৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

৯৯৯ নম্বরে অভিযোগ করায় গাইবান্ধায় পুলিশের বিরুদ্ধে এক নারীকে নির্যাতনের অভিযোগ

অভিযোগ
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৯
৯৯৯ নম্বরে অভিযোগ করায় গাইবান্ধায় পুলিশের বিরুদ্ধে এক নারীকে নির্যাতনের অভিযোগ

 

তাসলিমুল হাসান সিয়াম , রংপুর বিভাগীয় ব‍্যুরো প্রধান:
৯৯৯ নম্বরে ফোন এরপর কলের খেসারত হিসেবে এক নারীকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতন ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ, ৯৯৯ নম্বরে কল করে সাহায্য চাওয়ায় গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরের ধাপেরহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরির্দশক) নওয়াবুর তার ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন। এছাড়া ভুক্তভোগী নারী ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে লোকজন দিয়ে বাড়ি ভাঙচুর এবং মিথ্যা মামলায় জড়ানো ও পরিবারের সদস্যদের হয়রানি করার অভিযোগ তুলেছেন।
এসব অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রতিকার চেয়ে অভিযুক্ত পুলিশ পরির্দশকের বিরুদ্ধে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) গাইবান্ধা পুলিশ সুপার এবং মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রংপুর পুলিশ রেঞ্জের ডিআইজিসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন শাম্মি আকতার নামের ভুক্তভোগী নারী।

তিনি আরও জানান, গত ১২ সেপ্টেম্বর ভোরে ফাঁড়ির ইনচার্জ নওয়াবুর আমাকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। এসময় আমার বিরুদ্ধে কি অভিযোগ জানতে চাইলে তিনি অকথ্য ভাষায় গালি দিয়ে বলেন, ফাঁড়িতে চল তোরে ডিম ঢুকিয়ে বুঝিয়ে দেবো, কেন ধরে নিয়ে যাচ্ছি। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, তুই পুলিশের বিরুদ্ধে ৯৯৯ নম্বরে কল করিস, তোকে ফাঁড়িতে নিয়ে মজা দেখাবো। পরে ফাঁড়িতে নিয়ে নারী গ্রাম পুলিশ সদস্য দিয়ে আমাকে মারধর করান। এবং নওয়াবুর বলেন, তুই ৯৯৯-এ কল করিস, তুই মাতব্বর হইছিস, তোকে জেলের ভাত খাওয়াবো। আমি বারবার অনুরোধ করলেও তার মন গলেনি। আমি ডিগ্রি পরীক্ষা দেওয়ার কথা বললেও আমাকে ছাড়া হয়নি। পরে ফাঁড়ি থেকে আমাকে সাদুল্যাপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নওয়াবুর আমাদের প্রতিপক্ষ শংকার চন্দ্রকে দিয়ে আমি ও বাবা-মা, বোন ও চাচাকে আসামি বানিয়ে মামলা করান। এসময় ওসি সাহেবকে অনুরোধ করায় পুলিশি প্রহরায় এক ঘন্টা অতিবাহিত হওয়ার পর আমি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাই।

নির্যাতনের শিকার ওই নারীর বাবা সাজু প্রামাণিক অভিযোগ করেন, জমি নিয়ে ভাইসহ প্রতিবেশী শংকার চন্দ্রের সঙ্গে বিরোধ চলছে। এ নিয়ে আদালতে মামলাও আছে। তবে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নওয়াবুরের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে প্রতিপক্ষ আমাদের বিভিন্ন সময় হুমকি দিচ্ছে ও বাসাবাড়ি দখলের চেষ্টা করছে। কিছুদিন আগে গত ৪ সেপ্টেম্বর সকালে প্রতিপক্ষ শংকার চন্দ্র সাহা ও শরিফুল প্রামাণিক গংরা সংঘবদ্ধ হয়ে লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় তারা বাড়িঘর ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। উঠানের বিভিন্ন গাছপালা কেটে ফেলে ও লুটপাট চালায়। একই সঙ্গে বসতি জমি দখলে নিয়ে ইটের দেয়াল নির্মাণ করে। অথচ ফাঁড়ির ইনচার্জ নওয়াবুর প্রতিপক্ষকে দিয়ে মিথ্যা মামলা করিয়েছেন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, নওয়াবুর ফাঁড়িতে যোগদানের পর থেকে আটক বাণিজ্য শুরু করেছেন। মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িতদের সঙ্গে তার সখ্যতার অভিযোগ রয়েছে।

তবে অভিযুক্ত পুলিশ পরির্দশক নওয়াবুর তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মামলার আসামি হিসেবে শাম্মি আকতারকে গ্রেফতার করা হয়। গালিগালাজ ও মারধরের কোনও ঘটনা ঘটেনি।

পরিদর্শক নওয়াবুরের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্তের কথা জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, গুরুত্ব সহকারে অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তে অভিযোগের প্রমাণ মিললে নওয়াবুরের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবং নওয়াবুরের কে গাইবান্ধা পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে বলে থানা পুলিশ সুত্রে জানা যায়।

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031