৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

করোনা চিকিৎসায় আশার আলো দেখাচ্ছে মাগুরার কোম্পানি ইনসেপ্টা ফার্মা

অভিযোগ
প্রকাশিত এপ্রিল ৯, ২০২০
করোনা চিকিৎসায় আশার আলো দেখাচ্ছে মাগুরার কোম্পানি ইনসেপ্টা ফার্মা

ফারুক আহমেদ, মাগুরা প্রতিনিধি : করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় বেশ কিছু ঔষধ এবং ভ্যাক্সিন তৈরি নিয়ে বিশ্বব্যাপী গবেষণা চলছে।

 

ইতিমধ্যে একটি ঔষধ বিভিন্ন ছোট পরিসরের গবেষণায় বেশ আশার আলো দেখিয়েছে। সেটা হল হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন, ঔষধটি প্রথমত আবিষ্কিৃত হয়েছিল ম্যালেরিয়া রোগের চিকিৎসার জন্য, কিন্তু বর্তমানে ব্যবহার করা হচ্ছে আর্থ্রাইটিস গেস লুপাস এরিথমেটোসাস রোগের চিকিৎসায়। বিভিন্ন গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, চায়না এবং আরও বেশ কিছু দেশে প্রাথমিকভাবে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন বেশ সফলতা দেখিয়েছে। ঔষধটি বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হাজারো রোগীর জন্য ব্যবহার হচ্ছে।

 

জাতীয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর (ডিজিডিএ) দেশীয় কোম্পানিগুলোকে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন উৎপাদন এবং সংরক্ষণ করতে নির্দেশ দিয়েছে। মাত্র ২ টি দেশী কোম্পানি এই ঔষধটি উৎপাদন এবং বাজারজাত করে। ইনসেপ্টা ফার্মা এটি বাজারজাত করে আসছে বিগত ১৫ বছর ধরে, যা বাজারে রিকোনিল নামে পরিচিত। মূলত এটিই বাজারে সর্বাধিক প্রচলিত এবং সর্বত্র পাওয়া যায়।

 

বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংস্থাও এই ঔষধটি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কার্যকরী বলে মনে করছে। এ কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য ইউএসএফডিএ জরুরি ভিত্তিতে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন এর অনুমোদন দিয়েছে। চায়না এবং ফ্রান্সের স্বাস্থ্য সংস্থাও তাদের করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় এই ঔষধটি ব্যবহার করেছে। ইন্ডিয়ান মেডিকেল এসোসিয়েশন করোনা আক্রান্ত রোগীদের পাশাপাশি যারা ক্রমাগত করোনা আক্রান্ত রোগীদের সংস্পর্শে আসছেন বা সেবা দিচ্ছেন, তাদের জন্যও প্রতিরোধক হিসেবে ঔষধটি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে।

 

দেশের মানুষের কথা বিবেচনা করে চিকিৎসকের নাগালের মধ্যে রাখার জন্য ইনসেপ্টা ফার্মা ইতিমধ্যে তেজগাঁও কেন্দ্রীয় ঔষধ সংরক্ষণাগারকে (সিএমএসডি) ৩০ লাখ রিকোনিল ট্যাবলেট সরবরাহ করেছে। এমনকি জাতীয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর (ডিজিডিএ) কেও ৩ লাখ রিকোনিল ট্যাবলেট বিনামুল্যে হস্তান্তর করেছে। এ প্রসঙ্গে বলে রাখা দরকার, রিকোনিল ট্যাবলেট অনেক আগে থেকেই ব্রিটিশ স্বাস্থ্য সংস্থা (ইউকে এমএইচআরএ) অনুমোদিত এবং ইনসেপ্টা বিগত অনেক বছর ধরেই এটি ব্রিটেনে রপ্তানি করে আসছে।

 

শুধু তাই না, ইনসেপ্টা অতিদ্রুত আরও কিছু ঔষধ যেমন ফ্যাভিপাইরাভির, রিটোনাভির/লুপিনাভির কম্বিনেশন বাজারজাত করতে যাচ্ছে। এছাড়াও ইনসেপ্টা রেমিডিসিভিরসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ঔষধ আনার চেষ্টা করছে। এসব ঔষধ করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিষেধক হিসেবে সফলতার সাথে কাজ করবে বলে আশা করছেন গবেষকরা। কোভিডা-১৯ এর কারণে এমন একটি সংকটময় মুহূর্তে উন্নত দেশগুলোসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যখন ঔষধের স্বল্পতায় ভুগছে, তখন স্বস্তির বিষয় হচ্ছে যে বাংলাদেশে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন এর মত একটি ঔষধ পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে, যা কিনা যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য চিকিৎসকদের কাজে আসতে পারে। এটি নিঃসন্দেহে দেশের জন্য একটি সুসংবাদ।

 

উল্লেখ্য ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের কর্ণধার মোঃ মুক্তাদির রহমানের বাড়ি খুলনা বিভাগের মাগুরা জেলার বেলনগর গ্রামে। তার প্রতিষ্ঠিত ইনসেপ্টা ফার্মা কোম্পানি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করার জন্য সরকারের সাথে থেকে জনগণের সেবায় মানবেতর কাজ করে যাবে।

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031