২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

পুত্র ঘর থেকে বের করে দিল মাকে, ঘরে তুলে দিলেন ইউএনও

প্রকাশিত অক্টোবর ১৪, ২০২০
পুত্র ঘর থেকে বের করে দিল মাকে, ঘরে তুলে দিলেন ইউএনও

আব্দুল করিম
চট্টগ্রাম বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান

আকলিমা বেগম (৬০), ১ পুত্র ১ কন্যা রয়েছে তার। তার নিজস্ব প্লট থাকা সত্বেও থাকতে পারেনা তার জায়গায়। রয়েছে সুন্দর একটি সেসিপাকা ঘর যদিও ঘর তৈরীতে রয়েছে আকলিমার কন্টিবিউশন।

কিন্তু ঠাঁই হয়েছে একটি জরাজীর্ণ রান্নার ঘরের এক কোনে। দীর্ঘ কয়েক বছর এভাবেই জীবন যাপন করছে ষাটোর্ধ মহিলা আকলিমা বেগম। কিন্তু তার সেই খতিয়ান ভুক্ত জায়গায় সেমিপাকা  ঘর তৈরী করে বসবাস করছে তার ছেলে পরিবার নিয়ে। ঠাঁই হয়নি সেই ঘরে রত্নগর্ভা মায়ের। কিন্তু সন্তুষ্টি হয়ে জীবন পার করছে সেই জরাজীর্ণ রান্নাঘরে এক কোনে থেকে। হঠাৎ সন্তানের সাথে সকালে মায়ের ঝগড়া, এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে সেই আশ্রয়স্থল রান্নার ঘর থেকেও বের করে দেয় আজ তার ছেলে ও তার বউ। অসহায় হয়ে ছুটে এসেছে উপজেলাতে। অশ্রুসিক্ত নয়নে সকল দুঃখ খুলে বলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুহুল আমিনকে। হৃদয় বিদারক ঘটনাটি সংগঠিত হয়েছে হাটহাজারী পৌরসভার আদর্শ গ্রামের দক্ষিণ পাহাড়ের মাছুম ফকিরের বাড়িতে। যদিও ষাটোর্ধ মহিলা আকলিমার স্বামী। কিন্তু দু এক যুগ ধরে তিনি সেখানে থাকেন না।জীবন দুর্বিহ নিয়ে জীনব যাপন করছে আকলিমা।
অসহায় মহিলার অভিযোগ শুনে বুধবার (১৪ অক্টোবর) মুহুর্তেই ছুটে গেছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুহুল আমিন।ঘটনাস্থলে সত্যতা পেয়ে আকলিমা বেগমের সেই ঘরে তুলে দিয়েছে। পার্শ্ববর্তী সকলের সহযোগীতা কামনা করেছে। উপজেলা প্রশাসন ওই ঘরে থাকা পুত্র ও তার পরিবারকে বের করে দিয়ে প্লটের মুল মালিক ষাটোর্ধ মহিলা আকলিমাকে বুঝিয়ে দিয়েছে। আনন্দে অশ্রুসিক্ত অবস্থায় মহিলাটির মুখে হাসি ফুঁটেছে হারানো ঘর ফিরে পেয়ে।

ষাটোর্ধ মহিলা আকলিমা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, আমি অসহায় দরিদ্র। আমার নিজস্ব জায়গা আছে, ছেলে মেয়ে থাকার পরেও জরাজীর্ণ রান্নার ঘরের এক কোনে আমার বসবাস প্রায় ৬/৭বছর ধরে। তার পরেও আমি সন্তুষ্টি ছিলাম। আজ সকালে ছেলের সাথে ঝগড়া হওয়াতে সেই রান্নার ঘর থেকেও বের করে দেয়। আমার জিনিসপত্র সব বাহিরে ফেলে দেয়। আমি নিরুপায় হয়ে ইউএনও স্যারের কাছে ছুটে গেলে তিনি আমার ঘরে আমাকে তুলে দেয়। আমি অনেক খুশি।
আল্লাহ আমাদের ইউএনওকে দীর্ঘ হায়াত বাচিয়ে রাখুক।আমার শেষ বয়সে মলিন মুখে হাসি ফুঁটিয়েছে ইউএনও।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, ষাটোর্ধ এক মহিলা আমার কার্যালয়ে এসে তার অভিযোগ গুলো বলেন। তার পুত্র ঘর থেকে বের করে দেয়। যিনি জায়গার মুল মালিক তিনিই উচ্ছেদ এমন দুঃখজনক কথাগুলো শুনে দ্রুত ওই এলাকায় গিয়ে সত্যতা পেয়ে মহিলাটিকে তার ঘরে তুলে দেয়া হয়। সন্তানকে বুঝিয়ে বলা হয়েছে যদি জায়গার মালিকের সাথে থাকতে হলে মালিককে সন্তুষ্ট করে থাকতে হবে। এসময় মডেল থানার এস আই আবুল বাশার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে উপস্থিত ছিলেন।

Please Share This Post in Your Social Media
May 2024
T W T F S S M
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031