সৈয়দ রুবেল, ঝালকাঠি জেলা প্রতিনিধি:
ভিটেমাটি থেকে উৎখাত করতে বসত ঘরের বাইরে আড়াঁর সাথে ইয়াবা রেখে পুলিশ দিয়ে ফাঁসানোর ঘটনাই যেনো ভাগ্য উন্নয়নের সুযোগ।
সদ্য এ সংখ্যালঘু পরিবারটির উপর অমানবিক নির্যাতন ও সবিতার সংগ্রামী জীবনের পথচলা বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকরা তুলে ধরলে মানবিকতা ও ধর্মীয় সম্প্রিতীর অন্যন্য উদাহরন নিয়ে এগিয়ে আসেন ঝালকাঠি চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক যুবলীগ নেতা ছবির হোসেন।
তার একক সহযোগীতায় ফুটপাত থেকে তুলে এনে জীবন সংগ্রামী সবিতাকে একটি সাজানো দোকান ঘর ও সাথে বিক্রির জন্য নতুন সুতা-স্যান্ডেল।
০৫/০৮/২০২০ইং তারিখ বুধবার সকালে ঝালকাঠি চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক যুবলীগ নেতা ছবির হোসেন এলাকাবাসীর উপস্থিততে সবিতার হাতে তুলে দেন নতুন সাজানো-গুছানো দোকানের চাবী।
ঝালকাঠি সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের চামটা গ্রামে বংশ পরম পারায় বসবাস করে আসছে সংখ্যালঘু মুচি এই পরিবারটি ।
বাবার মৃত্যুর পর ৫শতাংশ জমির ২শতাংশ বাসন্ডা নদীতে ভেঙ্গে যাওয়ায় ৩শতাংশ জমিতে একটা ভাঙ্গা বসত ঘরে মা, ৪বোন ও এক ভাইয়ের পরিবার কোন ভাবে বসবাস করছে এই নারী মূচি সবিতা।
সবার ছোট সবিতা ভাইয়ের একার উপার্জনে সংসার না চলায় নারী হয়েও জীবিকার তাগিদে রাস্তার পাশে ফুটপাতে বসে অন্যের জুতা স্যান্ডেল মেরামত করে ১২টি বছর ধরে সংসার চালাতে সহযোগীতা করে আসছে সবিতা ।
এ অবস্থায় সেই জমিটুকু গ্রাস করতে এলাকার একটি ভূমীলোভী চক্র গত ২১ জুলাই সোমবার দুপুর ১২টায় তাদের বসত ঘরের বাইরে আড়াঁর সাথে ১১পিচ ইয়াবা গুজে রেখে পুলিশকে সংবাদ দিয়ে উদ্ধারের নাটক সাজায় ও তার শ্রমজীবী ভাই রবিন দাসকে আটক করলে তারা আরো বিপর্যয়ের মধ্যে পরে যায় ।
এনিয়ে ঝালকাঠির স্থানীয় প্রায় সকল সাংবাদিক ষড়যন্ত্রমূলক ইয়াবা নাটকের বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করে ও নারী মুচি সবিতা দাসের লড়াকু জীবনের বিষয়টি উঠে আসলে জেলাজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়টি নজড়ে আসলে চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক ও যুবলীগের মানবতাবাদী নেতা ছবির হোসেন এগিয়ে আসেন ও তাকে কি ধরনের সহযোগীতা করলে দু’বেলা দু’মুঠো খেয়ে বাচতে পারে তাই সে স্থানীয় সাংবাদিক ও বন্ধুদের সাথে আলোচনা করে।
অতপর তরুন সমাজ সেবক ছবির হোসেন এক লাখ টাকা ব্যয় করে একটি নতুন দোকান ঘর নির্মান ও দোকানের জন্য পুজি হিসাবে নতুন জুতা-স্যান্ডেল স্বজ্জিত করে সবিতাকে পুর্নবাসিত করে মানবিকতা ও ধর্মীয় সম্প্রিতীর অন্যন্য নজীর রাখেন।
এ ব্যাপারে আবেগাপ্লুত ছবির হোসেন তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, সংবাদ মাধ্যমে একজন নারী হয়েও মুচির কাজে নিয়োজিত সবিতার ঘটনাটি জানতে পেরে একদিন তাদের বাড়ীতে গিয়ে দেখতে পাই সেদিন দুপুরে পরিবারের মুখে খাবার খাওয়ানোর মতো টাকাও রোজগার করতে পারেনি সবিতা। দেখে আমার খুবই কষ্ট হয় ও নিজের বিবেকের তাড়নায় সবিতার জন্য কিছু করার তাগিদ অনুভব হয়। যে কারনে সে যাতে ব্যবসা করে নিশ্চিন্তে পরিবারের সকলকে নিয়ে দুমুঠো ভাত খেতে পারে সেই উদ্দেশ্যে এই দোকান ঘরটি নির্মান করে ও তাতে নতুন মালামাল উঠিয়ে দিয়েছি। সবিতার পাশে দাড়াতে পেরে আত্মতৃপ্তী অনুভব করছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের সমাজের স্বচ্ছল মানুষগুলো প্রত্যেক জন যদি একজন করে সবিতার পাশে দাড়াতো তাহলে আমাদের দেশের দৃশ্যটাই বদলে যেতো।
এসময় নিজের নতুন দোকান আর বেচাকেনার জন্য নতুন জুতার স্যান্ডেল পেয়ে নারী মুচি সবিতা দাস জনদরদী ও তরুন সমাজসেবক ছবির হোসেনের প্রতি চীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সংগ্রামী এ যুবতী এতদিন দেশ বা সমাজের কাছ থেকে কোন সহায়তা না পেলেও প্রতিনিয়তই পেয়েছে অত্যাচার আর অবহেলা। পৈতিক ভিটামাটি টুকু রক্ষা আর দু’মুঠো আহারের ব্যবস্থা করতে প্রতিনিয়ত করতে হলেও আজ এ পুর্নবাসন ।