৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৮শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

রোহিঙ্গা রফিক, বর্তমানে একটি পত্রিকার চট্রগ্রাম ব্যুরো চীফ!

অভিযোগ
প্রকাশিত অক্টোবর ১, ২০১৯
রোহিঙ্গা রফিক, বর্তমানে একটি পত্রিকার চট্রগ্রাম ব্যুরো চীফ!

অভিযোগ ডেস্ক :: তিনি বাংলা লিখতে জানেন না। ভালভাবে বাংলা ভাষাও বলতে পারেন না। রোহিঙ্গা আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলেন। তবে তিনি প্রাইভেট ডিটেকটিভ নামে অপরাধ ও অনুসন্ধানী পত্রিকার চট্টগ্রাম অঞ্চলের ব্যুরো প্রধান। চলাফেরা করেন নিজস্ব প্রাইভেটকারে। তার নাম মো. রফিক।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন থেকে নেওয়া আছে আমদানি রপ্তানির জন্য ট্রেড সনদ। রয়েছে বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র। একটি ট্রাভেল এজেন্সির মালিকও তিনি। মূলত ওই ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে তিনি রোহিঙ্গাদের সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পাঠান।

রফিক নিজেও একজন রোহিঙ্গা। ১১ বছর আগে বাংলাদেশে আসার পর বিদেশে রোহিঙ্গাদের পাচার করে বিপুল বিত্ত বৈভবেরমালিক বনেছেন তিনি।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মো. রফিককে নগরীর ভিআইপি টাওয়ারের দ্বিতীয় তলার ট্রাভেল এজেন্সির কার্যালয় থেকে গ্রেপ্তার করেছে। এসময় তার কাছ থেকে ১৫টি পাসপোর্ট, নিজের নামে তৈরি হওয়া বাংলাদেশের নাগরিক পরিচয়পত্র (এনআইডি), ট্রেড লাইসেন্স, পাঁচটি ব্যাংকের চেক বই, পাঁচটি ভিসা প্রক্রিয়াকরণ ফাইলসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। নগরীর সবচেয়ে সংবেদনশীল এলাকা হিসেবে পরিচিত কাজীর দেউড়ির সার্কিট হাউজের বিপরীতে অবস্থিত ভিআইপি টাওয়ারের দ্বিতীয় তলায় রফিকের আরএসএম ফার্স্ট ইন্টারন্যাশনাল নামের ট্রাভেল এজেন্সির কার্যালয়। তবে আটাবের চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি জাফর আলম দাবি করেছেন, এই নামের কোনো এজেন্সি আটাবের সদস্য নয়।

বাংলাদেশের নাগরিক বনে গিয়ে মো. রফিক নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকায় কিনেছেন একটি ফ্ল্যাট। আছে একটি এলিয়ন কার। বান্দরবানের আলীকদম এলাকায় একাধিক পাহাড় তিনি কিনেছেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানিয়েছেন।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তর জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মির্জা সায়েম মাহমুদ বাংলাধারাকে বলেন, গোপনে বিদেশে পাচারের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তরুণ তরুণীদের এনে জড়ো করা হয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে আমরা গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে ভিআইপি টাওয়ারের দ্বিতীয় তলায় অভিযান চালাই। আরএসএম ফার্স্ট ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে অভিযান চালানোর সময় মো. রফিক ও তার শ্যালক নুর ফাহাদ কৌশলে পালানোর চেষ্টা করেন। তখন আমরা তাদের ধরে ফেলি। এসময় রফিক নিজেকে ‘প্রাইভেট ডিটেকটিভ’ নামের একটি অপরাধ বিষয়ক পত্রিকার চট্টগ্রামের ব্যুরো প্রধান বলেও দাবি করেন। তিনি এ সংক্রান্ত একটি পরিচয়পত্রও উপস্থাপন করেন।

কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদে রফিক জানান, তিনি বাংলাই লিখতে পারেন না। বাংলাদেশে একযুগের মতো সময় অতিবাহিত করলেও তার কথাবার্তা শোনে সহজেই বোঝা যায় তিনি একজন রোহিঙ্গা। তিনি রোহিঙ্গাদের মাতৃভাষায় কথা বলছিলেন।

অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক রুহুল আমিন বাংলাধারাকে জানান, রফিকের এজেন্সি থেকে উদ্ধার করা ১৫টি পাসপোর্টের মালিকদের স্থায়ী ঠিকানা দেখানো হয়েছে কক্সবাজার সদর, রামু, টেকনাফ, চট্টগ্রাম শহরের পাঁচলাইশ, জেলার বাঁশখালী, আনোয়ারা, ঢাকা জেলার দোহার, নোয়াখালী, সিলেট ও কুমিল্লার নাঙ্গলকোট। তবে পাসপোর্টগুলো প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের নাগরিক নাকি রোহিঙ্গাদের জন্য করা হয়েছে তা তদন্ত করা হচ্ছে বলে পুলিশ কর্তকর্তারা জানিয়েছেন। পুলিশের দায়ের করা মামলায় রফিকের বাড়ি কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার নাইটংপাড়া বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আর তার শ্যালক নুর ফাহাদের (২১) ঠিকানা দেখানো হয়েছে সাবরাং ইউনিয়নের কাটাবুনিয়া গ্রামে। তবে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে দুইজনই নিজেদের রোহিঙ্গা বলে দাবি করেছেন।

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031