আব্দুল করিম চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি ঃ-
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় রোহিঙ্গা বসতি ও এলাকায় মাদক ব্যবসার বিস্তার ঘটানোর অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা সদরের বিছামারা, বাগানঘোনা ও ঠান্ডাঝিরি এলাকায় পাহাড়ের চূড়ায় খন্ড খন্ড জমিতে গড়ে উঠা রোহিঙ্গা বসতি এলাকায় ওপেন সিক্রেটভাবে চলছে মাদকের কারবার। আর এসব বেআইনী কাজে রাজনৈতিক মদদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে খোদ এলাকার এক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এক সময়কার সবুজে ঘেরা বাগানঘোনা ও ঠান্ডাঝিরি এলাকায় গত কয়েক বছর যাবৎ রোহিঙ্গা বসতি বাড়তে থাকে। ওই এলাকার এক প্রভাবশালী মহলের কাছ থেকে জমি ক্রয় করে এসব রোহিঙ্গারা নিজেদের অনেকটা নিরাপদ ভেবে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। বর্তমানে ওই এলাকার মোহাম্মদ ইউছুপ, মোঃ সেলিম, পাতলী বিবি, ফরিদ, মোক্তার হোসেন, মোহাম্মদ সুলতান, ইউছুপ, নুরুল ইসলাম, আবু তৈয়ব, পুতিক্কা, সিকান্দর, মনির আহাম্মদসহ অন্তত পঞ্চাশটির অধিক পরিবার বসতি গড়ে তোলেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা জানান- এলাকার প্রভাবশালী আব্দুর রহমান (ওরফে আব্দুর রহমান মিস্ত্রী) ও তার ছেলেরা দুই গ্রামে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জমি বিক্রয়ের মাধ্যমে বসতি তৈরীতে সহযোগিতা করেছে।
বাগান ঘোনা এলাকার বাসিন্দা বাবুল জানান- প্রভাবশালী মহলটি নতুন রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার কারনে স্থানীয়রা তাদের বিরুদ্ধে কোন ভাবে প্রতিবাদ করতে পারেনা। রোহিঙ্গা আশ্রয়ের পাশাপাশি ওই পরিবারটি মাদকের বিস্তারে সহযোগিতা করছে।
সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুদ্দিন শিমুল জানান, বাগানঘোনা ও ঠান্ডাঝিরি রোহিঙ্গা পল্লী এলাকায় মাদক ও অসামাজিক কার্যকলাপ হওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। সাম্প্রতিক সময়ে মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে মাদক ও রোহিঙ্গা আশ্রয়দাতারা বিচলিত হয়ে আমাকে মামলা-হামলার জড়িয়েছে।
বাগানঘোনা এলাকায় মাদকের বিস্তার ও রোহিঙ্গা বসতীর বিরুদ্ধে স্থানীয়রা উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করেছেন। এই প্রসঙ্গে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাদিয়া আফরিন কচি বলেন- ঘটনার বিষয়ে মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তের জন্য গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্প্রতি চট্টগ্রামে ১৩ লক্ষ ইয়াবাসহ আটক মোহাম্মদ হাসানের পিতা বিছামারা এলাকায় কাঠ ব্যবসায়ী ওসমান গণির আশ্রয়ে রয়েছেন। এছাড়াও বাগানঘোনায় আশ্রিত সিরাজ সালাম চট্টগ্রাম হাইওয়ে পুলিশের কাছে এবং তার স্ত্রী বিমান বন্দরে ইয়াবাসহ ইতোপূর্বে আটক হন। এই ধরনের মাদকের নানা কর্মকান্ডে বাগানঘোনা এলাকার প্রভাবশালী ওই পরিবারটির রাজনৈতিক মদদ রয়েছে বলে স্থানীয় একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।