৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৯শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

আশুলিয়ায় হঠাৎ কাউয়া ফেস্টুনের আবির্ভাব

অভিযোগ
প্রকাশিত নভেম্বর ১১, ২০১৯
আশুলিয়ায় হঠাৎ কাউয়া ফেস্টুনের আবির্ভাব

পুনম শাহরিয়ার ঋতু,বিশেষ প্রতিনিধি :

 

ঢাকার সাভার ও আশুলিয়ার মহাসড়কের বিভিন্ন রুটের গুরুত্বপুর্ণ পয়েন্টে হঠাৎ কাউয়ার ছবি সম্বলিত পোষ্টারে ছেয়ে গেছে। প্রায় পোষ্টার ও ফেস্টুনে কাউয়ার ছবি দিয়ে ‌‘কাউয়া ও হাইব্রিডমুক্ত যুবলীগ চাই’ লেখা রয়েছে। সেই সাথে নিচে লেখা আছে প্রচারে আশুলিয়া থানা যুবলীগ।

 

কোথা হতে আসলো এ পোষ্টার? কে লাগিয়েছে কেনই বা লাগিয়েছে আর কারাই বা কাউয়া এরকম অসংখ্য প্রশ্ন ঘোরপাক খাচ্ছিল জনমনে।

 

এসব পোষ্টার সরিয়ে নেওয়া নিয়ে মামলা হামলাও হয়েছে। তবুও অনেক জায়গায় এই কাউয়ার ছবি সম্বলিত পোষ্টার ও ফেস্টুন রয়ে গেছে ।

 

এখনো ‌‘কাউয়া ও হাইব্রিডমুক্ত যুবলীগ চাই’ লেখা ও কাউয়ার ছবিসহ এই পোষ্টার ও ফেস্টুনের রহস্য খুজছে অনেকেই।

 

সরেজমিনে সাভার ও আশুলিয়ার বিভিন্ন মহাসড়ক ঘুরে দেখা যায়, বিশমাইল, নবীনগর, বাইপাইল, জামগড়া, জিরাব এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে টাঙানো হয়েছে এই ফেস্টুন। তবে কে লাগিয়েছে, কাদের উদ্দেশ্যে লাগিয়েছে বিষয়টি জানেন না কেউ। যার চোখে পড়ছে তারাই বিষয়টি নিয়ে করছে হাসাহাসি।

 

একে অপরের জিজ্ঞাসার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো বিষয়টি। তবে গত শুক্রবার রাত ৩ টার দিকে এই ফেস্টুন অপসারনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে এলাকাবাসী নিশ্চিত না হলেও জানতে পারে কারা লাগিয়েছে এই ফেস্টুন আর কাদের উদ্দেশ্যে লাগানো হয়েছে।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাবেক যুবলীগের কর্মীরা আশুলিয়া থানা যুবলীগের ব্যানারে বিভিন্ন অপপ্রচার চালিয়ে থানা যুবলীগের সন্মানহানী করে আসছিলো।

 

এঘটনায় থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি অপপ্রচারে ব্যবহৃত ব্যানার ফেস্টুন খুলে ফেলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সেই মোতাবেক শুক্রবার (৮ নভেম্বর) রাতে যুবলীগ কর্মী রিপন মিয়া, ফারুক, শিপু, রিপন, বাবু ও নয়ন শুক্রবার রাতে ইয়ারপুর ও জামগড়া এলাকায় অপপ্রচারে ব্যবহৃত ব্যানার ফেস্টুন খুলে পিকআপ গাড়িতে করে জামগড়া হইতে নরসিংহপুরের দিকে যাচ্ছিলো। বিষয়টি জানতে পেরে রাত তিনটার দিকে অপপ্রচারকারীরা যুবলীগ কর্মীদের গতিরোধ করে এবং উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে।

 

এ ঘটনায় উভয়পক্ষের অন্তত ৭ জন কর্মী আহত হয়। পরে আহতদের মধ্যে একজনের স্ত্রী চায়না বেগম শনিবার (৯ নভেম্বর) সকালে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৭/৮ জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করে। এই মামলার দুই নম্বর আসামি উজ্জল ভুঁইয়াকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

 

এই মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন, রুবেল আহম্মেদ ভূইয়া (৩৮), জামগড়া ভূইয়াপাড়া এলাকার ঝড়ু ভূইয়ার ছেলে উজ্জল ভূইয়া (৩৫), জসিম উদ্দিনের ছেলে নাজমুল হক ইমু (২২), জালাল মোল্লার ছেলে ময়না মোল্লা (৩৫), মোঃ সম্রাট (৩০), তমিজ মীরের ছেলে সুমন মীরসহ (২৮) অজ্ঞাতনামা আরও ৭-৮ জন।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাউয়া নিয়ে হাসাহাসি করা এক পথচারীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘শুনলাম কাউয়ার এই ফেস্টুন লাগিয়েছে সাবেক যুবলীগের কর্মীরা। আর এই ফেস্টুন নাকি বর্তমান যুবলীগের উদ্দেশ্যে লাগানো হয়েছে। তাই বর্তমান যুবলীগের নেতা কর্মীরা রাতের আধারে এই ফেস্টুন অপসারন করার চেষ্টা করে।’

অপর পথচারী বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই পদ বঞ্চিতরা বর্তমান যুবলীগের নামে অপপ্রচার চালিয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় তারা এই কাউয়ার পোষ্টারে ছেয়ে দেয়।ফেস্টুন অপসারনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলেও জানান তিনি।’

 

এব্যাপারে মামলার প্রধান আসামি রুবেল ভুইয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমি একজন গার্মেন্টস ব্যবসায়ী এবং ‘বিজিএমইএ’ এর সদস্য। রাত তিনটার সময় বাড়ি থেকে বের হয়ে দুই কিলোমিটার দুরে গিয়ে এরকম সংঘর্ষে জড়ানোর প্রশ্নই আসে না। আমাকে হেয় করার জন্য উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে এই মামলায় ফাঁসানে হয়েছে।’

 

আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহবায়ক কবির হোসেন সরকার বলেন, ‘হামলাকারীরা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী, বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের সাথে জড়িত। এর আগেও তাদের অপপ্রচারের বিষয়ে আশুলিয়া থানা যুবলীগের সদস্য ও শিমুলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক আমির হোসেন জয় আশুলিয়া থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেছেন।

 

শুক্রবার রাতে সংগঠনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অপপ্রচারে ব্যবহৃত ব্যানার ফেস্টুন খুলে আনার সময় আমার কর্মীদের কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক দোষীদের শাস্তির দাবি জানাই।’

 

এভাবে কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করে দেশের উন্নয়নের সঙ্গী হয়ে প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে সংঘবদ্ধ হয়ে কাজ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন সচেতন মহল।

 

আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম সুমন বলেন, ‘যুবলীগ কর্মীদের মারধরের ঘটনায় আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এঘটনায় আহতদেরকে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং মামলার অভিযুক্ত আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।’

 

আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রিজাউল হক বলেন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড যেই করুক কেন তাকে আইনের আওতায় আনা হবে

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031