Sharing is caring!
রবিউল আলম সবুজ…
নিউমার্কেটে থেকে কাজ শেষে রিক্সা খুজছি বসুন্ধরা যাবার উদ্দেশ্যে,
এই মামা যাবা নাকি??
— যাবো স্যার।
ভাড়া কত নিবে বসুন্ধরা??
— যা ইচ্ছা দিয়েন স্যার, ১০ টাকা কম দিয়েন স্যার প্রয়োজনে।।
আমি অবাক হয়ে বললাম, সবাই ১০ টাকা বেশি চাচ্ছে, আর তুমি কম কেনো??
— পংগু তো স্যার তাই কেউ যাইতে চাই নাহ স্যার, আমি খামু কি স্যার তাইলে???
অবাক হয়ে দেখলাম ওর একটা পা নাই, হায় আল্লাহ, এই কাঠ ফাটা রৌদ্রে এক পা দিয়ে মানুষ কিভাবে রিক্সা চালায়।।(ইঞ্জিন ছাড়া রিক্সা)
উঠে পরলাম উনার রিক্সাতে, সব কিছু জানতে চাইলাম,
উনার,
নামঃ মোহাম্মদ সোহাগ।
গ্রামঃ গাইবান্ধা।
বর্তমান ঠিকানাঃ পশ্চিম রাজাবাজার।
১.৫ বছর আগে এক বাস দুর্ঘটনায় তার একটি পা কেটে ফেলতে হয়। বাসায় ছোট একটা বাচ্চা আর স্ত্রী, স্ত্রী মানুষের বাসায় কাজ করেন কিন্তু সেটা দিয়ে সংসার চলে নাহ বললেই চলে।।
বললাম তুমি ভিক্ষা করলেই তো কাজ সহজ হয়ে যায়, তোমার থেকে অনেক সুস্থ মানুষ তো ভিক্ষা করে।
— লজ্জা লাগে স্যার, বিষ খাইয়া মইরা যামু স্যার কিন্তু মানুষের সামনে হাত পাততে পারুম নাহ।। কিছু টাকা জমাচ্ছি স্যার ২০০০ টাকা হলে একটা তরমুজের দোকান দিবো, রিক্সা চালাতে অনেক কষ্ট হয় স্যার।।
রিক্সায় বসে এক পাহাড় সমান চিন্তা এসে ভর করলো, কত ভালো রেখেছেন আল্লাহ আমাদের, তাই হয়তো অন্য কারো জীবন নিয়ে আমাদের কোন মাথা ব্যাথা নেই।। ভাবছিলাম এই জীবনের দায়ভার কি ওর একার, যদি একারই হয়, তাহলে মানুষ কি আসলেই মানুষের জন্য!!
রিক্সা থেকে নেমে উনাকে বললাম কত দিবো তোমাকে??
— যা মন চাই দেন স্যার।।
কিছু টাকা দিয়ে বললাম দেখোতো কত টাকা আছে।
— ২০০০ টাকা স্যার।
আজ থেকে কয়েকদিন আর রিক্সা চালিও নাহ, দেখো যেটা চিন্তা করেছো সেটা করতে পারো কিনা।।
— আচ্ছা স্যার।।
টাকা দিয়ে সে যেটাই করুক না কোনো, আফসোস নাই আমার, ভালোভাবে বাচার অধিকার সবার আছে, এটা সবার মৌলিক অধিকার, যেটা আমাদের সংবিধান নিশ্চিত করেছে।।
উফফ ওর মুখের হাসিটা।। আমার ঈদ উদযাপন শেষ , আজ আমার ঈদ ছিলো।। কারো মুখে হাসি ফুটিয়ে দেখুন, শান্তি পাবেন, যেটা অমুল্য
ভালো থাকুক সোহাগরা ।। ওরাই প্রকৃত যোদ্ধা, যারা দুই বেলা ভাত এর জন্য সংগ্রাম করে চলেছে, ওরাই সেলিব্রেটি যারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে পেট চালাবে কিন্তু ভিক্ষা করবে নাহ, ওরাই আজকের বাংলাদেশ।।