৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

ঝিনাইদহে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প বিদ্যমান ও প্রত্যাহার প্রসঙ্গে ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত

অভিযোগ
প্রকাশিত আগস্ট ৯, ২০২০
ঝিনাইদহে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প বিদ্যমান ও প্রত্যাহার প্রসঙ্গে ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত

 

সুলতান আল একরাম,ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধিঃ

ঝিনাইদহ জেলা পুলিশের আয়োজনে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প বিদ্যমান রাখা বা প্রত্যাহার সংক্রান্ত বিষয়ে এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে।

 

রবিবার (৯ আগস্ট) বেলা তিনটার দিকে জেলা শিল্পকলা একাডেমিক ভবনের হলরুমে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।পুলিশ সুপার মোঃ হাসানুজ্জামান পিপিএম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব মোঃ আব্দুল হাই।

 

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য জনাবা খালেদা খানম এমনপি, জেলা প্রশাসক জনাব সরজ কুমার নাথ, সরকারি কেসি কলেজের অধ্যক্ষ জনাব, বিএম রেজাউল করিম,জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান,জনাব, কনক কান্তি দাস, এবং ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব সাইদুল করিম মিন্টু, প্রমুখ। এছাড়াও সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলার বিভিন্ন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা।

 

অনুষ্ঠানে জেলায় অবস্থিত সাতটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প বিদ্যমান রাখা বা প্রত্যাহার সংক্রান্ত মতামতের উপর বক্তব্য রাখেন বক্তারা। এতে ঐ সাতটি ক্যাম্পের অন্তর্ভুক্ত সকল শ্রেণী-পেশার লোকদের কাছ থেকে ক্যাম্প থাকা বা না থাকার মদ্ধে সুবিধা-অসুবিধা সংক্রান্ত মতামত নেওয়া হয়।

 

এসময় ক্যাম্পের আওতাধীন সকলেই ক্যাম্প থাকার এবং অস্থায়ী থেকে স্থায়ী করণ করার পক্ষে মতামত পেশ করেন।

উল্লেখ্যঃ খুলনা রেঞ্জাধীন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাসমূহে নিষিদ্ধঘোষিত পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টি, বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টি, চরমপন্থিসহ অন্যান্য নিষিদ্ধঘোষিত দলের তত্পরতা, চাঁদাদাবী, মুক্তিপণ আদায়, রাজনীতিবিদ ও সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের খুনসহ সার্বিক আইন-শৃঙ্খলার বড় ধরনের হুমকি হয়ে উঠছিল।

 

এরই প্রেক্ষিতে ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে বর্তমান ও তৎকালীন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মোঃ নাসিম খুলনা বিভাগের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিলে সরকার .২০০১ সালে খুলনা রেঞ্জের আওতাধিন জেলার দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ১৫৩ টি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করেন। পরবর্তীতে প্রয়োজনের নিরীখে মেহেরপুর জেলার সাহেবপুরে একটি স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপিত হয়। এনিয়ে বর্তমানে খুলনা রেঞ্জে স্থায়ী ক্যাম্পের সংখ্যা ১৫৪ টি। পরবর্তীতে স্থানীয় জনগণ, জনপ্রতিনিধি ও সুধীজনের চাহিদা তথ্য অনুরোধের প্রেক্ষিতে তৎকালীন পুলিশ প্রশাসনের মৌখিক আদেশে আরো ৬৪টি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প এবং রেঞ্জাধীন জেলা সমূহের স্থাপিত হয়।

 

এরই অংশ হিসেবে ঝিনাইদহ জেলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টি, বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্ট্‌ চরমপন্থীসহ অন্যান্য নিষিদ্ধ ঘোষিত দলের অপতৎপরতা রোধকল্পে এবং জেলার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে এ জেলায় ২৩ স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প প্রতিষ্ঠিত হয়।

 

এছাড়াও এলাকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সুধীজনের দাবির প্রেক্ষিতে আরও ৭টি অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। বর্তমানে উক্ত অস্থায়ী ক্যাম্প সমুহ বিদ্যমান রাখা বা প্রত্যাহার করা কিংবা এ ব্যাপারে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় কিনা সে বিষয়ে মতামতের লক্ষে এই ওয়ার্কশপের আয়োজন করেছেন জেলা পুলিশ।

 

ঝিনাইদহ জেলায় সাতটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প সংক্রান্ত তথ্যাদি। ১। হরিশংকরপুর পুলিশ ক্যাম্প, ঝিনাইদহ সদর ঝিনাইদহ। এটি হরিশংকরপুর ইউনিয়ন কাউন্সিল ভবনে ক্যাম্পের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ২। বংকিরা পুলিশ ক্যাম্প, ঝিনাইদহ সদর ঝিনাইদহ। এটি ৬৮ শতাংশ সরকারি খাস জমির উপর সেমিপাকা ঘর করে ক্যাম্পের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ঢাকা বরাদ্দকৃত টাকা দিয়ে উক্ত ক্যাম্পের সীমানা প্রাচীর ও গেইট নির্মাণ করা হয়েছে। ৩। নলডাঙ্গা পুলিশ ক্যাম্প, ঝিনাইদহ সদর ঝিনাইদহ। এটি নলডাঙ্গা ইউনিয়ন কাউন্সিলের পুরাতন পরিত্যক্ত ভবনে ক্যাম্পের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ৪। কাতলাগাড়ী পুলিশ ক্যাম্প, শৈলকুপা থানা ঝিনাইদহ। এটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিত্যক্ত ডরমেটরি ভবনে ক্যাম্পের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ৫। ভাটোই পুলিশ ক্যাম্প, শৈলকুপা থানা ঝিনাইদহ। এটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় সেমিপাকা টিনের ঘরে ক্যাম্পের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ৬। নারায়ন কান্দি পুলিশ ক্যাম্প, হরিনাকুন্ডু থানা ঝিনাইদহ। এটি দানসূত্রে উক্ত ক্যাম্পের জমির পরিমাণ ৫০ শতক। ক্যাম্পের ৬তলা ভীত বিশিষ্ট ৩ তলা ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। বর্তমানে ক্যাম্পের কার্যক্রম স্থানীয় একজন ব্যক্তি মালিকানাধীন সেমি পাকা ঘরে পরিচালিত হচ্ছে। সীমানাপ্রাচীর পূর্বেই তৈরি করা হয়েছে।
৭। লক্ষ্মীপুর পুলিশ ক্যাম্প, কোটচাঁদপুর থানা ঝিনাইদহ। এটি দানসুত্রে ক্যাম্পের জমির পরিমাণ ৪০ শতক। ক্যাম্পের পুরাতন সেমিপাকা ঘর ভেঙ্গে ৬ তলা বিশিষ্ট তিন তলা ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। বর্তমানে ক্যাম্পের কার্যক্রম স্থানীয় একটি স্কুলে পরিচালিত হচ্ছে। সীমানাপ্রাচীর পূর্বেই তৈরি করা হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031