সোহেল চৌধুরী রানা, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ- নওগাঁর আত্রাইয়ে হাটকালুপাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র দায়িত্বরত কর্মকর্তার অবহেলায় এখন ধানের গোডাউন এ পরিণত হয়েছে। চারিদিকে ময়লা আবর্জনার স্তুপ সৃষ্টি হয়েছে।
প্রতিদিন সেখানে সরকারি ঔষধ বিতরনের মাধ্যমে জনসাধারণের মধ্যে সেবা দেওয়ার কথা থাকলেও নিয়মিত বসেন না কর্মরত ডাক্তার আরঙ্গজেব কান্টু।
সরেজমিনে ও তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায় সেখানে কেন্দ্রের মূল গেটের ভেতরে ধানের বস্তা রেখে গোডাউনে পরিণত করে তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখা যায়।
ওই কেন্দ্রে দায়িত্বরত কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আরঙ্গজেব কান্টু সরকারিভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে বেতন ভাতা গ্রহণ করলেও জনসেবায় তার অবহেলা। প্রতিদিন সেখানে বসার নিয়ম থাকলেও মাসে বসেন দুই থেকে তিন দিন। সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এলাকার হাজারো মানুষ।
স্থানীয়রা বলেন কোন সপ্তাহে আসেন কোন সপ্তাহে আসেন না যদিও দু’একদিন আসেন তাহলে সাধারণ রোগীদের সাথে কর্কশ ভাষায় কথা বলেন।
হাটকালুপাড়া গ্রামের পরেশ কুমার বলেন,আমরা প্রয়োজনীয় ওষুধ নেওয়ার জন্য আসলেও আমরা ওষুধ পাই না। ডাক্তার বলেন ঔষধ নাকি সে নিজের টাকা দিয়ে ক্রয় করে আনেন। তাছাড়া সাধারণ রোগীদের সাথে তিনি ভাল ব্যবহার করেন না।
এখানে আসা একজন সাধারন রোগী দিপালী রানী বলেন, কোন সপ্তাহে আসে কোন সপ্তাহে আসে না তবে আমরা নিয়মিত ঔষধ পাই না। আর আমাদের মত মেয়েদের সাথে আরও খারাপ ব্যবহার করা হয়। আমরা যাতে নিয়মিত ঔষধ পাই এবং ডাক্তারকে পাই এজন্য সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।
একই গ্রামের ভুক্তভোগী ব্রজেন্দ্রনাথ বাদল বলেন,এখানে রোগীরা আসলেই হয়রানির শিকার হয়। তাছাড়া ১৫ দিনে একদিন দুইদিন আসেন সে বলে উপরের সাথে সিস্টেম আছে তাই আমার কিছু হবেনা আমি এখান থেকে চলে গেলে কোন ডাক্তার আসবে না। আমি পকেটের টাকা খরচ করে ওষুধ নিয়ে আসি। তবে নিয়মিত ওষুধ পাওয়াটাই সকলের কাম্য।
হাটকালুপাড়া চড়কতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ফয়েজ উদ্দিন মন্ডল বলেন, আমি এখানে প্রতিদিন স্কুলে এসে দেখি ডাক্তার একদিন দুদিন আসে। তবে নিয়মিত আসেন না,তাদের প্রতিদিন আসার বিধান আছে নাকি একদিন-দুদিন সেটা আমার জানা নেই। সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষের ভালো জানার কথা।
হাটকালুপাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মোঃআরঙ্গজেব কান্টুর কাছে অনিয়ম বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি নিয়মিত আসি মাঝে মধ্যে একটু সমস্যা হয় তবে এখন থেকে নিয়মিত আসবো।
হাসপাতালের ভিতরে ধানের বস্তা রাখার ব্যাপারে কর্মরত ডাক্তারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন হাটকালুপাড়া গ্রামের মোঃ মকবুল হোসেনের ছেলে মোঃ বাবুল হোসেন দীর্ঘ এক বছর ধরে এই ধানের বস্তা গুলি জোরপূর্বক রেখেছে আমি বারবার ধানের বস্তাগুলি সরানোর কথা বললে তিনি বস্তাগুলি সরিয়ে নেননী।
উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে কিনা এ ব্যাপারে মোঃ আরঙ্গজেবের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজী হয়নি ।
বাবুল কে জিজ্ঞেস করলে বাবুল বলেন আমি ওখানে ধানের বস্তাগুলো বলেই রেখেছি তবে দ্রুত ধানের বস্তাগুলো সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করছি।
৮ নং হাটকালুপাড়া ইউনিয়নের ১নং ইউ,পি সদস্য মোঃ ইমান আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন ,সরকারি বেতন-ভাতা গ্রহণ করেও সাধারন জনগনের সেবা করে না প্রতিদিন আসার নিয়ম থাকলেও শুধু সোমবার করে আসে এবং কোন কোন দিন আসে না।
জনগণের সাথে দুর্ব্যবহার করে এবং ওষুধপত্র ঠিকমতো দেন না। তার অনিয়মের কথা এলাকার সবাই অবগত আছেন। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।