৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৯শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

ভারতীয় তালিকায় নাম থাকার পরেও সুবিধা বঞ্চিত একটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবার

অভিযোগ
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ১, ২০২২
ভারতীয় তালিকায় নাম থাকার পরেও সুবিধা বঞ্চিত একটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবার

স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়েছে । এই তো ২০২১ সাল জুড়েই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করেছে বাংলাদেশ । স্বাধীনতার স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম আর একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের জন্ম তো একই সুতোয় গাঁথা । আর তার ডাকে সাড়া দিয়ে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের অধিকার বঞ্চিত, শোষিত, নির্যাতিত অন্তত সাত কোটি বাংলা ভাষাভাষী মানুষের জন্য যারা আত্মসুখ, ঘর-সংসার, পরিবার-পরিজন, জীবনের মোহ পরিত্যাগ করে যুদ্ধে গিয়েছিলেন তারা আমাদের পরম বন্ধু, পরম আত্মীয়, পরম কল্যাণমিত্র, পরম হিতৈষী, পরম আপনজন । শুধু তাই নয় মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশের স্বাধীনতার জন্য যে যেভাবে অংশ নিয়েছেন তারা সকলেই আমাদের দেশের দেশপ্রেমী বীর সন্তান । তাদের প্রতি আমাদের দায় কখনো শেষ হবার নয় । রাষ্ট্র, সরকার এবং জনগণ আমরা সবাই তাদের কাছে চিরদিনের মতো দায়বদ্ধ । আমরা যারা একাত্তর ধারণ করে পরবর্তী প্রজন্ম হিসেবে গড়ে উঠেছি আমাদের নিজেদের ভেতরে এক ধরনের আত্মগ্লানি আর হাহাকার তৈরি হয় যখন শুনি, দেখি যে কোনও মুক্তিযোদ্ধা চরম অবহেলা-অমর্যাদায়, অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন । স্বাধীনতা লাভের ৫০ বছরেও অধিক পরে এসে যখন কোনও মুক্তিযোদ্ধাকে তার স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য রাষ্ট্রের দপ্তরে দপ্তরে আকুতি-মিনতি জানাতে হয়, ধর্ণা দিতে হয়- তখন জাতির কাছে এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। যদি তার এই আকুতি-মিনতি আর আবেদনকে মূল্যায়ন করা হতো, সম্মান করা হতো- তাহলে হয়তো কিছুটা গ্লানিবোধ কমতো বাঙালি জাতি । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কেউ কেউ স্বীকৃতি পাওয়ার আশায় জীবনের অবশিষ্ট দিনগুলোও কাটিয়ে দিয়ে এক বুক কষ্ট আর অভিমান নিয়ে চিরবিদায় নিচ্ছেন । তেমনি এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবার মাদারীপুর জেলা সদরের ছিলারচর ইউনিয়নের চর লক্ষ্মীপুর গ্রামের বীর- মুক্তিযোদ্ধা মৃত রুস্তম মোল্লার পরিবার চরম অবহেলিত । ভারতীয় তালিকায় তার নাম থাকা সত্ত্বেও তার পরিবার পরিজন সরকারী সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্ছিত । ১৯৮০ সালে সর্বহারা পাটির হাতে নির্মম ভাবে খুন হন বীর- মুক্তিযোদ্ধা মৃত রুস্তম মোল্লা । এসময় স্ত্রী ও নাবালক এক পুত্র সন্তান রেখে যান । তারপর অনেক কষ্টের মাঝেই দিন কাটে এই পরিবারটির । দুঃখের বিষয় বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধা পরিবারদের অনেক সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকলেও বিন্দু পরিমান সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন না বীর- মুক্তিযোদ্ধা মৃত রুস্তম মোল্লার পরিবার । এলাকাবাসী ও ঐ অঞ্চলের একাধিক মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কথা বলে এবং বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করে দেখা যায় ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে মাতৃভূমি স্বাধীনতার লক্ষে বীর- মুক্তিযোদ্ধা রুস্তম মোল্লা প্রশিক্ষণের জন্য চলে যান ভারতের হাকিমপুর ভাদিয়ালি মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে । সেখানে অল্প সময়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে অস্র হাতে ঝাপিয়ে পড়েন মহান মুক্তিযুদ্ধে । তিনি সামনের সারিরি একজন সাহসী ও দক্ষ যোদ্ধা ছিলেন বলে জানান তার সাথে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ কারী একাধিক বীর- মুক্তিযোদ্ধাগন । ছিলারচর ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আনোয়ার হোসেন চোগদার বলেন, বীর- মুক্তিযোদ্ধা মৃত রুস্তম মোল্লা একজন বিচক্ষণ ও সাহসী মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন । আমি ও রুস্তম মোল্লা এক সাথে ট্রেনিং করেছি এবং ৮নং সেক্টরের অধীনে অনেক দিন যুদ্ধুও করেছি । রুস্তম মোল্লার হাতে অনেক পাক বাহিনী নিহত হয়েছে । এক পর্যায় আমাকে অন্য ক্যাম্পে পাঠানো হলে তখন আমি আমার ব্যাডিংপত্র রুস্তম মোল্লার নিকট রেখে যাই । তার মাস খানেক পরে দেশ স্বাধীন হয় । এরপর যশোর ক্যান্টমেন্টে অস্র জমা দিয়ে নিজ এলাকায় ফিরে আসেন রুস্তম মোল্লাসহ মাদারীপুরের অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাগন । তারপর হটাত করে একদিন ব্যাডিংপত্র নিয়ে রুস্তম মোল্লা হাজির হন আমাদের বাড়িতে । এসময় আমাদের বাড়িতে এক কান্নার রোল পড়ে যায় । মুক্তিযোদ্ধাদের উপর দিয়ে এতো ঝড়ঝাপটা বয়ে গেলেও রুস্তম মোল্লা আমার ব্যাডিংপত্র ফেলে আসেননি । তিনি আরও বলেন, ভারতের হাকিমপুর ভাদিয়ালি মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে অল্প সময়ের প্রশিক্ষণ নিয়ে ৮নং সেক্টরের অধীনে যশোর জেলার বিভিন্ন এলাকায় তারা যুদ্ধু করেছেন । যুদ্ধকালীন সময়ে রুস্তম মোল্লার সাহস ও বিভিন্ন রকম কৌশলে প্রায় প্রতিটি সংঘর্ষে পাক বাহিনীকে পরাজিত করতে সহজ হয়েছি । তাই রুস্তম মোল্লার প্রতি কমান্ডারসহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের বেস আস্থা ছিল । বীর- মুক্তিযোদ্ধা মৃত রুস্তম মোল্লার পরিবার সরকারী সুযোগ সুবিধা থেকে কেন বঞ্চিত এমন প্রশ্ন করা হলে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আনোয়ার হোসেন চোগদার বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধার পক্ষে প্রমাণ হিসেবে যেসব প্রমাণাদি প্রয়োজন হয় তার সবকিছুই রুস্তম মোল্লার আছে । কিন্তু দুঃখের বিষয় হল ১৯৮০ সালের দিকে বীর- মুক্তিযোদ্ধা মৃত রুস্তম মোল্লা নিজ বাড়িতে সর্বহারা বাহিনীর হাত

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031