রাকিবুল হাসান, গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি :
মঙ্গলবার গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর থানা পুলিশ দক্ষিণ পানিশাইল গ্রামের ভাড়াবাড়ির দরজা ভেঙ্গে খাটের উপর স্ত্রী হোসনে আরা (২২) আর শিশু কন্যা মোহিনী( আড়াইমাস) ও ঝুলন্ত মোশারফ হোসেন (২৮) লাশ উদ্ধার করেন।
তবে পুলিশের প্রাথমিক ধারণা প্রথমে স্ত্রী আর শিশু কন্যাকে বিষ পানে হত্যা করে। পরে নিজে মোশারফ হোসেন স্ত্রীর উড়না পেচিয়ে ঘরের আড়ার সাথে বেধে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করে।এ ঘটনায় এলাকায় একটি চাঞ্চল্যও সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে এলাকার শত শত মানুষ করোনা ভাইরাস ওপেক্ষা করে বাড়ীর আশপাশে ভীড় জমায়।হোসনে আরার মা কান্নায় বার বার মুর্ছা যায়।
কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে হোসনে আরার পরিবারের সদস্যরা। নিহত মোশারফ হোসেন রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার বড় গোবিনাথপুর গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে। আর হোসনে আরা একই জেলার পীরগাছা উপজেলার ফকিরটরি গ্রামের রওশন আলীর মেয়ে। তাদেও দুই পরিবারের সদস্যরা একই দক্ষিণ পানিশাইল গ্রামের পৃথক দুইটি বাড়ীতে বাসা ভাড়া করে থেকে স্থানীয় পোশাক তৈরির কারখানায় চাকুরি করতো বলে এলাকাবাসী জানান।
খবর পেয়ে গাজীপুর মেট্রো পুলিশের গাজীপুর মেট্রো পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ আহসানুল হকসহ সিআইডির টিম, পিবিআই টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পুলিশ, এলাকাবাসী ও পরিবারের সদস্যরা সমকালকে জানান, রিক্সাচালক মোশারফ হোসেন ২০১৬ সালের দিকে কাশিমপুর এলাকার একটি গার্মেন্ট কারখানায় চাকুরির সুবাধে হোসনে আরার সাথে পরিচয় হয়। পরে তারা দুই পরিবারের লোকজনকে না জানিয়েই ওই বছরের শেষ দিকে বিয়ে করে।
এঘটনায় দুই পরিবারের লোকজ ক্ষিপ্ত থাকায় মোশারফ হোসেন চাকুরি ছেলে ঢাকা শহরে গিয়ে রিক্সা চালাতে থাকে। শাশুড়ীর ঘরে রাতের খাবার খেয়ে শিশুকন্যাকে নিয়ে ওই বাড়ীতে রাতে ঘুমাতে যায়। কিন্তু সকালে বাড়ীর ম্যানেজার আক্তার তাদের ঘুমানোর কক্ষের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় বিষের গন্ধ অনুভব করেন।
পরে বিষয়টি মোশারফ হোসেনের শাশুড়ীসহ আশপাশের লোকজনকে জানান। পরে মোশারফ হোসেনের চাচা সাহেব আলী ও আশপাশের কয়েকজন লোক কক্ষের জানালা কৌশলে খুলেন। পরে খাটের উপর হোসনে আরা ও তার শিশু কন্যাকে পড়ে থাকে দেখেন এবং মোশারফ হোসেনকে ঘরের আড়ার সাথে ফাঁসিতে ঝুলতে দেখেন। সকাল সাড়ে আটটার দিকে কাশিমপুর থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে নিহতদের লাশ উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজ উদ্দিন আহম্মদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন।
মোশারফ হোসেনের চাচা শাহেব আলী জানান, ভাতিজা কি কার দুইজনকে মেরে নিজে আত্নহত্যা করলো তা বুঝতে পারছি না? গাজীপুর মেট্রো পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ আহসানুল হক জানান, দুই জনকে বিষ প্রাণ করে হত্যা করেছে স্বামী মোশারফ হোসেন। পরে নিজে বাঁচার জন্য আত্নহত্যা করেছে। তবে কি কারণে এরকম ঘটনা ঘটলো তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।