২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

নিম্ম আয়ের মানুষদের জন্য ঈদের কেনাকাটা ভরসা মহাস্থান হাট

অভিযোগ
প্রকাশিত মে ৯, ২০২১
নিম্ম আয়ের মানুষদের জন্য ঈদের কেনাকাটা ভরসা মহাস্থান হাট

নিম্ম আয়ের মানুষদের জন্য ঈদের কেনাকাটা ভরসা মহাস্থান হাট

গোলাম রব্বানী শিপন,বগুড়া জেলা প্রতিনিধিঃ-

আর মাত্র কয়েক দিন তারপরই শুরু হবে মুসলমানদের প্রিয় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদ মানে আনন্দ ঈদ মানে খুশি। তাই ধনী গরীব নির্বিশেষে সবার জন্য ঈদ উৎসব। কিন্তু ঈদের এই উৎসব রাঙাতে সবচেয়ে যেটি বেশি আনন্দ ও শখপূর্ণতা ছড়ায় সেটি হলো নতুন পোশাক। আর এটি ধনী গরীবদের একটি দেয়াল তৈরী করেছে। কারণ আর্থিক সামর্থ্য সবার সমান না। এ কারণে ভিন্ন ভিন্ন ছাদের নিচ থেকে কেনাকাটার এই পর্বটি সারতে হয়।

ধনীরা অর্থ গতিনুযায়ী ঈদের বাহারী কেনাকাটা করতে চোখধাঁধানো শপিংমলে যায়। মধ্যবিত্তরাও ঢুকে পড়েছে সাধারন বিপণীগুলো থেকে। আর যারা একেবারেই নিম্ম আয়ের তাদের বেশি ভাগ কেনাকাটা করতে দেখা গেছে মহাস্থানহাটের ফুটপাত ও অস্থায়ী দোকানই তাদের নির্ভর।

শনিবার হাট বার বগুড়ার ঐতিহাসিক মহাস্থান হাটের সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাটের মসজিদ সংলগ্ন স্থানের ওপর গড়ে ওঠা দোকানে অল্প আয়ের মানুষের কেনাকাটা করতে সমাগম বৃদ্ধি পেয়েছে। সাধ্যের মধ্যে থেকে পরিবারের সবার জন্য নতুন পোশাক কেনাকাটার পালা সারছেন অল্প বিত্তের মানুষেরা। এখানে তুলনা মূলক কম দামের গার্মেন্টসের পোশাক পাওয়া যায়।

মহামারীর মাঝে আসন্ন ঈদ ঘনিয়ে আসায় ইতিমধ্যে সেটি শুরুও হয়ে গেছে। হাটের উপর অস্থায়ী ভাবে গড়ে ওঠা এই বাজার ঘুরে দেখা যায়, ছোটদের টি-শার্ট ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা পযর্ন্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। বড়দের টি-শার্টও একই দামে পাওয়া যাচ্ছে। ছোটদের শার্ট ২০০ থেকে ৪০০ পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। বাচ্চাদের প্যান্ট পাওয়া যাচ্ছে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা দামে।

বড়দের প্যান্টের সর্বনিম্ন মূল্য ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে সব্বোর্চ ৫০০। বড়দের শার্ট পাওয়া যাচ্ছে ২০০ থেকে ৪০০ টাকায়। ছোটদের ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ৩০০ টাকার পযর্ন্ত পাঞ্জাবি পাওয়া যায়।

এক্ষেত্রে বড়দের পাঞ্জাবির ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। কথা হয় ছোট ছেলেকে নিয়ে হাটে কেনাকাটা করতে রায়মাঝিড়া গ্রামের জলিল উদ্দিনের সাথে, কি কিনতে এসেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছোট ছেলের বায়না ঈদের নতুন শার্ট প্যান্ট নেবে তাই হাটে এসেছি। ছেলের দামি পোশাকের আবদার থাকলেও পারছি না। আমার সাধ্য মত পোশাক কিনে দিতে হবে।

এখানকার বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরে ঘুরে তিনি ২৫০ টাকায় একটি শার্ট কিনে ছেলেকে খুশি করেন। লাহিড়ীপাড়া এলাকা থেকে ছোট মেয়েকে জামা নিয়ে দিতে এসেছেন আবেদ আলীর পরিবার, আলাপচারিতায় তিনি বলেন, বড় দোকান থেকে পোশাক কিনতে গেল অনেক টাকা গুনতে হবে।

যা তার শখ হলেও সাধ্য নেই। তাই এখান থেকেই একটি পোশাক নিতে হল। চন্ডিহারা এলাকার ফজলুর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি করুন কণ্ঠে বলেন, আমি চাষি মানুষ। পরের জমি বর্গা করে আমার সংসার চলে। আর ৬ দিন পর ঈদ। আমার কেনাকাটা না হলেও ছেলে ও মেয়েকে খুশি রাখতে তাদের নতুন জামা দিতে হবে। বড় বড় মার্কেট থেকে আমার পোশাক কেনার সামর্থ্য নেই। তাই ফুটপাত থেকে কম দামে ভালো জামা-কাপড় কিনতে এসেছি। অল্প টাকায় এখানে বেশ ভালো কাপড় পাওয়া যাচ্ছে।

মহাস্থান হাটের কাপড় ব্যবসায়ী ফজলুল জানান, রোজার শেষের দিকে এসে আমাদের ব্যবসা বেশ ভালোই জমেছে। ঈদে নতুন জামা-কাপড় কিনতে ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছে। জামা-কাপড়ের দাম এখানে তেমন একটা বেশি না। এক কথায় গরীব নিম্ম আয়ের মানুষদে ভরসা এই অস্থায়ী হাট। যে কারণে ঈদ এলেই এখানে স্বল্প আয়ের মানুষের কেনাকাটা বাড়ে। আবহাওয়া ভাল থাকলে বেচাকেনা আরও বাড়বে বলে এসব দোকানীরা আশাহত।

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031