ওমর শাকিল, লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি::
লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ বাজারে একটি জুয়েলারির দোকানে কুড়িয়ে পাওয়া টাকার ব্যাগ ফিরিয়ে দিয়ে মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে প্রশংসিত হলেন স্থানীয় সংবাদকর্মী জনাব মো. আলী হোসেন। তিনি চন্দ্রগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি এবং একটি জাতীয় দৈনিক ও টিভি চ্যানেলের স্থানীয় প্রতিনিধি।টাকাসহ ব্যাগটি পাওয়ার ২ ঘণ্টা পর প্রকৃত মালিককে শনাক্ত করে তিনি তার হাতে ব্যাগটি তুলে দেন। রোববার (২৪ নভেম্বর) সকালে ওই দোকানে বাজারের দূরবর্তী আমানী লক্ষ্মীপুর গ্রামের রোকসানা নামের এক বাসিন্দা অসাবধানতাবশত ব্যাগটি ফেলে চলে যান। চিকিৎসার জন্য গয়না বিক্রি বাবদ পাওয়া টাকাগুলো হারিয়ে তিনি বাড়ি ফিরে বিহ্বল হয়ে পড়েন। পাওয়া-না পাওয়ার আশংকায় তিনি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন। ফের বাড়ি থেকে বাজারের পথে তিনি রাস্তায় খুঁজতে খুঁজতে ওই দোকানে ফিরে ব্যাগ পাওয়ার সংবাদ জেনে স্বস্তি বোধ করেন। পরে সমুদয় টাকাসহ ব্যাগটি হাতে পেয়ে তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিক দোকানে উপস্থিতদের তিনি জানান, টাকাগুলো ফিরে না পেলে তার জটিল রোগের অপারেশনসহ চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যেত। এজন্য তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। আলী হোসেন জানান, রোববার সকাল ১০টার দিকে তার স্ত্রীর এক জোড়া কানের দুল রিপেয়ারিং করার জন্য চন্দ্রগঞ্জ বাজারের লোকনাথ জুয়েলার্সের দোকানে যান তিনি। সেখানে কাজ করতে দিয়ে তিনি ফিরে যান। দুপুর ১টার দিকে মেরামতকৃত দুলগুলো ফেরত আনতে ফের ওই দোকানে যান। এসময় দোকানের ফ্লোরে অরক্ষিতভাবে মহিলাদের ব্যবহৃত একটি ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেন। ব্যাগটি কুড়িয়ে নিয়ে তাৎক্ষণিক দোকানের মালিক সমীর কর্মকারকে তিনি ইশারায় দোকানের বাইরে ডেকে নিয়ে আসেন। কিছু না বলে তার সামনেই ব্যাগটি খুলে তিনি দেখেন ১ হাজার টাকার ১৯টি নোট এবং ভাঙতি আরো কিছু টাকাসহ প্রায় ২০ হাজার টাকা রয়েছে। পরে টাকা ভর্তি ব্যাগটি ওই দোকানিকে বুঝিয়ে দিয়ে বলেন, টাকাগুলো যারই হোক, তিনি নিশ্চয় আপনার এখানে খুঁজতে আসবেন। যদি কেউ এসে থাকেন তাহলে যেন তাকে খবর পাঠানো হয়। এরপর তিনি ফিরে যান। বাসায় ফেরার কিছুক্ষণ পর সমীর নামক ওই দোকানি তাকে মুঠোফোনে ডেকে পাঠান। ডাক পেয়ে ওই দোকানে আসলে তিনি সেখানে মহিলাকে দেখতে পান। তার চোখেমুখে বিষন্নতার ছাপ। হতবিহবল তিনি। এসময় দোকানি তাকে (আলী হোসেনকে) উদ্দেশ্য করে জানান, এই ভদ্র মহিলা একটা টাকার ব্যাগ হারিয়েছেন মর্মে এখানে এসেখোঁজ করছেন। আপনি যে ব্যাগটি কুড়িয়ে পেয়েছেন সেটির প্রকৃত মালিক উনি কিনা খতিয়ে দেখেন।পরে শনাক্তকরণ বিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে সক্ষম হওয়ায় রোকসানা নামের ওই মহিলাকে টাকাসহ ব্যাগটি বুঝিয়ে দেন তিনি। টাকাসহ ব্যাগটি ফিরে পেয়ে তিনি সংবাদকর্মীর জন্য দোয়া করেন জানা যায়।