৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

রিফাত হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন মিন্নি

অভিযোগ
প্রকাশিত জুলাই ১৯, ২০১৯

অভিযোগ ডেস্ক: বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী ও নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি রিফাত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন। এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন বলেন, মঙ্গলবার দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ ও বুধবার মিন্নির রিমান্ড মঞ্জুরের পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রয়েছে মিন্নি। ইতোমধ্যেই মিন্নি রিফাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এ হত্যার পরিকল্পনার সঙ্গেও মিন্নি যুক্ত ছিলেন। এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বরগুনা জেলা পুলিশের এক সদস্য বলেন, ‌‘মূলত রিফাতকে হত্যার পরিকল্পনা ছিল না। তাকে মারধর করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু দুর্ঘটনাবশত নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রিফাত শরীফের মৃত্যু হয়।’ বরগুনা জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ জুন বুধবার রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ড সংঘঠিত হয়। ঘটনার দু’দিন আগে সোমবার হেলাল নামে এক ছেলের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় রিফাত শরীফ। হেলাল রিফাত শরীফের বন্ধু হলেও নয়ন বন্ডের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। সেই মোবাইল ফোন উদ্ধারের জন্য নয়ন বন্ড মিন্নির দারস্থ হয়। পরে রিফাত শরীফের কাছ থেকে ফোন উদ্ধার করে মিন্নি। কিন্তু ওই ফোন উদ্ধার করতে গিয়ে রিফাত শরীফের মারধরের শিকার হন মিন্নি। পরে হত্যাকাণ্ডের আগের দিন মঙ্গলবার নয়নের সঙ্গে দেখা করে মিন্নি সেই মোবাইল নয়নের হাতে তুলে দেন। এ সময় মিন্নি তার স্বামী রিফাত শরীফের হাতে যে মারধরের শিকার হয়েছেন তার প্রতিশোধ নিতে নয়নকে রিফাত শরীফকে মারধর করতে বলেন। তবে মারধরের সময় নয়ন যাতে উপস্থিত না থাকেন, সেটাও মিন্নি নয়নকে বলে দেন। এরপর ওইদিন সন্ধ্যায় বরগুনা কলেজ মাঠে মিটিং করে রিফাত শরীফকে মারধরের প্রস্তুতি গ্রহণ করে বন্ড বাহিনী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বরগুনা জেলা পুলিশের এক সদস্য জানান, ‘হামলার আগ মুহূর্তে রিফাত শরীফের সঙ্গে মিন্নি কলেজ থেকে বের হলেও কলেজের সামনে রিফাতকে মারধরের পরিকল্পনা অনুযায়ী কোনো প্রস্তুতি দেখতে না পেয়ে সময় ক্ষেপণের জন্য রিফাত শরীফকে নিয়ে আবার কলেজে প্রবেশ করেন। এর কিছুক্ষণ পরই বন্ড বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য একত্রিত হয়ে রিফাত শরীফকে আটক করে মারধর করতে করতে কলেজের সামনের রাস্তা দিয়ে পূর্ব দিকে নিয়ে যায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী রিফাতকে মারধর করা হচ্ছে দেখেই মিন্নি তখন স্বাভাবিকভাবে হাঁটছিলেন। পরিকল্পনার বাইরে গিয়ে নয়ন বন্ড রিফাত শরীফকে মারধর শুরু করলে মিন্নি তখনই এগিয়ে আসে। মূলত মিন্নি রিফাত শরীফকে বাঁচাতে নয়, রিফাত শরীফকে মারধরের অভিযোগ থেকে নয়ন বন্ডকে বাঁচাতেই বারবার নয়ন বন্ডকে প্রতিহত করেন। কিন্তু সেই প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হন মিন্নি।’ এদিকে রিফাত শরীফ হত্যা মামলার তৃতীয় আসামি রিশান ফারাজীকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. শাহজাহান হোসেনের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তবে কোথা থেকে রিশানকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তদন্তের স্বার্থে তা জানায়নি পুলিশ। রিশান বরগুনা পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের ধানসিঁড়ি রোডের দুলাল ফরাজীর ছেলে এবং ওই মামলার দ্বিতীয় আসামি রিফাত ফরাজীর ছোট ভাই। এর আগে গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বরগুনার মাইঠা এলাকার বাবার বাসা থেকে মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরসহ মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তার বক্তব্য রেকর্ড করতে বরগুনার পুলিশ লাইনে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর দীর্ঘ ১০ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদ ও বিভিন্ন মাধ্যম থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ ও পুলিশের কৌশলী এবং বুদ্ধিদীপ্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে আটকে যান মিন্নি। বেরিয়ে আসে হত্যাকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততার প্রমাণ। এরপরই মিন্নিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর বুধবার বিকেল ৩টার দিকে বরগুনার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিন্নিকে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। পরে শুনানি শেষে মিন্নির পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী
Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031