দিনাজপুর: আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে আশিকুর রহমান আশিক (২৬) নামে এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এসবি ও ডিএসবি পুলিশের সদস্য পরিচয় দিয়ে সেবাপ্রত্যার্শীদের সঙ্গে এ প্রতারণা করতেন তিনি।
এভাবে গত ৬ মাসে প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে সোয়া ১২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন আশিক।
গ্রেপ্তার আশিক দিনাজপুর সদর উপজেলার ৬নং আউলিয়াপুর ইউনিয়নের হরিহপুর (কাউয়াপাড়া) এলাকার বাসিন্দা মোসলেম উদ্দিনের ছেলে।
বুধবার (২৬ ) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার শাহ্ ইফতেখার আহমেদ।
পুলিশ সুপার বলেন, পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন সেবাপ্রত্যাশীদের কাছে এসবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে ভেরিফিকেশন বাবদ টাকা গ্রহণ করতো একটি প্রতারকচক্র। ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, সিলেট, রাজশাহীসহ সারা বাংলাদেশে তাদের প্রতারণার জাল বিস্তার করে। তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে সেই চক্রের অন্যতম সদস্য আশিকুর ইসলাম আশিককে গ্রেপ্তার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে আশিক জানায়, তিনি ই-পাসপোর্ট বাংলাদেশ ভলান্টিয়ার গ্রুপে যুক্ত হয়ে গ্রুপে ভেরিফিকেশনসংক্রান্ত পোস্ট বিশ্লেষণ করে কৌশলে সেবাপ্রত্যাশীদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও পাসপোর্ট আবেদনপত্রের কপি থেকে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করতেন। এরপর এসবি ও ডিএসবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাদের সঙ্গে মোবাইল ফোন, ম্যাসেঞ্জার, হোয়াটস্ অ্যাপসহ বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করতেন। ভেরিফিকেশনসংক্রান্ত জটিলতা নিরসন ও পজিটিভ পুলিশ রিপোর্ট দাখিলের কথা বলে মোবাইল অ্যাকাউন্টে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা দাবি করতেন। তার কথায় বিশ্বাস করে সেবাপ্রত্যার্শীরা নগদ রকেট, বিকাশ অ্যাকাউন্টে টাকা প্রদান করেন। এভাবে সেবাপ্রত্যাশীর কাছ থেকে কয়েক দফায় টাকা নেওয়ার পর সেবাপ্রত্যাশীর মোবাইল ফোন নাম্বারটি ব্লক করে দিতেন আশিক। তার বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দুর্বলা এলাকার বাসিন্দা খালেদুর রহমান একটি অভিযোগ করেন।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, গত ৬ মাসে নগদ ও রকেটের মাধ্যমে সোয়া ১২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন আশিক। তার মোবাইল ফোনে ব্যবহৃত সিমের আইএমইআই চেক করে ৩০ থেকে ৪০টি সিমের নাম্বার পাওয়া যায়। তার বিরুদ্ধে দিনাজপুর কোতয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুল্লাহ আল মাসুম, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ জিন্নাহ আল মামুন, কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভিরুল ইসলাম, পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম মাওলা, উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামীম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।