১৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

নোয়াখালীতে পরকীয়ার জেরে প্রবাসীর হাতে মা-মেয়ে খুন।

Weekly Abhijug
প্রকাশিত জুন ১৫, ২০২৩

মোজাম্মেল হক লিটন, নোয়াখালী প্রতিনিধি:

পরকীয়া প্রেমিকের সাথে টাকা নিয়ে টানাপোড়েনে কারণে মা-মেয়েকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো.শহীদুল ইসলাম।

বুধবার (১৪ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সুধারাম মডেল থানা প্রাঙ্গণে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন পুলিশ সুপার মো.শহীদুল ইসলাম। এর আগে, একই দিন বেলা সাড়ে ১০টার দিকে নোয়াখালী পৌরসভার ৫নম্বর ওয়ার্ডের গুপ্তাংকের বার্লিংটন মোড় সংলগ্ন কচি মিয়ার বাসার দ্বিতীয় তলায় এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে ঘটনা ঘটে।

গ্রেফতারকৃত আলতাফ হোসেন (২৮) লক্ষীপুর জেলার রামগতি উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল মুনাফের বাড়ির মৃত আবুল কালামের ছেলে এবং ওমান প্রবাসী ছিল।

নিহতরা হলেন, নোয়াখালী পৌরসভার ৫নম্বর ওয়ার্ডের ফজলে আজিম কচি মিয়ার স্ত্রী নূর নাহার বেগম (৪০) ও তার মেয়ে হরিনারায়ণপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ফাতেমা আজিম প্রিয়ন্তী (১৬)।

সংবাদ সম্মেলনে এসপি বলেন, ভিকটিম নূর নাহার বেগমের সাথে প্রবাসে থাকা অবস্থায় রং নম্বরের সূত্র ধরে পরিচয় হয় আসামি আলতাফের। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে উঠে। এরপর ভিকটিম আসামি আলতাফকে ওমান থেকে দেশে এসে ব্যবসা করার জন্য বলে এবং ব্যবসার সম্পূর্ণ মূলধন এবং তাহার সকল দেনা বহন করার আশ্বাস দেয়। ভিকটিমের আশ্বাসে গত ১ সপ্তাহ আগে আসামি ওমান থেকে ভিসা বাতিল করে সব ছেড়ে দেশে চলে আসে। দেশে এসে আসামি ভিকটিম নূর নাহার বেগমের বাসায় ৪/৫ বার গিয়ে ব্যবসার টাকা দেওয়ার জন্য বললে ভিকটিম নুর নাহার বেগম ব্যবসার টাকা দিতে তালবাহানা করতে থাকে। বুধবার ১৪ জুন সকাল ১০টার দিকে পুনরায় টাকা চাওয়ার জন্য আসামি ভিকটিমের মাইজদী শহরের বার্লিংটন মোড়ের হক মঞ্জিলের বাসায় যান। তখন টাকা চাইলে ভিকটিম টাকা দিতে অস্বীকার করে।

এসপি আরও বলেন, এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে টাকা নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে আলতাফকে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় ভিকটিম। একপর্যায়ে আসামিকে ধাক্কা দিয়ে ঘর থেকে বের করে দিতে উদ্যত হয়। এতে আসামি আলতাফ ক্ষিপ্ত হয়ে তাহার সাথে থাকা ছুরি দিয়ে ভিকটিমকে তার কক্ষের ভিতরে উপর্যুপরি আঘাত করে। ওই সময় ভিকটিমের মেয়ে ফাতেহা আজিম প্রিয়ন্তী (১৬) মায়ের শোরচিৎকারের শব্দ শুনে মাকে রক্ষা করার জন্য এগিয়ে আসলে আসামি আলতাফ তাকেও উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে প্রিয়ন্তী দৌঁড়ে নিচ তলার ভাড়াটিয়ার বাসার দরজায় ধাক্কা দিলে ভাড়াটিয়া দরজা খুলে দেয়। দরজা খোলার সাথে সাথে প্রিয়ন্তী ডাইনিং রুমের মেঝেতে অজ্ঞান হয়ে লুটিয়ে পড়ে। প্রিয়ন্তীর পিছু পিছু আসামি আলতাফ হোসেন দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে ভিকটিম নুর নাহার বেগম ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করে। স্থানীয় লোকজন গুরুতরভাবে জখমপ্রাপ্ত প্রিয়ন্তীকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত আসামি আলতাফ হোসেনকে থানা হেফাজতে নিয়ে পুলিশ বিভিন্ন ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আসামি পুলিশের নিকট উপরোক্ত ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানায় এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরির কভার তাহার দেওয়া তথ্য মতে তাহার মেস থেকে জব্দ করা হয়। হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরি জব্দ করা হয়েছে। নিহতদের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031