২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

যে কারণে বাবার হাতে নির্মমভাবে খুন হলো শিশু তুহিন

অভিযোগ
প্রকাশিত অক্টোবর ১৬, ২০১৯
যে কারণে বাবার হাতে নির্মমভাবে খুন হলো শিশু তুহিন

ফকির হাসান, সুনামগঞ্জ থেকে :-

পাঁচ বছরের শিশু তুহিনকে ঘুমন্ত অবস্থায় কোলে করে ঘরের বাইরে নিয়ে আসেন বাবা। আর বাবার কোলেই ঘুমন্ত অবস্থায় শিশু তুহিনকে ছুরি দিয়ে গলাকেটে খুন করেন চাচা নাসির উদ্দিন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তুহিন হত্যার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান।

ফুটন্ত ফুলের মতো এই শিশুকে নৃশংসভাবে হত্যার পেছনের কারণও উদঘাটন করেছে তদন্তকারী পুলিশরা।

এর ব্যাখ্যা দিয়ে এএসপি মিজানুর রহমান বলেন, মূলত নিজেকে বাঁচাতে এবং প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে শিশু তুহিনকে হত্যা করেছেন বাবা আব্দুল বাছির। তুহিনকে হত্যায় বাবার সঙ্গে অংশ নিয়েছেন চাচা নাছির উদ্দিন ও চাচাতো ভাই শাহরিয়ার। ঘটনার দিন শিশু তুহিনকে ঘুমন্ত অবস্থায় তার বাবা আব্দুল বাছির ঘর থেকে বের করে নিয়ে যান। এরপর তুহিনের বাবা, চাচা ও চাচাতো ভাই মিলে হত্যা করেন। এরপর তুহিনের পেটে দুটি ছুরি বিদ্ধ করে গাছে ঝুলিয়ে দেন।

হত্যার ঘটনায় জড়িত বলে স্বীকার করে সুনামগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে তুহিনের বাবা ও চাচা।

খুনিদের জবানবন্দি থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, মূলত প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে শিশু তুহিন হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। পারিবারিক বিরোধও এ খুন করতে উদ্বুদ্ধ করেছে। তুহিন হত্যায় জড়িত মূলত তিনজন। তারা হলেন – বাবা আব্দুল বাছির, চাচা নাছির উদ্দিন ও চাচাতো ভাই শাহরিয়ার। মূলত প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই তুহিনকে খুন করেছে এ তিনজন।

তুহিনের হত্যাকারী তার বাবা, চাচা এবং চাচাতো ভাই এই প্রথম কোনো হত্যা মামলার আসামি হননি; তিনি আরও একটি হত্যা মামলার পাশাপাশি আরও দুটি মামলার আসামি বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান এএসপি মিজানুর রহমান।

তিনি বলেন, দিরাইয়ের ওই এলাকায় আরও দুটি খুনের ঘটনা ঘটে। ওসব মামলার আসামিদের তালিকায় তুহিনের বাবা-চাচা এবং চাচাতো ভাইয়ের নাম রয়েছে।

একইরকম বক্তব্য পাওয়া গেছে স্থানীয়দের কাছ থেকে।

তারা বলছেন, পারিবারিক বিরোধ ও এক হত্যা মামলার জেরে বলি হলো তুহিন। আব্দুল বাছির প্রতিপক্ষের করা হত্যা মামলার আসামি। ওই মামলা থেকে নিজেকে বাঁচাতে সন্তানকে এভাবে নৃশংসভাবে খুন করেছেন আব্দুল বাছির।

এদিকে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কেজাউড়া গ্রামে শিশু তুহিন হত্যা মামলায় তুহিনের বাবা আবদুল বাছির ও চাচা আবদুল মোছাব্বির এবং জমসেদকে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

মঙ্গলবার বিকালে সুনামগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতের বিচারক শ্যাম কান্ত সিনহা এ রিমান্ড মঞ্জুর করনে।

এর আগে বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে ৩ জনকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবু তাহের মোল্লা।

প্রসঙ্গত, সোমবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের গচিয়া কেজাউড়া গ্রাম থেকে তুহিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে গ্রামের আবদুল বছির মিয়ার ছেলে।

হত্যাকারীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে শিশুটির কান, গলা ও প্যানিশ কেটে পাশবিক কায়দায় হত্যা করে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছিল। শিশুটির পেটে বিদ্ধ ছিল দুটি ধারালো ছুরি। শিশুর মরদেহে বিদ্ধ ছোরা দুটির হাতলে সোলেমান ও সালাতুলের নাম লেখা ছিল।

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031