১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

ডিসি বরখাস্ত হলেও বহাল তবিয়তে সাধনা

অভিযোগ
প্রকাশিত অক্টোবর ১১, ২০১৯
ডিসি বরখাস্ত হলেও বহাল তবিয়তে সাধনা

অভিযোগ ডেস্ক :- নারী কেলেঙ্কারিতে জামালপুরের সাবেক ডিসি আহমেদ কবীর বরখাস্ত হলেও একই অপরাধে দোষী সানজিদা ইয়াসমিন সাধনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গোপনীয় শাখায় অফিস সহকারী পদে বহাল তবিয়তেই রয়ে গেছেন।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গোপন কক্ষে নারী কেলেঙ্কার ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর সাবেক ডিসি আহমেদ কবীরকে বরখাস্ত করা হয়। একই সাথে তার সিএ সাখাওয়াত হোসেন, ফরাশম্যান সরোয়ার হোসেন, জারিকারক হাফিজুর রহমান ও ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মী পারুল বেগমকে বদলি করা হয়। কিন্তু সাধনার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নিয়ে গোপনীয় শাখাতেই বহাল রাখা হয়েছে।

ওই শাখার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা জানান, সাধনাকে বদলি বা তার কোনও শাস্তি না হওয়ায় বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে তাদের।

গুঞ্জন উঠেছে, সাধনার শাস্তি না হওয়া এবং বদলি না হবার পেছনে নাটের গুরু কে?

সাধনার সাথে সাবেক ডিসির যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনায় মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি ২৯ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) সাধনাকে দুই ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে। সেদিনই সাধনা ৫ দিনের ছুটির আবেদন করেন। এর আগে ২৬ আগস্ট (সোমবার) অফিসে এসে জ্ঞান হারান সাধনা। ২৭ আগস্ট (মঙ্গলবার) থেকে ৩ দিনের ছুটির আবেদন করেন তিনি। ওই তিন দিনের ছুটি শেষে ২৯ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) অফিসে এসে তিনি ১ সেপ্টেম্বর থেকে ফের ৫ দিনের ছুটির আবেদন করলে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন দিনের ছুটি মঞ্জুর হয়। এই ছুটি শেষ হবার পর থেকে এখনও অফিসে এসে হাজিরা খাতায় শুধু স্বাক্ষর দিয়ে চলে যান সাধনা।

জানা গেছে, তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসকের গোপনীয় শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলি ও রদবদল হয়েছে।

গোপনীয় শাখার সিএ কাম ইউডিএ সাখাওয়াত হোসেনকে প্রশাসনিক পদে পদোন্নতি দেয়ার পরও মৌখিক নির্দেশে এখানে বহাল রাখা হয়েছিল। পূর্বের পদে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে তাকে বদলি করা হয়। অফিস সহকারী ফারজানা বেগমকে শিক্ষা কল্যাণ শাখায়, ফরাশম্যান সরোয়ার হোসেনকে ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে পরিচ্ছন্ন-কর্মী পদে, জারিকারক হাফিজুর রহমানকে বকসীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে একই পদে ও ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মী পারুল বেগমকে নেজারত শাখায় বদলি করা হয়।

জামালপুরের জেলা প্রশাসক এনামুল হক বলেন, ওই ঘটনার পর থেকে গোপনীয় শাখাকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন এখনও হাতে আসেনি। তদন্ত প্রতিবেদনের কপি হাতে পেলে নির্দেশনা মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

২২ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) সাধনার সঙ্গে আহমেদ কবীরের আপত্তিকর ভিডিও প্রকাশ হয়। ভিডিওটিতে দুজনকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখা যায়।

খন্দকার সোহেল আহমেদ নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে জেলা প্রশাসকের আপত্তিকর ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। যদিও বিষয়টি অস্বীকার করে ঘটনাটি ‘সাজানো’ বলে দাবি করেন ডিসি আহমেদ কবীর। ওই ঘটনায় জামালপুরসহ সারা দেশের মানুষের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

এ ঘটনায় জামালপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীরকে প্রথমেই ওএসডি করা হয়। তার বদলে নতুন ডিসি হিসেবে নিয়োগ পান পরিকল্পনামন্ত্রীর একান্ত সচিব (উপসচিব) মোহাম্মদ এনামুল হক। ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. মুশফিকুর রাহমানের নেতৃত্বাধীন তদন্ত দল আহমেদ কবীরের পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদ করে সাবেক ডিসির সহকারী সানজিদা ইয়াসমিন সাধনাকেও।

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031