গ্রামেও ছড়িয়ে পড়ে শোকের ছায়া। তার অনেক স্বপ্ন ছিলো, অনেক আশা ছিলো যা পূর্ণ করতে পারলেন না। তবুও তার পরিবার আশার আলোটুকু জ্বালিয়ে রাখবেন তার জন্য। তারা যদিও কোন দিন ফিরবেন না, সবাই তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে।

গাড়ি! একটি যানবাহন। যেটা ব্যবহার করে মানুষ একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে পৌছায়। তবে সেই যানবাহনটি হতে হবে কোন ত্রুটি ছাড়া।
আজকাল সাধারণত সড়ক দূর্ঘটনার মূল কারণ
১/ত্রুটি যুক্ত যানবাহন।
২/অদক্ষ চালক।
৩/রাস্তার নিয়মকানুন না মানা।
৪/রাস্তায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আগে পৌছানোর চেষ্টা।
৫/ ইচ্ছে মত চালানো।
সকল জিনিসের একেকটা নিয়ম রয়েছে। তা যদি মেনে না চলে তবে তাদের জন্যই এত তাজাতণ প্রাণ হারাতে হচ্ছে।

মানুষ যদি মানুষের জন্য হয় তবে সেই সমাজে আজ এতটা অহংকার কেন? মানুষে-মানুষে ভেদাভেদ কেন? সড়ক দূর্ঘটনায় আহতরা যখন মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করে তখন কেউ কি সাহায্যর হাত বাড়িয়ে দেবার মত থাকেনা? তবে কেন যন্ত্রনায় কাতর হয়ে এই সমসজ ছাড়তে হয়? কেন বলা হয় ওদের কাছে গেলে এই নিহতের জন্য ফেসে যাবো? বিপদগামীকে উপকার করাই কি ফেঁসে যাওয়ার বড় আক্ষেপ? কেন মানুষের এতটা দ্বিধা? কোন সমাজে আছি আমরা? এতটাই বা আমাদের কেন অহংকার? বিপদগ্রস্তকেও বাচাতে এগোই না? ধিক্কার জানাই এই সমাজকে।

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031