Sharing is caring!
তালহা চৌধুরী রুদ্র: ৩০ লক্ষ্য শহীদের রক্তে পাওয়া এই দেশটা, যখন নোংড়া করার প্রতিযোগিতায় একজন আরেক জনকে ছাপিয়ে যাচ্ছি। ঠিক তখনি, ফেসবুকে একটা ডাস্টবিনের ছবি দেখে দেশপ্রেম সত্তা জেগে উঠে এক তরুনের। পরে নিজ উপলব্ধি বোধে একটি লেখা পোষ্ট করে স্যোসিয়াল মিডিয়াতে। অল্প কয়েক লাইনের সেই পোস্টটিই ছিল বিডি ক্লিনের শুরু। দেশপ্রেমী সেই তরুণের ডাকে সাড়া দিয়ে একদল তরুণ মিলিত হয় শাহবাগে। সিদ্ধান্ত হয় তারা নিজেরাই দেশ পরিচ্ছন্নতার কাজে অংশগ্রহণ করবে। কথা নয় বরং কাজে বিশ্বাসী সেই টিমটি ২০১৬ সালের ৩ জুন রাতে নিজ হাতে পরিষ্কার করে শাহবাগ থেকে সার্ক ফুয়ারা পর্যন্ত রাস্তার সকল ময়লা আবর্জনা। আস্তে আস্তে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিবেদিত কিছু দেশ প্রেমিকদের নিয়ে শুরু হয় পরিচ্ছন্ন দেশ গড়ার নতুন এক যাত্রা। নিয়মিত শহীদ মিনার পরিষ্কার করার পাশাপাশি, সপ্তাহের নির্দিষ্ট একটি দিনে টিমের সবাই একসাথে হয়ে পরিষ্কার করা শুরু করল এক একটি এলাকা। চারদিকে ছড়িয়ে যেতে লাগলো বিডি ক্লিনের অগ্রযাত্রা। জেলায় জেলায় আলাদা আলাদা টিম গঠিত হলো। ততদিনে বিডি ক্লিনের সদস্য হয়েছে ছয় হাজার এরও বেশি।
২০১৮ সালে, সারা দেশ থেকে ১৫ শতাধিক সদস্য একসাথে মিলিত হয়ে একদিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কে পরিচ্ছন্ন ক্যাম্পাস হিসেবে ঘোষণা দিল। ২০১৯ সালে ১৮ শতাধিক সদস্য মিলে পরিচ্ছন্ন ওয়ার্ড হিসেবে ঘোষণা করল ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩১ নাম্বার ওয়ার্ড। ১৩ শতাধিক নিবেদিত প্রাণ বিডি ক্লিন সদস্য লক্ষ্মীপুর জেলা কেউ পরিচ্ছন্ন ঘোষণা করলো ২০২১ সালে।
দেশজুড়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ল পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ গড়ার এই মহান প্রত্যয়। অপরিচ্ছন্ন খাল এবং ডুবা নিজ হাতে পরিষ্কার করে দিল তারা। ময়লার ভাগাড়কে রূপ দিল ফুলের বাগানে। পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ গড়ার নেশা তাদের বেড়েই চলছে দিন দিন। কিন্তু এত বড় একটা দেশের বেশিরভাগ মানুষের চিন্তায় পরিবর্তন আনা সহজ কাজ নয়।
পরিচ্ছন্নতার সাথে এবার বিডি ক্লিন জোর দিল দূষণবিরোধী সচেতনতা বৃদ্ধিতে সেভ আর্থ সেভ বাংলাদেশ শিরোনামে আয়োজন করলো ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনীর। ২০১৯ সালে বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে, সারা দেশ থেকে যত্রতত্র পড়ে থাকা ৩০ লক্ষ প্লাস্টিক বোতল সংগ্রহ করে আয়োজন করা হয় সেভ আর্থ সেভ বাংলাদেশ শিরোনামে বিশেষ প্রদর্শনী। দূষণের বিরুদ্ধে মানুষের বিবেককে জাগ্রত করতে তাদের এই প্রচেষ্টা চলতেই থাকে। ২০২১ সালে কেমিক্যাল দূষণ রোধে সারা দেশ থেকে প্রায় পাঁচ কোটি সিগারেটের ফিল্টার কুড়িয়ে এনে বিজয় দিবস উদযাপন আয়োজন করে সেভ আর্থ সেভ বাংলাদেশ সিজন ২। তারই ধারাবাহিকতায় ২০২২ সালের বিজয় দিবস উদযাপনে আরো বড় পরিসরে আয়োজিত হয় সেভ আর্থ সেভ বাংলাদেশ সৃজন ৩। এবার সারা দেশ থেকে কুড়িয়ে আনে ৩ কোটি পরিত্যক্ত সিগারেট ফিল্টার, চল্লিশ লক্ষাধিক প্লাস্টিকের বোতল এবং ছয় টন এরও বেশি চিপসের প্যাকেট। নান্দনিক এই আয়োজনের দেশজুড়ে ছড়িয়ে যায় দূষণ বিরোধী জনসচেতনতা। একই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ২০২৩ সালের বিজয় দিবস উদযাপন হয় ভিন্ন এক পরিকল্পনায়। সারাদেশে একযোগে বিজয়ের ৫৩ বছর উপলক্ষে ৫৩ টি অপরিচ্ছন্ন ময়লার বাগার পরিচ্ছন্ন করে ৫৩ টি বাগান করে বিডি ক্লিন।
বর্তমানে প্রায় ৪৪ হাজার সদস্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাচ্ছে বিডি ক্লিনের সাথে। দেশের ৫৯টি জেলা এবং ১৫০ টিরও বেশি উপজেলায় ধারাবাহিকভাবে সপ্তাহে একদিন নির্দিষ্ট একটি এলাকা পরিষ্কার করার মাধ্যমে চলমান রয়েছে এই স্বপ্ন পূরণের কাজ। এরই পাশাপাশি ২০২৩ মানে এই বছরেই দেশের বিভিন্ন জেলায় চট্টগ্রাম, ঢাকা, বরিশালে সহ বিভিন্ন স্থানে পরিত্যাক্ত খাল, নালা পরিচ্ছন্ন করার মাধ্যমে বিডি ক্লিন তাদের আরো বেশি সক্ষমতা প্রকাশ করে। শুধুমাত্র বাইরের ময়লা নয়, বরং মনের ময়লা পরিষ্কারও বিডি ক্লিন ধারাবাহিকভাবে করে যাচ্ছে মানসিকতার উন্নয়নের চর্চা।
সমাজের অসচেতন মানুষের উপলব্ধিবোধকে নাড়িয়ে দিয়ে, পরিচ্ছন্ন দেশ গড়ার প্রত্যয়ে বেড়ে ওঠা বিডি ক্লিন এখন অষ্টম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর দৌরঘুড়ায়। প্রথম এবং দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী কেক কেটে উদযাপ%