মোঃ বাদশা মিয়া,বিশেষ প্রতিনিধি-লালমনিরহাট:
নকশা পরিবর্তন করে শহীদ মিনার পুনঃনির্মান কাজ বন্ধ করতে লিগ্যাল নোটিশ পাওয়ার পর এবার মেয়রকে শোকজপত্র প্রেরণ করেন আদালত।
সোমবার(১৭ ফেব্রুয়ারি) লালমনিরহাটের সিনিয়র সহকারী জজ আদালত এ শোকজপত্র পাঠান।
এর আগে তিন দিনের সময় দিয়ে বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) পৌর মেয়রকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান লালমনিরহাট জজ আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান হাফিজ। যার কোনো জবাব দাখিল না করায় লালমনিরহাট সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালক সৈয়দ সুফী মো. তাহেরুল ইসলাম বাদী হয়ে সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালত এ আদেশ দেন।
আদালত ও লিগ্যাল নোটিশ সুত্রে জানা গেছে, লালমনিরহাট পৌরসভার সাপ্টানা মৌজার মাতৃমঙ্গল কেন্দ্রের পাশে ১৯৭২ সালে ১৪.৫০ শতাংশ জমির উপর সড়কের পাশে পশ্চিম মুখো দৃষ্টিনন্দন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি নির্মিত হয়। সেই থেকে জেলাবাসী বিভিন্ন কর্মসূচি এ শহীদ মিনারে পালন করে আসছেন। এরই মধ্যে শহীদ মিনারের পাশে আলিসান বাড়ি নির্মাণ করেন জেলার প্রভাবশালী ব্যাক্তি। যা শহীদ মিনারের কারনে ভালো করে দেখা যাচ্ছে না।
প্রভাবশালীর এই বাড়িটি দৃষ্টিনন্দন করতে শহীদ মিনারটি স্থানান্তর করতে এবং পুনঃনির্মাণের নামে নকশা পরিবর্তন করে শহীদ মিনার নির্মাণ কাজ শুরু করে পৌরসভা। এতে পুনঃনির্মাণ করা শহীদ মিনারের মূল বেদি পরিবর্তন করে উত্তর-পূর্ব কোণায় নেওয়া হচ্ছে। ফলে জৌলুস ও মর্যাদা হারাচ্ছে শহীদ মিনার।
এদিকে পুনঃনির্মাণ কাজ বন্ধ করতে আন্দোলনে নেমে পড়েন জেলার বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সাধারণ মানুষ। সরকারের বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সৌন্দর্য ফেরাতে ব্যর্থ হয়ে লালমনিরহাট সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সাংস্কৃতিক কর্মী সৈয়দ সুফী মো. তাহেরুল ইসলাম বাদী হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান হাফিজ শহীদ মিনার পুনঃনির্মান কাজ বন্ধ করতে বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) তিন দিনের সময় দিয়ে পৌরসভার মেয়রকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। সময় অতিবাহিত হলেও জবাব দাখিল না করে নির্মাণ কাজ চলমান রাখেন পৌরসভার মেয়র রিয়াজুল ইসলাম রিন্টু।
এ ঘটনায় দ্রুত কাজ বন্ধ করতে লালমনিরহাট সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সাংস্কৃতিক কর্মী সৈয়দ সুফী মো. তাহেরুল ইসলাম বাদী হয়ে সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা (৩০/২০২০) দায়ের করেন। মামলাটি আমলে নিয়ে আদালতের বিচারক আগামী ১০ দিনের মধ্যে ‘কেন নির্মাণ কাজে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞ দেওয়া হবে না’ মর্মে উপযুক্ত ব্যাখ্যা চেয়ে পৌর মেয়রকে শোকজ পত্র পাঠানো হয়।
জজ আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান হাফিজ বাংলানিউজকে বলেন, বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পৌর মেয়রকে তিন দিনের মধ্যে জবাব চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু তার জবাব না দেওয়ায় বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করেন এবং মেয়রকে শোকজ করেছেন।