৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৯শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

ঝালকাঠিতে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ইউপি সদস্যদের অভিযোগ দুদক কতৃক তদন্তের নির্দেশ

অভিযোগ
প্রকাশিত অক্টোবর ২২, ২০১৯
ঝালকাঠিতে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ইউপি সদস্যদের অভিযোগ দুদক কতৃক তদন্তের নির্দেশ

সৈয়দ রুবেল,ঝালকাঠি জেলা প্রতিনিধি:-

ঝালকাঠি সদর উপজেলার ১নং গাভা রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান গোলাম মাওলা মাছুম শেরোয়ানীর বিরুদ্ধে ইউপি সদস্যের যৌথভাবে দায়েরকৃত অভিযোগের তদন্ত করার জন্য ঝালকাঠি জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এবং এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দাখিল করারও নির্দেশ দিয়েছে ।

ইউপি সদস্যদের অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, গত ০৩/০২/২০১৯ইং তারিখ (স্মারক নং – ১১০) এ বর্নিত, ঝালকাঠি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কতৃক জরুরী ভিত্তিতে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ডিলার নিয়োগ, সুবিধাভোগীদের হালনাগাদ তালিকা প্রস্তুতকরন ও ওয়েব সাইডে আপলোড করন প্রসঙ্গে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়,ঝালকাঠির (৭ ও ৮ জানুয়ারী ২০১৯ তারিখের সুত্র নং ৩৯ ও ৫৬) এর ১নং সূত্র অনুযায়ী খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি খাতে চাল বিতরনে মার্চ ও এপ্রিল ২০১৯ সুবিধাভোগীদের তালিকা হাল নাগাদ,

অর্থাৎ মৃত ব্যক্তি, ভিজিডি কার্ড ধারী, এলাকা ছেড়ে অনত্র যাওয়াদের বাদ দিয়ে ঐ স্থানে বাছাইপূর্বক নতুন উপকারভোগী সংযুক্ত করন ও ২নং সূত্র অনুযায়ী হাস্কিং রাইস মিলের দুস্থ মহিলাদের অগ্রাধিকার দিয়ে তালিকাভুক্ত করে ইউনিয়ন কমিটির সদস্যদের নিয়ে সভা করার মাধ্যমে খাদ্য বান্ধব কমিটির সকল সদস্যদের স্বাক্ষরিত সভার রেজুলেশন কপি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর (স্মারক নং ১১০) নোটিশে উল্লেখিত সময়ের মধ্যে রেজুলেশন কপি জমাদানের জন্য চেয়ারম্যান মাছুম শেরোয়ানীকে নির্দেশ দেন।

সূত্রে বর্নিত উল্লেখিত তারিখের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর প্রেরন করার নির্দেশ থাকা সত্বেও উক্ত বার্তার নির্দেশ অমান্য করে ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মাওলা মাছুম শেরোয়ানীর প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ প্রকল্প ১০ টাকা কেজি দরে চাল সরকারি বিধিবিধান না মেনে ক্ষমতার প্রভাবে খাটিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ প্রকল্পাধীন খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে, ইউপি সদস্যদেরকে না জানিয়ে, পরিষদে এ বিষয় কোন সভা না করে চেয়ারম্যান মূল কার্ডধারী ব্যক্তিদের নাম বাদ দিয়ে তার ইচ্ছামত পোষা লাঠিয়াল বাহিনী ও দালাল দ্বারা এলাকার নিরীহ লোকদের সাথে প্রতারনার মাধ্যমে টাকার বিনীময়ে কার্ড বিক্রি করে।

এ ভাবে অবৈধভাবে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ প্রকল্প ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরন করার পূর্বে লাভবান হওয়ার জন্য এ কাজ করায় অভিযোগ কারী ইউপি সদস্যরা এ বিষয় আপত্তি করলে চেয়ারম্যান মাছুম শেরোয়ানী তাদের সাথে বিরুপ আচরন করেছে বলে অভিযোগে জানান।

