৯ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১লা জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

ডিআইজি মিজানের কাছ থেকে ঘুষ: দুদক পরিচালক বাছির সাময়িক বরখাস্ত

অভিযোগ
প্রকাশিত জুন ১০, ২০১৯
ডিআইজি মিজানের কাছ থেকে ঘুষ: দুদক পরিচালক বাছির সাময়িক বরখাস্ত

অভিযোগ ডেস্ক : অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মুখে থাকা পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমানের কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকার ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠার পর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

সোমবার বিকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় প্রধান কার্যালয়ে দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এতথ্য জানান।

তিনি বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তির কাছে অভিযোগের অনুসন্ধানের তথ্য প্রকাশ করায় চাকরির শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে এবং ঘুষ লেনদেনসহ সমস্ত অভিযোগ তদন্তের স্বার্থে খন্দকার এনামুল বাছিরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হল।

বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তা মিজান গত রোববার একটি বেসরকারি টেলিভিশনে দাবি করেন, অবৈধ সম্পদ অর্জনের থেকে রেহাই দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ওই অভিযোগের অনুসন্ধান কর্মকর্তা এনামুল বাছির তার কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেন এবং তার সঙ্গে তদন্তের তথ্য বিনিময় করেন।

তবে দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির দাবি করেছেন, তিনি কোনো ঘুষ নেননি।

টেলিভিশনে প্রচারিত ওই ‘বিশেষ সংবাদে’ ঘুষ লেনদেনের সপক্ষে ডিআইজি মিজান ও এনামুল বাছিরের মোবাইল কথোপকথনের কয়েকটি অডিও ক্লিপও শোনানো হয়।

এঘটনায় রোববারই দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখতকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতেই বাছিরকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ইকবাল মাহমুদ জানান।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, “আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, কমিশনের তথ্য অভিযুক্ত ব্যক্তির কাছে প্রকাশ করাটা কমিশনের চাকরিবিধির শৃঙ্খলার পরিপন্থি এবং সেই কারণে খন্দকার এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ এসেছে সেগুলোর তদন্তের স্বার্থে আমরা তাকে আজকে থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছি।

ঘুষ লেনদেনের বিষয়ে আলদা তদন্ত হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনি ঘুষ দিতে পারেন না। ঘুষ দেওয়ার কথা বলতে পারেন না। তা আমাদের আইনে ফৌজদারি অপরাধ। ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হলে পরে মামলা হবে।”

এক নারীকে জোর করে বিয়ের পর নির্যাতন চালানোর অভিযোগ ওঠার পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে গত বছর জানুয়ারিতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে মিজানকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়।

এর পর ৩ মে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। প্রথমে এর অনুসন্ধান কর্মকর্তা ছিলেন দুদকের উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী; পরে এই দায়িত্ব পান এনামুল বাছির।

মিজানের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের প্রতিবেদন এনামুল বাছির এখনও কমিশনে জমা দেননি বলে জানান ইকবাল মাহমুদ।

তিনি বলেন, “যেহেতু কোনো রিপোর্ট প্রদান করেননি সেহেতু এনামুল বাছিরকে ওই অনুসন্ধানের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছি। এখন নতুন করে একজন পরিচালককে এই অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হবে।

“অভিযুক্ত ব্যক্তি মিজান এবং তার স্ত্রীর সম্পদের বিষয়ে যতটুকু অনুসন্ধান হয়েছে, তার ভিত্তিতে যাচাই-বাছাই করে নতুন যিনি দায়িত্ব দায়িত্ব পাবেন তিনি অনুসন্ধান শেষ করবেন।”

দুদকের ৮৭৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, “কমিশন কোনো একজন এমপ্লয়ির ইন্টিগ্রিটির (সততা) বিষয়ে গ্যারান্টি দিতে পারে না। কিন্তু কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী এসব অনৈতিক কাজে জড়িত থাকলে ব্যবস্থা হবে।”

তিনি বলেন, ‘ফরেনসিক রিপোর্ট’ ছাড়া ডিআইজি মিজান ও এনামুল বাছিরের মধ্যে কথিত ঘুষ লেনদেনের অডিও ক্লিপের বিশ্বাসযোগ্যতার বিষয়ের মন্তব্য করা মুশকিল।

“এ বিষয়ে বিভাগীয় তদন্তে ডিজি পর্যায়ে একজন কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে। তিনি দেখবেন সার্বিক বিষয়, ঘুষ লেনদেনসহ এনামুল বাছির কি করেছেন।

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031