১৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

বগুড়া জেলা পরিষদ নির্বাচন আ.লীগ প্রার্থী নিয়ে টেনশনে

অভিযোগ
প্রকাশিত অক্টোবর ১১, ২০২২
বগুড়া জেলা পরিষদ নির্বাচন আ.লীগ প্রার্থী নিয়ে টেনশনে

স্টাফ রিপোর্টার
বগুড়ায় জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ তাদের প্রার্থী নিয়ে টেনশনে পড়েছেন। অন্যদিকে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেও মাঠ পর্যায়ের নেতারা রয়েছেন আতঙ্কে।

আগামী ১৭ অক্টোবর বগুড়া জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান ডা. মকবুল হোসেন প্রায় ৯০ বছর বয়সে আবারো দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। কিন্তু বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি একা চলাফেরা করতে না পারায় ভোটারদের সাথে তেমন যোগাযোগ করতে পারছেন না। অপর প্রার্থী আব্দুল মান্নান আকন্দ রয়েছেন জেলখানায় বন্দী। তিনি বগুড়া শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। গত বছর বগুড়া পৌরসভা নির্বাচনে তিনি দল মনোনীত প্রার্থীর বিপক্ষে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে ৫৬ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। আর আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিল পৌরসভা নির্বাচনে।

এবার জেলা পরিষদ নির্বাচনে আব্দুল মান্নান আকন্দ প্রার্থী হয়েছেন। চাঁদা দাবি, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলায় জামিন নিতে গেলে গত ২১ সেপ্টেম্বর আব্দুল মান্নানকে কারাগারে পাঠানো হয়। সেই থেকে তিনি জেল খানায় রয়েছেন। কারাগারে থাকা অবস্থায় তার নামে চাঁদাবাজী এবং অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আরো একটি মামলা দায়ের করা হয়।

বগুড়া জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১২টি উপজেলা, ১২টি পৌরসভা এবং ১০৯টি ইউনিয়ন পরিষদে ১৬২৫ জন জনপ্রতিনিধির মধ্যে ২ জন মৃত্যুবরণ করেন। ১৬২৩ জন জনপ্রতিনিধির ভোটে নির্বাচিত হবেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ। বগুড়ার ১৬২৩ জন জনপ্রতিনিধির ৬০ শতাংশ বিএনপি জামায়াত সমর্থিত। বিএনপি-জামায়াত জেলাপরিষদ নির্বাচন বর্জন করায় এবং কোন প্রার্থী না দেয়ায় তাদের ভোটের ওপর নির্ভর করছেন জয়-পরাজয়। এদিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডা. মকবুল হোসেন ব্যক্তি হিসেবে সৎ এবং ভাল মানুষ হিসেবে সর্ব মহলে পরিচিত। কিন্তু বার্ধক্য জনিত কারণে তিনি ভোটারদের সাথে তেমন যোগাযোগ করতে পারছেন না। আবার সৎ হওয়ায় তার নগদ টাকা পয়সারও ঘাটতি রয়েছে। ফলে তিনি ভোটারদের মন জয় করতে পারছেন না। অন্যদিকে অপর প্রার্থী আব্দুল মান্নান আকন্দ বিতর্কিত ও সমালোচিত। তবে জেলখানায় থাকার পরেও তিনি প্রতিনিধির মাধ্যমে বিভিন্নভাবে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করছেন। ইতিমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের বাড়ি বাড়ি আব্দুল মান্নান আকন্দের পক্ষে উপঢৌকন পৌঁছে দেয়া হয়েছে।

এছাড়াও ভোটারদেরকে বিভিন্ন প্রলোভন দেয়া হচ্ছে। এদিকে বিএনপির কিছু নেতা এবং ইউপি চেয়ারম্যান প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ শুরু করে এখন তারা বিপাকে পড়েছেন। জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ে ৪ জন নেতাকে ইতিমধ্যে শো-কজ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে তারা প্রচার প্রচারনা চালিয়ে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। ৪ জনকে শো-কজ করায় তারা নিজেদেরকে মাঠ থেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বগুড়া সদর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও এরুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান আতিক বলেছেন, আমি শোক-এর জবাব তৈরি করেছি। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে কাজ করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি তার জন্য কারো কাছে ভোট চাইনি। ভোট প্রদান আমার গণতান্ত্রিক অধিকার। দল থেকে এখনও ভোট দিতে নিষেধ করেনি।

এ কারণে ভোট প্রদানের প্রস্তুতি রয়েছে। আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যান নামে পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বলেছেন, তাদের প্রার্থী ডা. মকবুল হোসেনকে নিয়ে জেলার নেতারা টেনশনে রয়েছেন। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল জেলখানায় আব্দুল মান্নানের সাথে দেখা করে তাকে প্রত্যাহার করার অনুরোধ করার পরেও আব্দুল মান্নান প্রত্যাহার না করায় টেনশন আরো বেড়ে গেছে। আওয়ামী লীগ দলীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের অনেকেই বলেছেন ডা. মকবুল হোসেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় কোন দিনই তাদের সাথে যোগাযোগ করেননি।

এছাড়াও দলের মধ্যে গ্রুপিং ও কোন্দল থাকায় এর প্রভাব পড়ছে জেলা পরিষদ নির্বাচনে। বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি টি জামান নিকেতা বলেছেন, জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের কোন টেনশন নাই। দিন যাচ্ছে পরিস্থিতি পরিবর্তন হচ্ছে। প্রতিটি উপজেলা ও পৌরসভায় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সাথে প্রতিদিন বৈঠক করা হচ্ছে। জনপ্রতিনিধিরা সবাই সচেতন। তার দুই জন প্রার্থীর মধ্যে পার্থক্য বুঝতে সক্ষম। ভোটে তারা ভুল করবে না বলে জেলা আওয়ামী লীগ মনে করে। বিপুল ভোটে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন।

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031