২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

শহীদ শিশু শেখ রাসেল এর ৬০’তম জন্মবার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়েছেন, স্মার্ট কর্মী সোসাইটি অফ বাংলাদেশ

অভিযোগ
প্রকাশিত অক্টোবর ১৮, ২০২৩
শহীদ শিশু শেখ রাসেল এর ৬০’তম জন্মবার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়েছেন, স্মার্ট কর্মী সোসাইটি অফ বাংলাদেশ

মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বাবু: সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ছেলে ও মমতাময়ী দেশমাতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র স্নেহের ছোট ভাই শেখ রাসেল

শেখ রাসেলের ৬০’তম জন্মবার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

স্মার্ট কর্মী সোসাইটি অফ বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এবং বয়লার ওয়েলফেয়ার সোসাইটি অফ বাংলাদেশ এর সহ-সভাপতি এবং সাংবাদিক মোঃ শহিদুল ইসলাম বাবু শহীদ শিশু রাসেলের জন্মবার্ষিকীতে বিনাশ্রম শ্রদ্ধা

শহীদ শিশু শেখ রাসেল এর ৬০’তম জন্মবার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে, তিনি বলেন।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ছোট ছেলে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদরের ছোট ভাই। রাজনীতির তীর্থস্থান ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে ১৯৬৪ সালের ১৮’ই সেপ্টেম্বর তিনি জন্মগ্রহণ করেন। দীর্ঘ সাত বছর পর বঙ্গবন্ধু পরিবারে নতুন অতিথি আসার কারণে সবার মধ্যেই ছিল অন্যরকম আনন্দ উচ্ছ্বাস।

রাসেল নাম করণেরও আছে সুন্দর একটি ইতিহাস। বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা দুজনই সময় পেলে বই পড়তেন, ছিলেন নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানী, দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেলের ভক্ত। বার্ট্রান্ড রাসেল ছিলেন পারমাণবিক যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনের বিশ্বনেতা। বিশ্ব শান্তির জন্য গঠন করেছিলেন ‘কমিটি অব হান্ড্রেড’। শেখ রাসেলের জন্মের দুবছর আগে ১৯৬২ সালে কিউবাকে কেন্দ্র করে আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধ চলছিল। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ যখন দ্বারপ্রান্তে তখন শান্তির পতাকা নিয়ে হাজির হয়েছিলেন বার্ট্রান্ড রাসেল। বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা আগেই সিন্ধান্ত নিয়েছেন যে তাদের যদি পুত্র সন্তান হয় তাহলে শান্তির দূত বার্ট্রান্ড রাসেলের নামের সঙ্গে মিল রেখে নাম রাখবেন রাসেল।

রাসেল যখন খুব ছোট তখন পিতা বঙ্গবন্ধু ছয় দফা পেশ করার কারণে দীর্ঘমেয়াদে কারাবরণ করেন।

শেখ রাসেলের বড় বোন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছোট ভাইয়ের সব স্মৃতিকে এক করে বই লিখেছেন ‘আমাদের ছোট রাসেল সোনা’। বইটিতে শেখ রাসেলের জন্মগ্রহণ থেকে শুরু করে ঘাতকের হাতে নির্মমভাবে শহীদ হওয়া পর্যন্ত জীবনের খুঁটিনাটি তুলে ধরেছেন। বইটি থেকে শেখ রাসেলের অনেক গুণাবলির তথ্য জানতে পারি।

শেখ রাসেল অত্যন্ত রাজনৈতিক সচেতন ছিলেন। পরিবারের রাজনৈতিক আলোচনা খুব মনোযোগ দিয়ে শুনতেন। ছোট্ট রাসেল একদিন মাকে জিজ্ঞেস করে, মা আব্বার কাছে যাবে না। মা কোনো উত্তর দেয় না। দিবে কী করে তখন যে পিতা বঙ্গবন্ধুকে ছয়মাস ক্যান্টনমেন্টে পাকিস্তানি সামরিক জান্তারা আটক করে রেখেছিল। কেউ কোনো খবরই জানত না তিনি কোথায় কীভাবে আছেন। ছেলেকে শুধু বুকে টেনে নিয়ে আদর করলেন মা।

রাসেল আবার মাকে জিজ্ঞাসা করল, মা আব্বার নাকি ফাঁসি হবে? ফাঁসি কি? মা বললেন, তোমাকে একথা কে বলেছে বাবা। রাসেল উত্তর দিয়ে বলে সেদিন কাকা, দুলাভাই আর কামাল ভাই বলেছিল আমি শুনেছি মা। এমনই রাজনৈতিক সচেতন ছিলেন রাসেল। কারাগারে বাবার সঙ্গে দেখা করতে গেলে জয়বাংলা স্লোগান দিত। এমনকি হরতালের দিনে বাসার সামনের লনে দাঁড়িয়ে হরতালের সমর্থনে হরতাল হরতাল বলে স্লোগান দিত।

রাসেল চঞ্চল প্রকৃতির ছিলেন। পড়া সোনা করতেন, ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরী স্কুলে। বাসায় গৃহশিক্ষক ছিলেন গীতালি দাশগুপ্তা। শিক্ষিকাকেই শুনতে হতো রাসেলের কথা, নইলে সে মনোযোগী হতো না। শিক্ষিকাও আদর করে তাকে ম্যানেজ করেই শিক্ষাদান করেছেন।

খান সেলিম রহমান আরো বলেন।
১৯৭৫ সালের ভয়াবহ ১৫’ই আগস্ট ঘাতকের নির্মম বুলেট কেড়ে নেয় ছোট্ট রাসেলকে। তাকে বাবা, মা, দুই ভাইসহ পরিবার প্রতিটি লাশ দেখিয়ে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। সেদিনের প্রত্যক্ষদর্শী বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত সহকারী এএফএম মহিতুল ইসলামের ভাষ্যমতে, ১১ বছরের শিশু রাসেল প্রতিদিনের মতো সেদিনও ঘুমিয়েছিল। আকস্মিক গুলির শব্দে তার ঘুম ভেঙে যায়। ঘুমভাঙা চোখে সে আতঙ্কিত হয়ে চমকে ওঠে। অবস্থা বুঝে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, আদরের দুলাল রাসেলকে রক্ষায় বাড়ির কাজের লোকজনসহ পেছনের দরজা দিয়ে চলে যেতে বলেন।

পেছনের ফটক দিয়ে বাইরে যাওয়ার সময় ঘাতকরা তাকে আটক করে। এ সময় বাড়ির ভেতরে মুহুর্মুহু বুলেটের শব্দ, বীভৎসতা আর আর্তচিৎকার শুনে অবুঝ শিশু রাসেল কান্নাজড়িত কণ্ঠে ঘাতকদের বলেছিল, ‘আমি মায়ের কাছে যাব।’ পরে মায়ের লাশ দেখার পর অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে জোর মিনতি করে বলেছিল, ‘আমাকে হাসু আপার কাছে পাঠিয়ে দাও।’ ছোট্ট নিষ্পাপ শিশুর আকুতিও নরপশুদের মন গলাতে পারেনি। ঘাতকরা ভেবেছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কোনো উত্তরাধিকার রাখলে ভবিষ্যতে তাদের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়াতে পারে। মাত্র ১০ বছর ৯ মাস ২৭ দিন বয়সে এই প্রতিভাবান শিশুর জীবনপ্রদীপ নিভে যায়। এমন নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।

শহীদ শিশু শেখ রাসেল এর ৬০’তম জন্মবার্ষিকীতে জানাই, বিনম্র শ্রদ্ধা।

Please Share This Post in Your Social Media
April 2024
T W T F S S M
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30