অভিযোগকারীরা একই বছর ১৭/০৬/ ২০১৯ জেলা প্রশাসক ঝালকাঠি, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ঝালকাঠি, ডিডিএলজি ঝালকাঠি, দূর্নীতি দমন কমিশন বরিশাল ও সাংবাদিকদের অনুলিপি সংযুক্ত করার মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর প্রতিকার চেয়ে ইউপি সদস্য যৌথভাবে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদক বরিশালের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের (স্মারক নং- ০০.০১.০০০০.৭৪২.২৬.০০০.১৯.১৬৩১) ৩০ জুন ২০১৯ এর অভিযোগ নং ১৬৩/২০১৯ সূত্র মতে গত ০৩/১০/২০১৯ইং তারিখে দূর্নীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয়ের মহাপরিচালক (তদন্ত-১) মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত পত্রে ৭জন ইউপি সদস্যদের যৌথ দায়েরকৃত ১নং গাভা রামচন্দ্রপুর ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারি চাল বিতরন না করে আত্মসাত করার আনিত অভিযোগের অনুসন্ধান পূর্বক মতামত প্রতিবেদন প্রেরনের ব্যবস্থা গ্রহনান্তে ১মাসের মধ্যে দুদক কার্যালয় অবহিত করার জন্য জেলা প্রশাসক ঝালকাঠিকে অনুরোধ জানান।

এ বিষয়ে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক জোহর আলী এর নিকট মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‍‍বিষয়টি তদন্তের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হচ্ছে।

অপরদিকে তদন্তের বিষয় সম্পর্কে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং দুদকের নির্দেশে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসার বিষয়ে ইউপি সদস্যদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা জানান, আমরা আমাদের নির্বাচিত ওয়ার্ড থেকে সুবিধাবঞ্চিত, দরিদ্রেরকে ১০টাকা কেজি দরে চালের কার্ডে নাম দিয়েছিলাম সে মোতাবেক কার্ডের মাধ্যমে তারা চাল নিতো। আমরা যে দরিদ্রদের কার্ড দিয়েছি সে নামের কার্ডগুলো হঠাৎকরে চেয়ারম্যান মাছুম শেরোয়ানী সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে নিয়ে তার কাছে রাখেন। পরবর্তিতে চাল দেয়ার সময় আসলে এক নামের কার্ড থেকে ডিলারের মাধ্যমে স্বাক্ষর জালিয়াতি করে চেয়ারম্যানের লোকদেরকে চাল বিতরন করেন।

এ বিষয় কার্ডধারী সুবিধাভোগীর মধ্যে যারা চাল পাননি তারা চাল পাওয়ার জন্য গত এপ্রিল মাসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করে এবং ১০ এপ্রিল ২০১৯ কার্ড থাকা সত্যেও চাল না পাওয়া সুবিধা বঞ্চিতরা ঝালকাঠি প্রেসক্লাব সম্মুখে মানববন্ধন করে।

আমাদের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৩ অক্টোবর দুদক প্রধান কার্যালয় থেকে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগটির তদন্ত করতে জেলা প্রশাসন ঝালকাঠিকে আগামী ৩ তারিখের মধ্যে তদন্ত, মতামত সহ প্রতিবেদন প্রেরন করার কথা উল্লেখ থাকলেও প্রায় ২০দিন অতিবাহিত হলেও অামাদের জানামতে ইউনিয়ন পরিষদ বা আমাদের কারও কাছে কোন তদন্ত কর্মকর্তা অাসেননি।

অভিযোগের বিষয় ইউপি সদস্যরা আরো জানান, ইউনিয়নের সুবিধাভোগী কার্ডধারীদের মধ্য যারা বিগত দিনে মৃত্যু বরন করেছেন তাদের নামের কার্ড জমা করে চাল বিতরনে সময় মৃতব্যক্তির নামে স্বাক্ষর দেখিয়ে জালিয়াতি করে চাল আত্মসাৎ করে।

অনুসন্ধানে জানাযায়, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের বিশেষ প্রকল্পাধীন যার জমি আছে ঘর নেই তাদেরকে নতুন ঘর দেয়ার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ থেকে হতদরিদ্রদের তালিকা করে তাদের জমিতে ঘর নিমার্ন করার কাজ গাভারামচন্দ্রপুর ইউনিয়নে ইউপি চেয়ারম্যান নিজেই করেছিলেন। যেখানে হতো দরিদ্রের ঘর দেয়া হয়েছিলো সেখানে তাদের ঘর তৈরি সামগ্রী আনতে প্রায় তিন হাজার টাকা লেগেছে। শুধু তাই নয় ঘর তৈরিতে অনেক স্থানে রাজমিস্ত্রীদেরকেও অসহায় গরীবদের টাকা দিয়ে খুশি করতে হয়েছিলো।

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031